প্রেম, সাম‍্য ও দ্রোহের কবির জন্মদিন

Shakil Shahriar
মে ২৫, ২০২৪ ৯:১৩ পূর্বাহ্ণ
Link Copied!

ধর্ম-বর্ণ-সম্প্রদায়ের ঊর্ধ্বে উঠে গেয়েছেন মানবমঙ্গলের গান। নিপীড়িত মানুষের মুক্তি ও পিছিয়ে পড়াদের জাগাতে চেয়েছেন দ্রোহের মন্ত্রে। প্রেম, সাম‍্য ও বিদ্রোহের কবি কাজী নজরুল ইসলামের ১২৫তম জন্মবার্ষিকী পালিত হচ্ছে নানা আয়োজনে।

বাঙালির জাতীয় চেতনা ও নান্দনিকতা বিকাশে যাদের ভূমিকা অগ্রগামী তাদের মধ্যে অনস্বীকার্য এক নাম কাজী নজরুল ইসলাম। বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের এক অবিস্মরণীয় সত্তা। যার মহিমান্বিত-কালজয়ী সৃষ্টি বাঙালির অন্তহীন আনন্দ ও প্রেরণার উৎস।

বাংলা ১৩০৬ বঙ্গাব্দের ১১ জ্যৈষ্ঠ বর্ধমান জেলার আসানসোলের জামুরিয়া থানার চুরুলিয়া গ্রামে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। তার ডাক নাম ‘দুখু মিয়া’। তার বাবার নাম কাজী ফকির আহমেদ ও মা জাহেদা খাতুন। তাই ১১ জ্যৈষ্ঠ জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ১২৫তম জন্মবার্ষিকী।
ঔপনিবেশিক সময়ে জন্ম ও বেড়ে ওঠা নজরুল গতানুগতিক ধারার সাহিত্যচর্চায় ক্ষান্ত থাকেননি। পরাধীনতার শৃঙ্খল ভেঙে স্বাধীন সার্বভৌম স্বদেশ ভূমি বিনির্মাণের প্রত্যয়ে ছিলেন প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। পরাধীন ভারতবর্ষের মানুষের মুক্তি ছিল তার স্বপ্ন। মানবকল্যাণ তার চেতনার মূল প্রেরণা, মৌল শক্তি!
 
নজরুল মনে প্রাণে ছিলেন অসাম্প্রদায়িক মানুষ। মানুষকে, মানুষের ধর্মকে নজরুল বড় করে দেখেছেন আজীবন। তাই হিন্দু কিংবা মুসলমান নয়, বিদ্রোহের জন্য মানুষের প্রতিই ছিল তার উদাত্ত আহ্বান। তিনি কল্পনা করেছেন এক সাম্যবাদী সমাজের, যেখানে নেই শোষণ, বৈষম্য আর সাম্প্রদায়িক বিভেদ।
নজরুল ধর্মের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করেননি, বিদ্রোহ করেছেন ধর্ম-ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে। একালে যেমন, সেকালেও তেমনি, ধর্মকে শোষণের অন্যতম হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে।
 
চাকচিক্যময় পৃথিবী থেকে বিদায় নিলেও আপসহীন সংগ্রামী কবি নজরুল আজো বেঁচে আছেন। বেঁচে আছেন জগতের তাবৎ স্বাধীনচেতা মানুষের হৃদয়ে। মহাকালের মহাবিস্ময় হিসেবে চিরভাস্মর হয়ে আছেন মুক্তিকামী মানুষের মননে।
জাতীয় কবির জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে সকাল থেকেই কবির সমাধিস্থলে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করছেন নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ। এছাড়া দিবসটি উপলক্ষে বিভিন্ন সংগঠন দিনব্যাপী নানা কর্মসূচির আয়োজন করেছে। নানা অনুষ্ঠানমালা সম্প্রচার করবে বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বাংলাদেশ বেতারসহ বেসরকারি বেতার ও টেলিভিশন চ্যানেলগুলো।