নিজস্ব প্রতিবেদক
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ৪৭০ কোটি ডলার ঋণের তৃতীয় কিস্তি হিসেবে ৬৮ কোটি ডলার ছাড়ের বিষয়ে ইতিবাচক সাড়া পাওয়া গেছে। আগামী জুনে এই অর্থ ছাড়ের বিষয়ে অর্থমন্ত্রণালয়কে নিশ্চিত করেছেন সংস্থাটির সফররত প্রতিনিধিরা। আইএমএফ ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন উইংয়ের সঙ্গে ধারাবাহিক বৈঠকে তৃতীয় কিস্তি নিশ্চিত করার জন্য চুক্তির বিভিন্ন দিক চূড়ান্ত করা হয়েছে।
অর্থমন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানান, এবছরের জুন নাগাদ দেশের নিট বৈদেশিক মুদ্রা রিজার্ভ ২০ দশমিক ১০ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত করার শর্ত দিয়েছিল আইএমএফ, সংস্থাটি এটা কমিয়ে ১৭-১৮ বিলিয়ন ডলারে নামিয়ে আনা হতে পারে।
ঋণের তৃতীয় কিস্তি পাওয়ার জন্য গত মার্চ শেষে ১ হাজার ৯২৬ কোটি ডলার ও জুন শেষে ২ হাজার ১০ কোটি ডলার নিট রিজার্ভ সংরক্ষণের শর্ত ছিল আইএমএফের। কর্মকর্তারা জানান, বর্তমানে বাংলাদেশের নিট রিজার্ভের পরিমাণ প্রায় ১৫ বিলিয়ন ডলার। এ শর্ত পূরণ না হলেও তৃতীয় কিস্তি পাওয়ার বিষয়ে কোন সংশয় নেই।
আইএমএফ এর সঙ্গে সরকারের উল্লেখ করার মতো কোন দ্বিমত নেই। ভর্তুকি কমানো, রাজস্ব ও রিজার্ভ বাড়ানোসহ আইএমএফ যেসব বিষয় বাস্তবায়ন করতে শর্তারোপ করছে, সরকারও সেগুলো বাস্তবায়নে করতে কাজ করছে বলে জানান কর্মকর্তারা।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা আরও জানান, মঙ্গলবার বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে বৈঠকে রিজার্ভের শর্ত চূড়ান্ত করেছে আইএমএফ।
ঋণের তৃতীয় এবং চতুর্থ কিস্তির জন্য ব্যাংকিং খাতের শর্ত সামঞ্জস্য করতে মঙ্গলবার সকালে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তাদের সাথে বৈঠক করেন আইএমএফের কর্মকর্তারা। একই দিন দুপুরে অর্থপ্রতিমন্ত্রী ওয়াসিকা আয়শা খান ও অর্থসচিব খায়েরুজ্জামান মজুমদারের সঙ্গে সভা করে ঋণের তৃতীয় কিস্তি ও চতুর্থ কিস্তি ছাড় করার জন্য সংশোধিত শর্তগুলো (রিভাইজড টার্মস এন্ড কন্ডিশন) সংযুক্ত করে চূড়ান্ত করা সমঝোতা স্মারকে সম্মতি নেয় আইএমএফ।
৮ মে প্রেস ব্রিফিং করে ঢাকা ছাড়বে আইএমএফের ডেভেলপমেন্ট ম্যাক্রো-ইকোনমিক্স ডিভিশনের প্রধান ক্রিস পাপাগেওর্জিউর নেতৃত্বাধীন প্রতিনিধি দলটি। ঋণ কর্মসূচির পর্যালোচনা করতে গত ২৪ এপ্রিল ঢাকায় আসে এই প্রতিনিধি দল।
এক বছর আগে আইএমএফ বোর্ড আর্থিক সংকটে থাকা বাংলাদেশকে সহায়তার জন্য এই ঋণ অনুমোদন করে। গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে ঋণের প্রথম কিস্তির ৪৪ কোটি ৭৮ লাখ ডলার ও ডিসেম্বরে দ্বিতীয় কিস্তির ৬৮ কোটি ১০ লাখ ডলার দেয় সংস্থাটি। বৈদেশিক মুদ্রার ন্যূনতম রিজার্ভ (এনআইআর) ও কর-রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা পূরণে ব্যর্থ হওয়া সত্ত্বেও আইএমএফ ঋণের দ্বিতীয় কিস্তি অনুমোদন দেয়। এর আগে মে মাসে আইএমএফ ঋণের তৃতীয় কিস্তি দিতে পারে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছিলেন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী।