পর্যটক টানতে প্রস্তুত হচ্ছে পারকি সমুদ্র সৈকত

Shakil Shahriar
নভেম্বর ১৬, ২০২১ ৩:৩০ পূর্বাহ্ণ
Link Copied!

চট্টগ্রাম অফিস/আনোয়ারা সংবাদদাতা ॥ কর্ণফুলীর তলদেশে নির্মাণাধীন বঙ্গবন্ধু টানেল শুধু সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নই ঘটাবে না, এটি হবে একটি পর্যটন আকর্ষণ। টানেল হয়ে দক্ষিণ পাড়ে পর্যটকদের অন্যতম প্রধান গন্তব্য হবে মিনি কক্সবাজারখ্যাত পারকি সমুদ্র সৈকত। বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে ওই সৈকত ঘিরে মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের কাজ চলছে। সমুদ্র তীরবর্তী আনোয়ারা উপক‚ল সুরক্ষায় পারকি সমুদ্র সৈকত থেকে সাঙ্গুর মোহনা পর্যন্ত ৮ কিলোমিটার দীর্ঘ সুপার ডাইক নির্মাণের কাজ চলমান রয়েছে। এছাড়া সিইউএফএল (চিটাগাং ইউরিয়া ফার্টিলইজার লিমিটেড) থেকে পারকি বাজার পর্যন্ত সড়কের দু’পাশের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে বঙ্গবন্ধু টানেল কর্তৃপক্ষের উদ্যোগে তৈরি করা হবে আরসিসি সড়ক। টানেলের সঙ্গে শেষ হতে যাচ্ছে এই কাজটিও।
পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, আনোয়ারা উপক‚ল সুরক্ষায় ও সমুদ্রপাড়ে নির্মাণ করা হচ্ছে এই সুপার ডাইক, যার উচ্চতা ১০ মিটার অর্থাৎ ৩০ ফুটের বেশি। এর মধ্যে পারকি সমুদ্র সৈকত থেকে গহিরা বার আউলিয়া পর্যন্ত ৮ কিলোমিটারসহ শিকলবাহা ও সাঙ্গুর বিভিন্ন পয়েন্টে প্রতিরক্ষা বাঁধ তৈরি করা হবে। এ প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ৪৮২ কোটি টাকা। কাজের অগ্রগতি হয়েছে ৪০ দশমিক ৬৬ শতাংশ। প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হবে ২০২২ সালের জুন মাসে।
সূত্র আরও জানায়, আনোয়ারায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের মূল বেড়িবাঁধ ছিল সিইউএফএল থেকে পারকি বাজার পর্যন্ত। ১৯৬২ সালে এই বেড়িবাঁধ নির্মাণ করা হয়। বঙ্গবন্ধু টানেল কর্তৃপক্ষ পানি উন্নয়ন বোর্ডকে চিঠি দিয়ে জানিয়েছে, সিইউএফএলের জায়গাটা টানেলের সংযোগ সড়কের জন্য প্রয়োজন হবে। এর পরিপ্রেক্ষিতে পানি উন্নয়ন বোর্ডের পক্ষ থেকে অনুমতি দেয়া হয়েছে। বোর্ডের প্রস্তাবে সিইউএফএল থেকে পারকি বাজার পর্যন্ত দু’পাশে অবৈধ দোকানপাট উচ্ছেদ করে আরসিসি সড়ক তৈরি করে দেবে টানেল কর্তৃপক্ষ।
প্রকল্পের বিষয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী তনয় কুমার ত্রিপুরা বলেন, আনোয়ারা উপক‚ল সুরক্ষায় কয়েক ধাপে ৫৭৭ কোটি ২৩ লাখ টাকার মেগা প্রকল্পের অনুমোদন দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ৫৭৭ কোটির মধ্যে নদী ও সমুদ্র ডাইক সংরক্ষণের জন্য ৪৮২ কোটি কোটি টাকার বেশি ব্যয় হবে। পারকি সমুদ্র সৈকত নিয়ে আমাদের একটা স্বপ্ন আছে। সৈকতের আশপাশের এলাকা সুরক্ষা করতে না পারলে সাগরের পানি ঢুকে রাস্তাঘাট নষ্ট হয়ে যাবে। তখন পর্যটকরা পারকি সৈকতে যেতে পারবেন না। তিনি জানান, পারকি সমুদ্র সৈকত থেকে সাঙ্গুর মোহনা গহিরা বার আউলিয়া পর্যন্ত ৮ কিলোমিটার। বর্তমান প্রকল্প থেকে ৫ কিলোমিটার নতুন প্রকল্প থেকে ৩ কিলোমিটারসহ মোট ৮ কিলোমিটার বেড়িবাঁধের সঙ্গে সুপার ডাইকের কাজ সম্পূর্ণ হয়ে গেলে মার্চের দিকে একটা দৃশ্যমান কাজ দেখা যাবে। এই ৮ কিলোমিটার বেড়িবাঁধের ওপর পানি উন্নয়ন বোর্ডের পক্ষ থেকে পরীক্ষামূলকভাবে এইসবিবি সড়ক করে দেয়া হবে। বাঁধের কাজ শেষে মে মাসে দিকে বাঁধের দুইপাশে গাছ রোপণ করা হবে। বন বিভাগের সঙ্গে পানি উন্নয়ন বোর্ডের চুক্তি হয়েছে। বন বিভাগের পক্ষ থেকে বাঁধের পাশে ঝাউ বাগান করা হবে। কাজ শেষ হয়ে গেলে পারকি সমুদ্র সৈকতে আসা পর্যটকরা প্রথমেই বিচে না নেমে সৌন্দর্য দেখার জন্য ওই দিকে ঘুরতে চলে যেতে পারবেন।