রেশমের হারানো ঐতিহ্য ফেরাতে রাজশাহী রেশম কারখানায় আরও কিছু লুম চালুর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। বর্তমানে কারখানাটিতে ১৯টি লুম চালু রয়েছে। রেশমের কাপড়ও উৎপাদন করা হচ্ছে। এখন উৎপাদন বৃদ্ধি করতে আরও বেশিসংখ্যক লুম চালু করা হচ্ছে। লুমগুলো চালু করতে গতকাল বাংলাদেশ রেশম উন্নয়ন বোর্ডের সিনিয়র সহ-সভাপতি ও রাজশাহী-২ (সদর) আসনের এমপি ফজলে হোসেন বাদশা কারখানাটি পরিদর্শন করেন। এ সময় তিনি কাপড় উৎপাদন দেখেন এবং আরও বেশিসংখ্যক লুম চালুর উপযোগী করতে নির্দেশনা দেন। এ সময় বাংলাদেশ রেশম উন্নয়ন বোর্ডের মহাপরিচালক আবদুল হাকিমসহ অন্যান্য কর্মকর্তা ও গবেষক উপস্থিত ছিলেন। কারখানা পরিদর্শন শেষে এমপি ফজলে হোসেন বাদশা বলেন, ‘আমরা পরীক্ষামূলকভাবে প্রথমে ছয়টি লুম চালু করেছিলাম। পরে সেটি ১৯টিতে গিয়ে দাঁড়ায়। আমরা এখন আরও বেশিসংখ্যক লুম চালু করতে চাই। সে জন্যই কারখানার লুমগুলো দেখে এলাম।’ তিনি জানান, বর্তমানে কারখানায় যে কাপড় উৎপাদন হচ্ছে তা ছোট একটি শো-রুমে রাখা হচ্ছে। আরও বেশি লুম চালু করে আমরা শো-রুমটিও বড় করতে চাই। এর পাশাপাশি অনলাইনে রেশম পণ্য বিক্রির একটা উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। রেশম বোর্ডের আগামী বোর্ডসভায় সব চূড়ান্ত হয়ে যাবে। রেশমের হারানো ঐতিহ্য আমরা আবার ফিরিয়ে আনতে চাই। প্রসঙ্গত, লোকসান হচ্ছে এমন কারণ দেখিয়ে ২০০২ সালে তৎকালীন বিএনপি-জামায়াত সরকার এই রেশম কারখানাটি বন্ধ করে দিয়েছিল। তখন এই কারখানার ঋণের বোঝা ছিল ১ কোটি ৩০ লাখ টাকা। এরপর এমপি ফজলে হোসেন বাদশা রেশম বোর্ডের সহ-সভাপতি হয়েই কারখানাটি চালুর জন্য প্রচেষ্টা শুরু করেন।
তার আন্তরিক প্রচেষ্টায় অবশেষে ১৬ বছর পর ২০১৮ সালে কারখানাটিতে প্রথম ছয়টি লুম চালু করা হয়। ধীরে ধীরে মোট ১৯টি লুম চালু করা হয়েছে। এখন আরও বেশিসংখ্যক লুম চালুর ব্যাপারে প্রাথমিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, কারখানাটি বন্ধ করে দেওয়ার সময় সেখানে মোট ৬৩টি লুম ছিল। এর মধ্যে উৎপাদন চলত পুরনো ৩৫টি লুমে। নতুন ২৮টি লুম চালুর আগেই কারখানাটি বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছিল। বন্ধের আগে কারখানাটি বছরে এক লাখ ৬ হাজার মিটার রেশম কাপড় উৎপাদন করত। কারখানায় ৬৩টি লুম চালু করা গেলে বছরে কাপড় উৎপাদন হবে দুই লাখ ৮৭ হাজার মিটার। বর্তমানে কারখানাটিকে সেই স্থানে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা চলছে।