হত্যাকান্ড শূন্যে আনার প্রতিশ্রুতি বিএসএফের
________________________________________ভারতের গৌহাটিতে বিজিবি-বিএসএফ মহাপরিচালক পর্যায়ের ৫১তম সীমান্ত সম্মেলন শেষ হয়েছে। গত মঙ্গলবার থেকে এ সম্মেলন হয়। সম্মেলনে সীমান্ত হত্যাকাণ্ড নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন বিজিবি মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মো. সাফিনুল ইসলাম। বিপরীতে সীমান্ত হত্যা শূন্যে আনার বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন বিএসএফ প্রধান শ্রী রাকেশ আস্থানা।
গতকাল শুক্রবার বিজিবির জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. শরিফুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়। বিজ্ঞপ্তিটি দুই বাহিনীর যৌথ বিবৃতি বলে উল্লেখ করা হয়।
এতে বলা হয়, সম্মেলনে বিজিবি মহাপরিচালক সীমান্তে বিএসএফ বা ভারতীয় নাগরিক কিংবা দুর্বৃত্তদের হাতে বাংলাদেশের নিরস্ত্র নাগরিকদের হত্যা, আহত ও মারধরের ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেন। বিজিবি মহাপরিচালক বলেন, বাংলাদেশের মানুষ সর্বদা দুই সীমান্তরক্ষী বাহিনীর মধ্যে বিদ্যমান চমৎকার সম্পর্কের প্রশংসা করে এবং তারা সীমান্ত হত্যা শূন্যে নামিয়ে আনার বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ প্রত্যাশা করেন। মানবাধিকার সমুন্নত এবং অপরাধীদের হত্যার পরিবর্তে নিজ নিজ দেশের প্রচলিত আইনের আওতায় আনার জন্য সর্বাত্মক প্রচেষ্টার আহ্বান জানান তিনি।
সম্মেলনে সীমান্তে হত্যার ঘটনা অদূর ভবিষ্যতে উল্লেখযোগ্যভাবে কমিয়ে আনার ব্যবস্থা করা হবে বলে আশ্বাস দেন বিএসএফ মহাপরিচালক শ্রী রাকেশ আস্থানা।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সীমান্ত হত্যা শূন্যে আনার অধিক কার্যকর উদ্যোগ হিসেবে স্পর্শকাতর এলাকায় রাতে যৌথ টহল, ঝুঁকিপূর্ণ সীমান্তে জনসচেতনতামূলক কর্মসূচি বেগবান, আর্থ-সামাজিক উন্নয়নমূলক কর্মসূচির বিষয়ে উভয়পক্ষ সম্মত হয়।
বিজিবি ডিজি সমন্বিত সীমান্ত ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনার (সিবিএমপি) ওপর গুরুত্বারোপ করে মাদক, বিশেষ করে ইয়াবা পাচার, আগ্নেয়াস্ত্র চোরাচালান, গবাদি পশু, জালমুদ্রা, স্বর্ণ চোরাচালানের মতো আন্তঃসীমান্ত অপরাধের বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। একই সঙ্গে এসব অপরাধ দমনে বিএসএফের সহযোগিতা কামনা করেন। তিনি আরও বলেন, ‘অবৈধ মাদক পাচারের ফলে যুবসমাজের মধ্যে মাদকাসক্তি বেড়েছে, যা উভয় দেশের জন্যই বিপজ্জনক এবং এটিকে কার্যকরভাবে মোকাবিলা করা দরকার। উভয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী চোরাকারবারি সম্পর্কিত তাৎক্ষণিক ও দরকারি তথ্য আদান-প্রদান এবং প্রয়োজনে যৌথ অভিযানের বিষয়ে সম্মত হয়েছে।’
গত ১৭ ডিসেম্বর বাংলাদেশ ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী পর্যায়ের দ্বিপক্ষীয় সম্মেলন (ভার্চুয়ালি) অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির রাজশাহী জেলার পদ্মা নদীর ১ দশমিক ৩ কিলোমিটার পথের অনুরোধ বিবেচনার আশ্বাস স্মরণ করিয়ে দিয়ে বিজিবি মহাপরিচালক বিষয়টি অনুসরণে বিএসএফ মহাপরিচালককে অনুরোধ জানান। বিএসএফ মহাপরিচালক সংশ্লিষ্ট কর্র্তৃপক্ষের মাধ্যমে বিষয়টি সমাধানের আশ্বাস দেন।
এছাড়া বিজিবি ডিজি ভারতের মিজোরাম রাজ্যের অভ্যন্তরে বাংলাদেশের পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলের সশস্ত্র আঞ্চলিক বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠীর আস্তানার উপস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন এবং এগুলো ধ্বংসে অনুরোধ জানান।
এ সময় সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে ভারত সরকারের ‘জিরো টলারেন্স নীতি’ উল্লেখ করে রাকেশ আস্থানা এমন আস্তানা থেকে থাকলে তার বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন।
বিজিবি মহাপরিচালকের নেতৃত্বে ১১ সদস্যের প্রতিনিধিদল সীমান্ত সম্মেলনে অংশ নেয়। অন্যদিকে বিএসএফ ডিজি রাকেশ আস্থানার নেতৃত্বে ১২ সদস্য অংশ নেন।