একটি মানুষও ভূমিহীন-গৃহহীন থাকবে না :প্রধানমন্ত্রী

admin
মার্চ ৩০, ২০২১ ৬:০৯ পূর্বাহ্ণ
Link Copied!

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রোববার গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যুক্ত হয়ে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন -ফোকাস বাংলা
মানুষের মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করতে বর্তমান সরকার কাজ করে যাচ্ছে উলেস্নখ করে প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘আমাদের প্রতিজ্ঞা, বাংলাদেশে একটি মানুষও ভূমিহীন থাকবে না, গৃহহীন থাকবে না। আমরা সেই ব্যবস্থা করে যাচ্ছি। বঙ্গবন্ধু তার সংবিধান ও আইনে যে মৌলিক নির্দেশনা রেখে গেছেন, আমরা সে আলোকেই পথ চলছি। তার সব কাজ পূর্ণ করছি।’
স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ২৩ বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউস্থ আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে মূল অনুষ্ঠানে যুক্ত হন তিনি। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
গণভবন প্রান্ত থেকে সভা পরিচালনা করেন প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ডক্টর আবদুস সোবহান গোলাপ। এ সময় বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউ প্রান্তে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন দলের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য মতিয়া চৌধুরী, মো. আব্দুর রাজ্জাক, জাহাঙ্গীর কবির নানক, আব্দুর রহমান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ, ডক্টর হাছান মাহমুদ, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম প্রমুখ।
শেখ হাসিনা বলেন, স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে পাঁচ দেশের প্রধান এসেছেন। বিশ্বের বিভিন্ন দেশ ও ২৭টি প্রতিষ্ঠান থেকে শুভেচ্ছাবার্তা পেয়েছি। এটা বাংলাদেশের জনগণের জন্য অত্যন্ত সম্মানের। ২৬ মার্চ পাকিস্তানের প্রাইম মিনিস্টার ইমরান খান, তিনিও শুভেচ্ছাবার্তা দিয়েছেন। অর্থাৎ পৃথিবীর মনে হয় কোনো অঞ্চলে কেউ বাদ নেই বাংলাদেশকে শুভেচ্ছাবার্তা দিতে।
তিনি আরও বলেন, ‘সময়ের অভাবে সব বার্তা শোনাতে পারিনি। সব বার্তা রক্ষিত আছে। তৃণমূল পর্যন্ত প্রচার করতে হবে। তাদের শুভেচ্ছাবার্তা যেন জনসাধারণ জানতে পারে।’ সরকারের পাশাপাশি আওয়ামী লীগ ও বিভিন্ন সহযোগী সংগঠনকে এগুলো প্রচারে কাজ করার নির্দেশনা দেন শেখ হাসিনা।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘লাখো শহীদের রক্তের বিনিময়ে আমরা যে স্বাধীনতা পেয়েছি, সেই স্বাধীনতার সুফল বাংলাদেশের মানুষের ঘরে ঘরে আমরা পৌঁছে দেব এবং সেটা দেওয়ার মতো দক্ষতা বাংলাদেশ অর্জন করেছে। আর তা অর্জন করেছে বলেই মহান স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও মুজিববর্ষে শুভেচ্ছাবার্তা দিয়ে সারাবিশ্ব বাংলাদেশের জনগণকে সম্মানিত করেছে।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমাদের অনেক দূর যেতে হবে। আজকে আমরা উন্নয়নশীল দেশ, আজকে বাংলাদেশ ডিজিটাল বাংলাদেশ, আজকে বাংলাদেশের ঘরে ঘরে বিদু্যৎ পৌঁছে গেছে, আজকে আমরা খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ, কিন্তু বাংলাদেশকে আমরা উন্নত, সমৃদ্ধ সোনার বাংলাদেশ হিসেবে গড়ে তুলতে চাই, যেটা জাতির পিতার স্বপ্ন।’
‘দেশে দারিদ্র্যের হার ২০ দশমিক ৫ শতাংশে নামিয়ে আনার কথা উলেস্নখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই বাংলাদেশ ক্ষুধা, দারিদ্র্যমুক্ত, উন্নত, সমৃদ্ধ বাংলাদেশ হিসেবে গড়ে উঠবে। জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ গড়ব। আমাদের স্বাধীনতা দিবসে এবং বিশেষ করে এই সুবর্ণজয়ন্তীতে এবং মুজিববর্ষে এটাই আমাদের প্রতিজ্ঞা।’
তিনি আরও বলেন, ‘যে আদর্শ নিয়ে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে, যে আদর্শকে আবারও আমরা ফিরিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছি, যে আদর্শের ভিত্তিতে বাংলাদেশ আজকে উন্নয়নের মহাসড়কে চলমান, সেই আদর্শ ধারণ করেই বাংলাদেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নিতে হবে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এক ইঞ্চি জমিও যেন অনাবাদি না থাকে। কোনো জলাশয় যেন অনাবাদি না থাকে। খাদ্য উৎপাদন করে নিজেদের প্রস্তুতি রাখতে হবে। করোনা পরিস্থিতি কোনদিকে যায় বলা যায় না। যাতে অন্তত খাদ্য সংকট না হয়। আমরা নিজেদের খাদ্য নিজেরাই জোগান নিশ্চিত করে অন্যকেও দেব।’
ভ্যাকসিন অব্যাহত রাখার ঘোষণা দিয়ে তিনি বলেন, কেউ যাতে মাস্ক ছাড়া বাইরে না যায়। সবাইকে নিরাপদ দূরত্ব মেনে বসতে হবে। সভা-সেমিনার-কর্মশালা স্বাস্থ্য সুরক্ষা মেনে করতে হবে। যতদূর সম্ভব খোলা জায়গায় কর্মসূচি করতে হবে। ঘরের মধ্যে করলে করোনার প্রাদুর্ভাব আরও বেশি দেখা দেয়।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব বাড়ছে। সব অনুষ্ঠান সতর্কতার সঙ্গে করতে হবে। পাশাপাশি গেল বছর মানুষের পাশে যেমন দাঁড়িয়েছেন, তেমনি সামনেও মানুষের পাশে দাঁড়াতে হবে। মানুষ যেন কষ্টে না থাকে। সরকারের পক্ষ থেকে আমরা যা করার করব। কিন্তু দল হিসেবে আওয়ামী লীগকেও মানুষের পাশে থাকতে হবে। যে দল বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে দেশ স্বাধীন করেছে, তাদের ওপর অনেক দায়িত্ব। মানুষের জন্য খাদ্য বিতরণ, মাস্কসহ স্বাস্থ্য সুরক্ষাসামগ্রী বিতরণ ও নানা সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিতে হবে।’