ভয়ংকর রূপ ধারণ করছে ঘূর্ণিঝড় রেমাল। আজ বিকেল ৩টার দিকে উপকূলীয় এলাকায় এর অগ্রভাগ আছড়ে পড়তে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদফতর।
রোববার (২৬ মে) আবহাওয়া অধিদফতর পরিচালক আজিজুর রহমান বলেন, সন্ধ্যা থেকে মধ্যরাত নাগাদ স্থলভাগ অতিক্রম করবে ঘূর্ণিঝড়ের কেন্দ্র। আর বিকেল ৩টা থেকে উপকূলে রেমালের অগ্রভাগের প্রভাব পড়বে।
তিনি বলেন, ১২ থেকে ১৪ ঘণ্টা পর্যন্ত ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাব থাকবে। রেমাল সিভিয়ার সাইক্লোন স্ট্রোমে পরিণত হওয়ার সময় ১১০ থেকে ১২০ কিমি পর্যন্ত গতিবেগে ঝড়ো বাতাস বয়ে যাবে।
তিনি বলেন, সব মিলিয়ে ভয়াবহতার সব লক্ষণই রয়েছে। বিকেল ৩টার আগে উপকূলবাসীকে নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যাওয়ার অনুরোধ জানান তিনি।
এ আবহাওয়াবিদ বলেন, মোংলা ও পায়রা বন্দরের দিকে এগোচ্ছে রেমাল। উপকূলীয় ১৬ জেলার নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৮-১২ ফুট অধিক উচ্চতার বায়ুতাড়িত জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে।
তিনি বলেন, সব মিলিয়ে ভয়াবহতার সব লক্ষণই রয়েছে। বিকেল ৩টার আগে উপকূলবাসীকে নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যাওয়ার অনুরোধ জানান তিনি।
এদিকে বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় প্রবল ঘূর্ণিঝড়ের অগ্রভাগের প্রভাবে দমকা হাওয়াসহ বৃষ্টি শুরু হয়েছে জানিয়ে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ঘূর্ণিঝড়টি রোববার সকাল ৬টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৪০০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৩৬০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে, মোংলা সমুদ্র বন্দর থেকে ৩৩০ কিলোমিটার দক্ষিণে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ২৯৫ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থান করছিল। এটি আরও উত্তর দিকে অগ্রসর হয়ে সন্ধ্যা বা মধ্যরাতে মোংলার কাছ দিয়ে সাগর আইল্যান্ড (পশ্চিমবঙ্গ) খেপুপাড়া উপকূল অতিক্রম করতে পারে।
১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত
মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত এবং চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরকে ৯ নম্বর বিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।
১২ ফুট উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসের শঙ্কা
আবহাওয়া অধিদফতরের আবহাওয়াবিদ খো. হাফিজুর রহমানের সই করা ১০ নম্বর বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে ৮ থেকে ১২ ফুট পর্যন্ত জলোচ্ছ্বাসের আশঙ্কার কথা জানানো হয়েছে।
এতে বলা হয়, রেমালের প্রভাবে উপকূলীয় ১৬ জেলার নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৮-১২ ফুট অধিক উচ্চতার বায়ুতাড়িত জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে।
জেলাগুলো হলো: সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বরগুনা, বরিশাল, ভোলা, পটুয়াখালী, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার ও চাঁদপুর। এসব জেলার পাশাপাশি অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহে জলোচ্ছ্বাসের আশঙ্কা রয়েছে।
ঘূর্ণিঝড় আইলার মতোই ভয়ংকর রেমাল
ঘূর্ণিঝড় আইলার মতোই ভয়ংকর হবে রেমাল। অনেকটা মিলও আছে দুটোর মধ্যে। এ কারণে ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কাও বেশি রয়েছে। আবহাওয়াবিদরা বলছেন, ঘূর্ণিঝড়টি ধারণার চেয়ে একটু বেশি শক্তিশালী হতে পারে। অতীতে আমফান ও আইলাও ঠিক মে মাসের শেষ দিকে আঘাত হানে এবং ওই দুটি ঘূর্ণিঝড় দেশের ব্যাপক ক্ষতিসাধন করে গেছে।