করোনা মহামারীর এই সংকটময় সময়ে নতুন আতঙ্ক হয়ে দেখা দিয়েছে ডেঙ্গু। এডিস মশাবাহিত এই জ্বরে আক্রান্তের সংখ্যা কয়েকদিন ধরেই বেড়ে চলেছে। সর্বশেষ গত তিন দিন থেকে প্রতিদিন এই জ্বরে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন আড়াই শতাধিক রোগী।
করোনা রোগীদের পাশাপাশি ডেঙ্গু আক্রান্তদের চিকিৎসা দেয়া নিয়ে ডাক্তারদের দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে দেখা দিয়েছে। কারণ একই হাসপাতালে ডেঙ্গু ও করোনা রোগীদের একসঙ্গে চিকিৎসা দেয়া সম্ভব নয়। এর ফলে রাজধানীর অধিকাংশ সরকারি হাসপাতালে ডেঙ্গু চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে না।
স্বাস্থ্য অধিদফতরও ইতোমধ্যে জানিয়েছে, করোনার মধ্যে ডেঙ্গু বেড়ে গেলে তা হবে ভয়ঙ্কর। একসঙ্গে করোনা ও ডেঙ্গু চিকিৎসা দেয়া চ্যালেঞ্জ হবে। স্বাস্থ্য অধিদফতরের সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, গত জুলাই মাস ছিল দেশের জন্য অত্যন্ত ‘ভয়ঙ্কর’ সময়। এই মাসে একদিনে যেমন বেড়েছে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা, তেমনি বেড়েছে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যাও। চলতি বছরের সর্বোচ্চ করোনা ও ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছে জুলাই মাসে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, লকডাউনে স্থবির জনজীবনে মশক নিধনের পর্যাপ্ত ওষুধ না ছিটানোর কারণে ঘটছে এডিস মশার বিস্তার। জুন থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ডেঙ্গুর বাহক এডিস মশার প্রজনন মৌসুম ধরা হয়। কারণ এ সময় বৃষ্টিপাতের কারণে পানি জমে। সে পানিতেই এডিস মশার প্রজনন ডেঙ্গু উপসর্গ থাকলেও টেস্ট হচ্ছে করোনার। তবে এবার বছরের এ সময়ে ডেঙ্গুর প্রকোপ বেড়ে যাওয়ায় উদ্বিগ্ন কীটতত্ত্ব বিশেষজ্ঞরা।
কীট বিশেষজ্ঞদের মতে, ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় এডিসের ঘনত্ব আগের বছরের তুলনায় অনেক বেড়েছে। এবার জুন মাসে বৃষ্টিপাত বেশি হওয়ায় এডিস মশার ঘনত্ব ধরা পড়ে। এ সময় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি দল ঢাকার বিভিন্ন ওয়ার্ডে জরিপ চালায়। এতে দেখা যায়, গত বছরের চেয়ে এডিস মশার ঘনত্ব প্রায় ২০ গুণ বেশি।
তারা জানিয়েছিলেন, ঢাকার এমন কোনো এলাকা নেই, যেটি ডেঙ্গুর উচ্চঝুঁকিতে নেই। দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে পরিস্থিতি ভয়ঙ্কর হয়ে উঠতে পারে।