সড়ক দুর্ঘটনা রোধে সব চালককে ডোপ টেস্টের তাগিদ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, যারা গাড়ি চালাচ্ছে, তারা মাদক সেবন করে কি না, ডোপ টেস্টের মাধ্যমে তা পরীক্ষা করা দরকার। প্রত্যেক চালকের এ পরীক্ষা একান্তভাবে অপরিহার্য।
গতকাল গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে জাতীয় নিরাপদ সড়ক দিবস উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন। এতে সড়ক এবং জনপদ বিভাগের সচিব মো. নজরুল ইসলাম স্বাগত বক্তৃতা করেন। এ সময় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান মো. একাব্বর হোসেন এবং বেনজীর আহমেদ এমপি সংযুক্ত ছিলেন। সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে রাজধানীর বনানীর বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি (বিআরটিএ) ভবন মিলনায়তনে মূল অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এ ছাড়া রাজধানীর সায়েদাবাদ বাস টার্মিনাল এবং ফুলবাড়িয়া বাস টার্মিনালসহ বেশ কয়েকটি স্থানে বড় পর্দার মাধ্যমে গাড়ির মাালিক এবং চালকরা ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানটি প্রত্যক্ষ করেন।
টানা চতুর্থবারের মতো এ বছর দেশে জাতীয় নিরাপদ সড়ক দিবস উদযাপিত হচ্ছে। এবারের জাতীয় নিরাপদ সড়ক দিবসের প্রতিপাদ্য হচ্ছে- ‘মুজিববর্ষের শপথ, সড়ক করব নিরাপদ’। রাস্তা পারাপারে সবাইকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, যারা পথচারী, আমরা শুধু ড্রাইভারদের দোষ দেই। শুধু ড্রাইভারদের দোষ দিলে হবে না। যদি ড্রাইভারের দোষ হয়, আইন আছে। আইন তার ব্যবস্থা নেবে। কেউ আপনারা নিজের হাতে আইন তুলে নেবেন না, এটা আমার অনুরোধ থাকল। তিনি বলেন, ড্রাইভিং লাইসেন্স প্রদানের সময় ভালোভাবে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা যেন ভালোমতো সে ড্রাইভিং জানে কি না বা টাকা দিয়ে যেন কেউ ড্রাইভিং লাইসেন্স নিতে না পারে সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।
মহাসড়কের পাশে গাড়ি চালকদের জন্য বিশ্রামাগার গড়ে তোলার পদক্ষেপের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যারা গাড়ি চালায়, আমরা অনেক সময় তাদের ভালো-মন্দের দিকে চিন্তা করি না। একটা মানুষ কতক্ষণ গাড়ি চালাতে পারে। এ বিষয়টায় সবাইকে একটু সচেতন থাকা দরকার। সেদিকে লক্ষ্য রেখেই আমরা মহাসড়কগুলোর বিভিন্ন জায়গায় বিশ্রামাগার নির্মাণ করছি। পর্যায়ক্রমে সারা দেশেই চালকদের জন্য বিশ্রামাগার নির্মাণ করব। সড়ক দুর্ঘটনা রোধে সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপ তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সড়ক নিরাপত্তা বিষয়ক ন্যাশনাল রোড সেফটি অ্যাকশন প্ল্যান ২০১৭-২০ প্রণয়ন করেছি। এটাকে আরও বাড়াতে হবে। তিনি বলেন, ট্রাফিক আইন মেনে চলা সবার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। আমি বারবার বলেছি, এখনো বলি, স্কুল জীবন থেকেই ছোট বাচ্চাদের থেকে শুরু করে ট্রাফিক আইন সম্পর্কে শিক্ষা দেওয়া, সচেতন করা, প্রত্যেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং অফিস আলাদত সব জায়গায় ট্রাফিক রুলের পোস্টার লাগিয়ে রাখা এবং সবাই যেন এটি সবসময় দেখে এবং তারা যেন সেভাবে সচেতন হয়, সেদিকে বিশেষভাবে দৃষ্টি দিতে হবে।
কৃষি উৎপাদন ও মজুদ নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সভা : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে গতকাল সকালে গণভবনে কৃষি উৎপাদন ও মজুদ নিয়ে একটি সভা অনুষ্ঠিত হয়। বন্যা পরিস্থিতিতে বিশেষ করে সামনের আমন মৌসুম নিয়ে পর্যালোচনা করা হয় সভায়। কভিড-১৯ এর ক্ষয়ক্ষতি মোকাবিলায় সরকার ঘোষিত ২১টি প্রণোদনা প্যাকেজ বাস্তবায়ন ত্বরান্বিত করা নিয়েও আলোচনা হয়। প্রধানমন্ত্রী সামগ্রিক বিষয় পর্যালোচনা করে বিভিন্ন দিকনির্দেশনা দেন।
সভায় কৃষিমন্ত্রী মো. আবদুর রাজ্জাক, খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্যসচিব ড. আহমদ কায়কাউস, অর্থসচিব আবদুর রউফ তালুকদার, কৃষি সচিব মো. মেসবাহুল ইসলাম, খাদ্য সচিব ড. মোছাম্মৎ নাজমানারা খানম এবং প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব মো. তোফাজ্জল হোসেন মিয়া অংশ নেন।