এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে বদলাবে চট্টগ্রাম

admin
ডিসেম্বর ৫, ২০২০ ৪:৫২ পূর্বাহ্ণ
Link Copied!

৩ কিলোমিটার সড়ক নিয়ে জটিলতা কাটল বন্দর-সিডিএর

চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) অগ্রাধিকার প্রকল্প ‘লালখান বাজার থেকে শাহ্ আমানত বিমানবন্দর পর্যন্ত এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে’-তে বন্দরের মালিকানাধীন ৩ কিলোমিটার সড়ক নিয়ে জটিলতা ছিল। এ নিয়ে একাধিকবার চিঠি চালাচালিও হয়। তবে দুই সংস্থার প্রতিনিধির সমন্বয়ে গঠিত কমিটির সুপারিশের পরিপ্রেক্ষিতে মিটল দ্বন্দ্ব। সিডিএ ৬ দশমিক ৬৬৯ একর জায়গার মূল্য বাবদ বন্দরকে দেবে ১৭৬ কোটি ৭৬ লাখ ৮৬ হাজার ৮৯২ টাকা। ফলে বাড়বে ব্যয়। পরিবর্তন করা হবে অ্যালাইনমেন্ট।

এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মিত হলে নগর থেকে বিমানবন্দরে পৌঁছা যাবে মাত্র ৩০ মিনিটে। চট্টগ্রামের যাতায়াতে স্বপ্ন দেখাচ্ছে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে। সময়ও বাঁচাবে ২ ঘণ্টা। বাড়বে বিদেশি বিনিয়োগ। যানজট কমবে নগরে। বিকশিত হবে পর্যটন খাত।

সিডিএ সূত্রে জানা যায়, ‘চট্টগ্রাম শহরের লালখান বাজার থেকে শাহ আমানত বিমানবন্দর পর্যন্ত এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে’ নির্মাণ শীর্ষক সংস্থার মেগা প্রকল্পটির বর্তমানে সি-বিচ থেকে সল্টগোলা ক্রসিং পর্যন্ত ৮ কিলোমিটার অংশে কাজ চলছে। প্রকল্পের সল্টগোলা থেকে বারিক বিল্ডিং পর্যন্ত ৩ কিলোমিটার বন্দরের আওতাধীন। ফলে প্রকল্পের কাজ চলাকালে বন্দরের স্বাভাবিক কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত        হওয়ার শঙ্কা দেখা দেয়। এ নিয়ে বন্দর-সিডিএ প্রতিনিধির সমন্বয়ে সুপারিশক্রমে গোসাইলডাঙ্গা মৌজায় বন্দরের মালিকানাধীন প্রায় ১ দশমিক ০৬৯১ একর, মধ্য হালিশহর মৌজায় ৪ দশমিক ৯৫৮ একর ও দক্ষিণ হালিশহর মৌজায় শূন্য দশমিক ৬৪২৫ একরসহ মোট ৬ দশমিক ৬৬৯ একর জায়গায় সিডিএ এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের কাজ শুরু করবে। তবে সিডিএ এ জায়গার মৌজা মূল্যের তিন গুণ বেশি ১৭৬ কোটি ৭৬ লাখ ৮৬ হাজার ৮৯২ টাকা বন্দরকে দেবে। সিডিএর প্রধান প্রকৌশলী কাজী হাসান বিন শামস বলেন, ‘এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েকে কেন্দ্র করে বন্দরের সঙ্গে ৩ কিলোমিটার সড়ক নিয়ে একটা দ্বন্দ্ব ছিল। তবে দুই সংস্থার প্রতিনিধির সমন্বয়ে গঠিত কমিটির সুপারিশে বন্দরকে তার ৬ দশমিক ৬৬৯ একর জায়গার মূল্য বাবদ ১৭৬ কোটি ৭৬ লাখ ৮৬ হাজার ৮৯২ টাকা সিডিএ প্রদান করবে। এ জন্য অ্যালাইনমেন্ট সংশোধন করে তা অনুমোদন নেওয়া হবে।’ তিনি বলেন, ‘বর্তমানে বারিক বিল্ডিং থেকে বিমানবন্দর পর্যন্ত অংশের কাজ চলছে। জানুয়ারিতে লালখান বাজার থেকে বারিক বিল্ডিং পর্যন্ত অংশের কাজ শুরু হবে। ২০২২ সালের জুনের মধ্যে প্রকল্পের কাজ শেষ করার পরিকল্পনা আছে।’ চউক সূত্রে জানা যায়, ২০১৭ সালের ১১ জুলাই জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় ৩ হাজার ২৫০ কোটি ৮৩ লাখ টাকা ব্যয়ের প্রকল্পটি অনুমোদন দেওয়া হয়। ২০১৯ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নির্মাণকাজের উদ্বোধন করেন। লালখান বাজার থেকে বারিক বিল্ডিং, বারিক বিল্ডিং মোড় থেকে সল্টগোলা ক্রসিং, সল্টগোলা ক্রসিং থেকে সিমেন্ট ক্রসিং এবং সিমেন্ট ক্রসিং থেকে সমুদ্রসৈকত পর্যন্ত চার ধাপে কাজ বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। সাড়ে ১৬ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যরে চার লেনের প্রকল্পটিতে র‌্যাম্প ও লুপ নিয়ে দৈর্ঘ্য হবে প্রায় ২০ কিলোমিটার এবং প্রস্থ ৫৪ ফুট। প্রতিটি র?্যাম্প হবে দুই লেনের। এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের ৯টি এলাকায় ২৪টি র‌্যাম্প (গাড়ি ওঠানামার পথ) থাকবে। নগরের টাইগার পাসে ৪টি, আগ্রাবাদে ৪টি, বারিক বিল্ডিং মোড়ে ২টি, নিমতলী মোড়ে ২টি, কাস্টমস মোড়ে ২টি, সিইপিজেডে ৪টি, কেইপিজেডে ২টি, কাঠগড়ে ২টি ও পতেঙ্গা সমুদ্রসৈকত এলাকায় ২টি র‌্যাম্প থাকবে। উড়ালসড়কের মতোই এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের ওপর দিয়ে চলবে যন্ত্রচালিত যান। জানা যায়, নগরের গুরুত্বপূর্ণ প্রধানতম যোগাযোগমাধ্যম বিমানবন্দর সড়ক। চট্টগ্রাম বন্দর থেকে সারা দেশে পণ্য আনা-নেওয়া করা হয় এ সড়ক দিয়ে। চট্টগ্রাম নগর থেকে শাহ্ আমানত বিমানবন্দরেও যেতে হয় এ সড়ক ব্যবহার করে।

ফলে অন্যান্য সড়কের তুলনায় এ সড়কের গুরুত্ব বেশি। তাই জনদুর্ভোগ কমাতে সিডিএ এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের প্রথম অংশের নির্মাণকাজ করবে নগরের সিমেন্ট ক্রসিং থেকে কাস্টমস মোড় পর্যন্ত। এরপর পর্যায়ক্রমে অন্য অংশের কাজ চলবে। নির্মাণকাজ শুরু হলে পতেঙ্গা সমুদ্রসৈকতের পাশে নির্মাণাধীন আউটার রিং রোড যান চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করা হবে। নতুন এ সড়ক চালু হলে বিমানবন্দর সড়কে যান চলাচলে চাপ কমবে।