যুক্তরাজ্যের অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের তৈরি করোনাভাইরাসের ৩ কোটি ডোজ টিকা কিনবে বাংলাদেশ। গতকাল স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউট ও বাংলাদেশের
বেক্সিমকো ফার্মার সঙ্গে এ সংক্রান্ত ত্রিপক্ষীয় একটি সমঝোতা চুক্তি হয়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা অক্সফোর্ডের টিকার অনুমোদন দিলে বাংলাদেশে এ টিকা আসবে।
বাংলাদেশে প্রতি ডোজ টিকার দাম পড়বে ৫ ডলার (৪২৫ টাকা)। এই টিকা বিতরণ করা হবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার গাইডলাইন অনুযায়ী। চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীসহ যারা করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সামনের সারিতে আছেন, তাদের অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। কবে নাগাদ এ টিকা আসবে, সে বিষয়ে সরকার ও অপর দুটি প্রতিষ্ঠানের কেউই সুস্পষ্ট কোনো উত্তর দিতে পারেননি।
সমঝোতা সই অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক, স্বাস্থ্য সচিব আবদুল মান্নান, বাংলাদেশে ভারতীয় হাইকমিশনার বিক্রম দোরাইস্বামী, বেক্সিমকো ফার্মার ব্যবস্থাপনা পরিচালক নাজমুল হাসান উপস্থিত ছিলেন। চুক্তি সই করেন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, বেক্সিমকো ও সিরাম ইনস্টিটিউটের তিন কর্মকর্তা। বেক্সিমকো ভারতের সিরামের এ দেশীয় এজেন্ট হিসেবে বাংলাদেশকে এ টিকা সরবরাহ করবে। স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, প্রত্যেকের জন্য দুটি করে ডোজ লাগবে। অর্থাৎ তিন কোটি ডোজ টিকা আনলে দেড় কোটি মানুষকে তা দেওয়া যাবে। পর্যায়ক্রমে দেশের সবাইকে টিকার আওতায় আনার ব্যবস্থা করা হবে। মন্ত্রী বলেন, একটি ডোজের ২৮ দিন পর আরেকটি ডোজ দিতে হবে। প্রতি মাসে ৫০ লাখ করে ডোজ দিতে পারবে বলে তারা জানিয়েছে। আগামী ফেব্রুয়ারিতে এ টিকা আসতে পারে বলে ধারণা স্বাস্থ্যমন্ত্রীর, যদিও পরীক্ষা ও অনুমোদনের পর্ব এখনো শেষ হয়নি। জাহিদ মালেক বলেন, আমরা মনে করি এ ভ্যাকসিনটি নিরাপদ হবে। বিভিন্ন দেশে ট্রায়াল হয়েছে, কার্যকর প্রমাণিত হয়েছে। এটার কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা যায়নি। তিনি বলেন, জনসংখ্যার দিকে আমরা ছয় নম্বরে আছি, কিন্তু করোনাভাইরাসে মৃত্যুর হারের দিক থেকে আমরা ৩১ নম্বরে, অনেক পেছনে আছি। আমাদের সুস্থতার হারও ভালো। নিরাপদ থাকার জন্য সবাইকে মাস্ক ব্যবহার করা, সামাজিক দূরত্বের নিয়ম মেনে চলা এবং নিজ নিজ পরিবারকে সুরক্ষিত রাখার তাগিদ দেন জাহিদ মালেক। স্বাস্থ্য সচিব বক্তব্যে বলেন, করোনা ভ্যাকসিন তৈরির জন্য ১৬৬টি কোম্পানি কাজ করছে। এর মধ্যে ২৮টি কোম্পানি হিউম্যান ট্রায়াল স্টেজে গেছে। মাত্র নয়টি কোম্পানি থার্ড ট্রায়াল করতে ক্যাপাবিলিটি ডেভেলপ করেছে। ভ্যাকসিন উৎপাদনকারী ছয়টি কোম্পানির সঙ্গে বাংলাদেশ শুরু থেকে যোগাযোগ করছে।