আজকে হেফাজতে ইসলাম ইসলামের হেফাজতকারী হয়ে এরকম করছে। তাদের সাবেক আমিরের মৃত্যুর আগে কী অবস্থা হয়েছিল। তারা হেফাজত করে নাই বরং লাঞ্ছনা করে কবর পর্যন্ত পৌঁছে দিয়েছে। এখন আমরা ইসলামকে হেফাজতের হাতে ছেড়ে দিতে পারি না বলে মন্তব্য করেছেন হক্কানী আলেমরা।
রবিবার (১৩ ডিসেম্বর) সকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন হক্কানী আলেমরা।
হক্কানী আলেম ও মাদ্রাসার অধ্যক্ষ আব্দুল হাকিম চৌধুরী বলেন, ‘ভাস্কর্যের কয়েকটি দিক আছে। ভাস্কর্যের সাংস্কৃতিক, ধার্মিক এবং রাজনৈতিক দিক আছে। ধর্মীয় দিক থেকে বলতে গেলে, আমরা আমাদের ছোট বাচ্চাদের পুতুল কিনে দেই। সেটা কিন্তু ভাস্কর্যের অংশ বিশেষ। আমাদের প্রিয়জনদের ছবি আমরা ঘরে টানিয়ে রাখি, সেটাও ভাস্কর্যের অংশ। হেফাজত ভাস্কর্য নিয়ে যে বক্তব্য দিয়েছে, তার মধ্যে একটি বিশেষ উদ্দেশ্য আছে। তারা রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিলের জন্য দেশে বিশৃঙ্খলা তৈরির জন্য তারা ভাস্কর্যের বিরোধিতা করছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘ভাস্কর্য জায়েজ–এই কথা আমি বলছি না। কিন্তু বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করা তো ইসলাম সমর্থন করে না। মামুনুল হকের পিতা আল্লামা শায়খুল হাদিসকে নিয়ে আমরা কওমি স্বীকৃতির জন্য আন্দোলন করেছিলাম। বঙ্গবন্ধু কন্যা আমাদের স্বীকৃতি দিয়েছেন। আমরা তাকে কওমি জননী বললাম। জননীর সঙ্গে সন্তানের সম্পর্ক হবে মধুর। আমাকে কিছু বললেও সংবাদ সম্মেলন করে, রাস্তায় দাঁড়িয়ে মায়ের বিরুদ্ধে আন্দোলন করতে পারি না। আজকে হেফাজতে ইসলাম ইসলামের হেফাজতকারী হয়ে এরকম করছে। তাদের সাবেক আমিরের মৃত্যুর আগে কী অবস্থা হয়েছিল। তারা হেফাজত করে নাই। বরং লাঞ্ছনা করে কবর পর্যন্ত পৌঁছে দিয়েছে। এখন আমরা ইসলামকে হেফাজতের হাতে ছেড়ে দিতে পারি না। এজন্য আমরা হক্কানী আলেম সমাজ জাতিকে জানাতে চাই, গুটিকয়েক আলেম মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের সঙ্গে নিয়ে শুধু হুঙ্কার দিচ্ছে, জাতির জনককে নিয়ে অপমান করে কথা বলছে, এটা আমরা মেনে নিতে পারি না। বঙ্গবন্ধু মুসলমান ছিলেন, আমরাও মুসলমান। ইসলামের ভাষায় বলতে হলে শালীন ভাবে বলতে হবে।’
সংবাদ সম্মেলনে মাওলানা ইলিয়াস ইব্রাহিম বিক্রমপুরী বলেন, বাংলাদেশেও বহু আগে থেকেই অনেক ভাস্কর্য আছে। কিন্তু এই ভাস্কর্য ভেঙে ফেলার কথা কেউ কখনও বলেনি বা বাধাও দেয়নি।
তিনি আরও বলেন, ইসলামের জায়গা থেকে আমরা বলবো যে মহানবী হযরত মুহাম্মদ (স.) উদার অসাম্প্রদায়িক নীতিতে আমরা ধর্মকে পালন করবো। ধর্মের দোহাই দিয়ে রাষ্ট্রে কোনও বিশৃঙ্খলা যাতে তৈরি না হয়, কারও কথায় আমরা বিভ্রান্ত না হই, সেই দিকটা আমাদের খেয়াল রাখতে হবে।