রাজধানীজুড়ে উন্নয়নকাজ চলায় রাস্তা হয়ে পড়েছে সংকীর্ণ। করোনার কারণে স্কুল-কলেজও বন্ধ। এরপরও দিনভর ভয়াবহ যানজট লেগে থাকে। এমন পরিস্থিতিতে বছরের শুরু থেকেই সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে কঠোর হওয়ার ঘোষণা দিয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)। পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বলছেন, নানা কারণে গেল বছর সংশোধিত সড়ক পরিবহন আইন পুরোপুরি প্রয়োগে যাননি তারা। তবে ফেব্রুয়ারি থেকে তারা আইনটি প্রয়োগে কঠোর হবেন। এর মধ্যে ড্রাইভিং লাইসেন্স, যেখানে সেখানে পার্কিং এবং যত্রতত্র যাত্রী ওঠানামার ক্ষেত্রে কোনো ধরনের ছাড় দেবেন না। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বল প্রয়োগে সাময়িক সমাধান মিললেও টেকসই সুবিধা পেতে পুরো সড়ক নেটওয়ার্ক কৌশলগত পরিবহন পরিকল্পনার আদলে ঢেলে সাজাতে হবে। গতকাল ছিল বছরের পঞ্চম দিন। বিমানবন্দর গোলচত্বর, বনানী, মহাখালী, সাতরাস্তা, মগবাজার, পল্টন এবং রামপুরায় বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে যানজট বাড়তেও দেখা গেছে। মেরুল বাড্ডা, মধ্যবাড্ডা, উত্তর বাড্ডা, নতুনবাজার এবং নর্দা এলাকায় চলে গণপরিবহনের এলোমেলো পার্কিং। এমনকি রাস্তা বন্ধ করে যাত্রী ওঠানামা করেন বাস চালকরা। এদিকে সার্ক ফোয়ারা মোড়ে সাপ্তাহিক ছুটির দিনেও লেগে থাকে যানজট। এখানকার সোনারগাঁও সড়কটিতে উল্টোপথে রিকশাভ্যান চলাচলে বেধে যায় গাড়ির জটলা। ব্যক্তিগত যানের পাশাপাশি গণপরিবহনও চলছে যে-যার মতো। নির্ধারিত স্থানে দাঁড়ায় না বাস। যাত্রীরা বেশির ভাগই ওঠানামা করেন মাঝ রাস্তায়। আবার যাত্রী ছাউনির কাছেও নেই ফুটওভার ব্রিজ, তাই যাত্রীরা ছাউনির নিচে নেমে দূরে ব্রিজে উঠতে বাড়তি হাঁটতেও রাজি নন। আইন যেমন মানছেন না পরিবহন শ্রমিকরা, তেমনি যাত্রীরাও নির্বিকার। ঢাকার বেড়িবাঁধেও চলছে ফিটনেসহীন লক্কড়ঝক্কড় বাস ও লেগুনা। যাত্রী নেওয়ার প্রতিযোগিতায় রাস্তা আটকে দাঁড়িয়ে থাকেন চালকরা। সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে ২৯ ডিসেম্বর ডিএমপি সদর দফতরে ট্রাফিকের করা মামলা, রেকারিং, জরিমানা ইত্যাদি সংক্রান্ত আলোচনা সভা হয়। সভায় ডিএমপি কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম ঢাকার রাস্তা যানজটমুক্ত ও যান চলাচলে শৃঙ্খলা আনতে রাস্তার মোড়ে গাড়ি দাঁড়ানো ও যাত্রী ওঠানামা বন্ধ করতে কঠোর নির্দেশনা দেন। এক মাসের মধ্যে এসব বাস্তবায়নের জন্য ট্রাফিক কর্মকর্তাদের নির্দেশনাও দিয়েছেন তিনি। এ সময় বেড়িবাঁধ এলাকার যানজট নিরসনে করণীয় সম্পর্কে ডিএমপি কমিশনার বলেন, সিটি করপোরেশনের সঙ্গে আলোচনা করে বেড়িবাঁধসমূহ যানজটমুক্ত রাখার লক্ষ্যে বেড়িবাঁধ থেকে বালু ও অন্যান্য সামগ্রী সরিয়ে ফেলতে হবে। ড্রাইভিং লাইসেন্স ও শৃঙ্খলা সংক্রান্ত ট্রাফিক মামলা বাড়িয়ে চালকদের নিয়মের মধ্যে নিয়ে আসতে হবে। ফিটনেসবিহীন গাড়ি ও রাস্তায় অচল গাড়িসমূহ রেকারিং করে যান চলাচল স্বাভাবিক রাখার নির্দেশ দেন তিনি। রোড সেইফটি ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক সাইদুর রহমান জানান, দুর্ঘটনায় প্রাণহানির হার ক্রমেই ঊর্ধ্বমুখী হচ্ছে। সড়ক দুর্ঘটনার প্রধান কারণগুলোর মধ্যে আছে- ত্রুটিপূর্ণ যানবাহন, বেপরোয়া গতি, চালকদের অদক্ষতা ও শারীরিক-মানসিক অসুস্থতা, তরুণ ও যুবকদের বেপরোয়া মোটরসাইকেল চালানো, দুর্বল ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা