ঢাকঢোল পিটিয়ে সংবাদ সম্মেলন এসে কী বললেন মির্জা ফখরুল

Shakil Shahriar
মে ১৩, ২০২৪ ১০:০৮ পূর্বাহ্ণ
Link Copied!

নিজস্ব প্রতিবেদক

ছয় মাস পর রবিবার সংবাদ সম্মেলন করার ডাক দিয়ে তোলপাড় তুলেছিলেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। কিন্তু নির্ধারিত সময়ে তিনি আলোড়ন তোলার মতো নতুন কিছু না বলায় হতাশ হয়েছেন কর্মীরা। এমনকি বিশ্লেষকরা বলছেন, খালেদা জিয়াকে প্রথম নারী মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে বারবার ঘোষণা ও তথাকথিত আন্দোলনের যে দাবি করলেন তা তাদের দৈনতার প্রকাশ। চারদিন আগে বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকের বিস্তারিত তুলে ধরার জন্য সংবাদ সম্মেলনের দরকার ছিলো না। গণমাধ্যমকে আকর্ষণ করার জন্য কৌশল নেওয়া হলো নাকি কিছু বলতে চেয়ে বললেন না মির্জা আলমগীর সেই আলাপও আছে।

রবিবার দুপুরে বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশান রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে আসেন তিনি। সেখানে তিনি গত ৮ মে বিএনপির স্থায়ী কমিটির ভার্চ্যুয়াল বৈঠকের সিদ্ধান্ত জানান। এর আগে ২০২৩ সালের ২৭ অক্টোবর সংবাদ সম্মেলন করেছিলেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। সে সময় ২৮ অক্টোবর ঢাকায় বিএনপি মহাসমাবেশ ডাকা হয়েছিল।

যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু’র ঢাকা সফর এবং আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্যে প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি বলেন, ‘কে আসলো না আসলো এটা নিয়ে বিএনপির আগ্রহ নেই। বাংলাদেশের জনগণই আমাদের ভরসা। আমাদের পুরো আস্থা (জনগণ)। সেই আস্থার ওপরেই আমরা দাঁড়িয়ে থাকি।’ যদিও রাষ্ট্রদূতদের কাছে গিয়ে সমাধান চাওয়া বিষয়ে বিএনপির দৃশ্যমান দৌঁড়ঝাপ ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েছে গত ছয় মাস। দ্বাদশ নির্বাচনের আগে পিটার হাসকে “অবতার” বলেও উল্লেখ করেন দলটির নেতারা।

বাংলাদেশ ব্যাংকে সাংবাদিকদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা প্রসঙ্গে ফখরুল বলেন, ‘দেশে যে ভয়াবহ সর্বগ্রাসী দুর্নীতি ও অনিয়মের মাধ্যমে সরকারি দলের সমর্থক সঙ্গে সম্পৃক্ত ঋণ খেলাপি ও অসাধু ব্যবসায়ীদের স্বার্থ রক্ষার জন্যই এই ধরনের নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। যেহেতু এই সরকারের কোনও স্তরেই কোনও জবাবদিহিতা নেই সেহেতু লাগামহীনভাবে ব্যাংক লুট, অর্থ পাচার, জনগণের অর্থ লোপাটের মাধ্যমে একটি বিশেষ গোত্র তৈরি করা হচ্ছে। যদিও নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বাংলাদেশ ব্যাংকের এক কর্মকর্তা বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক কেপিআই এলাকা। এখানে কারা প্রবেশ করছে বা করছে না তার একটা হিসাব থাকা জরুরি। কয়দিনে সেই প্রক্রিয়া নির্ধারণ করে আবারও সাংবাদিকরা অনুমতি নিয়ে ঢুকতে পারছেন। কাউকে বাধা দেওয়া হয়নি।

‘বাংলাদেশের প্রথম নারী মুক্তিযোদ্ধা বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। এটি বললে আওয়ামী লীগের গায়ে জ্বালা ধরে যায়। কিন্তু এটিই সত্য’ —বলেন মির্জা ফখরুল। খালেদা জিয়ার অত্যন্ত অসুস্থ জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, যার কারণে ঘন-ঘন হাসপাতালে নেওয়া হচ্ছে। এখন তিনি বাসায় থাকলেও ২৪ ঘণ্টা মেডিকেল বোর্ডের তত্ত্বাবধানে রয়েছেন।

ঠিক কবে থেকে খালেদা জিয়া মুক্তিযোদ্ধা হয়ে গেলেন জানতে চাইলে একাত্তরের ঘাতক ও দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি শাহরিয়ার কবীর বলেন, ‘আমাদের এখানে একাত্তরে যারা নির্যাতনের ও ধর্ষণের শিকার হয়েছেন সেই বীরাঙ্গনাদের মুক্তিযুদ্ধের সম্মান দেওয়া হয়েছে। খালেদা জিয়া যদি মনে করেন তিনি পাকিস্তান বাহিনী দ্বারা নিপীড়নের শিকার হয়েছেন তাহলে নিয়ম অনুযায়ী তিনি মন্ত্রনালয়ে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে দাবি করতে পারেন। তা নাহলে তিনি কিসের ভিত্তিতে নিজেকে মুক্তিযোদ্ধা দাবি করেন কেনো? ইতিহাস বলছে, অন্য সেক্টর কমান্ডাররা যুদ্ধে যাওয়ার সময় পরিবারকে সরিয়ে নিয়ে গেছেন। জিয়াউর রহমান একা গিয়েছিলেন। খালেদা জিয়া যেতে চাননি। স্বেচ্ছায় তিনি সেনানিবাসে গিয়ে ছিলেন।’