ঢাকা শুক্রবার | ২৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
আজকের সর্বশেষ সবখবর

৫ হাজার কোটি টাকার নতুন তহবিল হচ্ছে

admin
ডিসেম্বর ২১, ২০২০ ৭:২৮ পূর্বাহ্ণ
Link Copied!

করোনার নেতিবাচক প্রভাব মোকাবেলায় ক্ষুদ্র, অতিক্ষুদ্র, কুটির শিল্পে সহজ শর্তে ঋণের জোগানে নতুন করে আরও ৫ হাজার কোটি টাকার একটি তহবিল গঠনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। ক্ষুদ্রঋণ প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর (এমএফআই) মাধ্যমে এ তহবিল থেকে ঋণ বিতরণ করা হবে। ঋণের মোট সুদের হার হবে ১৪ শতাংশ। এর মধ্যে গ্রাহককে দিতে হবে ৯ শতাংশ। বাকি ৫ শতাংশ সরকার থেকে ভর্তুকি হিসেবে দেয়া হবে।
সূত্র জানায়, ক্ষুদ্র, অতিক্ষুদ্র, কুটির ও মাঝারি শিল্পে প্রণোদনা দিতে দিতে ইতোমধ্যে ২০ হাজার কোটি টাকার তহবিল গঠন করা হয়েছে। তিন দফা সময় বাড়িয়েও এ তহবিল থেকে ঋণ বিতরণ করা সম্ভব হচ্ছে না। ফলে ওইসব শিল্পে বাড়ছে না ঋণের প্রবাহ। এতে করোনার নেতিবাচক প্রভাব মোকাবেলা করে ছোট ও মাঝারি শিল্পগুলো ঘুরে দাঁড়াতে পারছে না। মূলত ব্যাংকগুলোর অনীহার কারণেই এ খাতে ঋণ বিতরণ বাড়ানো সম্ভব হচ্ছে না। এ কারণে এসব খাতের জন্য নতুন তহবিল গঠনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। তবে এ তহবিলের ৫ হাজার কোটি টাকা বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে দেয়া হলে তারা এ ব্যাপারে একটি পূর্ণাঙ্গ প্রণোদনা প্যাকেজ তৈরি করবে। আর অর্থ মন্ত্রণালয় বাজেট থেকে এ অর্থ দিলে তারা সে ব্যাপারে নীতিমালা তৈরি করবে।
সূত্র জানায়, বাজেটে এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ না থাকায় বাংলাদেশ ব্যাংক থেকেই এ তহবিলের অর্থ দেয়া হতে পারে। এক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে দেয়া হবে ১ শতাংশ সুদে। বাণিজ্যিক ব্যাংক এমএফআইগুলোকে দেবে সাড়ে ৩ শতাংশ সুদে। তারা সেটি মাঠপর্যায়ে ১৪ শতাংশ সুদে বিতরণ করবে। এর মধ্যে গ্রাহক দেবে ৯ শতাংশ এবং এমএফআইগুলোকে সরকার ভর্তুকি হিসেবে দেবে ৫ শতাংশ। এটি হবে একটি পুনঃঅর্থায়ন তহবিল। এ তহবিল সফল হলে এর আকার আরও বাড়ানো হবে।
এদিকে করোনার প্রভাব মোকাবেলায় সরকার ও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ঘোষিত প্রণোদনা প্যাকেজগুলোর মধ্যে রফতানিমুখী শিল্পের শ্রমিকদের বেতন-ভাতা প্রদানের জন্য ৮ হাজার কোটি টাকার তহবিল শতভাগ বাস্তবায়ন হয়েছে। বড় শিল্প ও সেবা খাতের ৩০ হাজার কোটি টাকার তহবিলের ৮০ শতাংশ বাস্তবায়ন হয়েছে। কুটির, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের ২০ হাজার কোটি টাকার প্যাকেজের ৫০ শতাংশ এবং ক্ষুদ্র ও অতিক্ষুদ্র শিল্পে ঋণ দিতে ৩ হাজার কোটি টাকার তহবিলের ৬০ শতাংশ বাস্তবায়ন হয়েছে। অন্যান্য তহবিলগুলো চলমান রয়েছে।
এদিকে বৃহস্পতিবার ক্ষুদ্র, অতিক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পের প্রণোদনার অর্থ ছাড় নিয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ, বাংলাদেশ ব্যাংক, মাইক্রো ক্রেডিট রেগুলেটরি অথরিটি (এমআরএ), পল্লী কর্ম সহায়ক ফাউন্ডেশন (পিকেএসএফ) ও ব্যাংকগুলোর প্রতিনিধিরা একটি অনলাইন সভা করেন। ওই সভায় কুটির, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পে ঋণ বিতরণের ধীর গতিতে অসন্তোষ প্রকাশ করা হয়। তিন দফা সময় বাড়িয়েও ঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা অর্ধেকের বেশি অর্জিত হয়নি। ৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত ২০ হাজার কোটি টাকার এ তহবিলের মধ্যে ১০ হাজার ৩০০ কোটি টাকা বিতরণ করা সম্ভব হয়েছে। অথচ ডিসেম্বরের মধ্যে তহবিলের পুরো অর্থ বিতরণ করার কথা। কিন্তু তা সম্ভব হচ্ছে না। এমন পরিস্থিতিতে মাঝারি শিল্প খাতকে বাদ দিয়ে ক্ষুদ্র, অতিক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পের জন্য আলাদা তহবিল গঠনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
সূত্র জানায়- ক্ষুদ্র, অতিক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পের উদ্যোক্তারা সাধারণ ব্যাংক থেকে ঋণ নেন না। ব্যাংকও তাদের ঋণ দেয় না। এ কারণে ২০ হাজার কোটি টাকার তহবিল থেকে ক্ষুদ্র, অতিক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পের উদ্যোক্তারা ঋণ পাচ্ছেন না। ফলে প্যাকেজটিও বাস্তবায়ন হচ্ছে না। তাদের বেশিরভাগই এমএফআই থেকে ঋণ নেন। ফলে তাদের এমএফআইগুলোর মাধ্যমেই ঋণ দেয়ার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
এ তহবিলের বাইরে পিকেএসএফ ইতোমধ্যে ৪ হাজার কোটি টাকার একটি তহবিল গঠন করেছে তাদের সহযোগী প্রতিষ্ঠানগুলোর মাধ্যমে ঋণ দিতে।