স্থানীয় সরকার মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম বলেছেন, গত বছরের তিক্ত অভিজ্ঞতার পরিপ্রেক্ষিতে এ বছরের শুরু থেকেই মন্ত্রণালয়ের উদ্যাগে সিটি করপোরেশনকে সঙ্গে নিয়ে সম্মিলিত প্রচেষ্টায় এডিস মশা এবং মশাবাহিত রোগ প্রতিরোধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ায় এখন ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
তিনি আজ বৃহস্পতিবার মন্ত্রণালয়ের নিজ কক্ষ থেকে অনলাইনে আয়োজিত ঢাকা মহানগরীসহ সারা দেশে ডেঙ্গু রোগ প্রতিরোধে ষষ্ঠ আন্ত মন্ত্রণালয় সভায় সভাপতির বক্তব্যে এ কথা বলেন।
গত বছরের তুলনায় এ বছর ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব দুই থেকে তিন গুণ বেশি হবে বলে আইইডিসিআর পূর্বাভাস দিলেও তেমনটি হয়নি জানিয়ে স্থানীয় সরকার মন্ত্রী বলেন, নগরবাসীকে ডেঙ্গু থেকে মুক্ত রাখতে দুই সিটি করপোরেশনসহ সংশ্লিষ্ট সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টা এবং মানুষকে সচেতন করার লক্ষ্যে টেলিভিশন বিজ্ঞাপন-টিভিসি তৈরি করে প্রচার করায় ডেঙ্গু মশা নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব হয়েছে।
স্থানীয় সরকার মন্ত্রীর নেতৃত্বে ডেঙ্গু নির্মূলে মানসম্মত ওষুধ ও ফগিং মেশিন সরবরাহ করা, মোবাইল কোর্ট পরিচালনার নির্দেশ এবং বিভিন্ন সংস্থার অধীনে থাকা খাল, জলাশয় ও নর্দমা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার নির্দেশনা, সঠিক পরামর্শ এবং প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ দিয়ে সবাইকে সঙ্গে নিয়ে কাজ করায় সভায় মন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানানো হয়।
এ সময় এডিস মশা নির্মূলে বিভিন্ন জলাশয়ে থাকা কচুরিপানা অপসারণ করার জন্য আধুনিক যন্ত্রপাতি সরবরাহ করার আশ্বাস প্রদান করেন মন্ত্রী।
যত্রতত্র বাস থেমে প্যাসেঞ্জার ওঠা-নামা করার কারণে প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটে এবং ট্রাফিক জ্যাম হয়। এ অবস্থা চলতে পারে না উল্লেখ করে তিনি বলেন, নির্দিষ্ট দূরত্বে, নির্দিষ্ট স্থানে বাস বে তৈরি করতে হবে। এ জন্য মন্ত্রী সিটি করপোরেশনকে নির্দেশনা দেন।
তিনি বলেন, ঘনবসতিপূর্ণ ঢাকা শহরে জায়গার অভাব আছে, তারপর এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নিতে হবে। এ সময় প্রয়োজনে মাঠ পরিদর্শন করার আগ্রহ ব্যক্ত করেন মো. তাজুল ইসলাম।
মন্ত্রী জানান, দেশের সব হাসপাতাল-ক্লিনিকগুলোর যেসব মেডিক্যাল বর্জ্য তৈরি হয়, সেগুলো যত্রতত্র না ফেলে ইনসিনারেশন প্লান্টের মাধ্যমে বার্ন করতে হবে। যেসব হাসপাতাল-ক্লিনিক এই পদক্ষেপ নেবে না, তাদের তালিকা তৈরি করে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।
মো. তাজুল ইসলাম বলেন, ঢাকা শহরকে অপরিচ্ছন্ন না রেখে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন এবং দৃষ্টিনন্দন করে গড়ে তুলতে সমন্বিতভাবে কাজ করতে হবে। এ প্রসঙ্গে মন্ত্রী নগরীর সৌন্দর্য বর্ধনের জন্য সিটি করপোরেশনগুলোকে নিজেদের আয় বৃদ্ধি করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
ত্রাণ বিতরণে অনিয়ম রোধ, এডিস মশা নিয়ন্ত্রণ কিংবা করোনাভাইরাস মোকাবেলায় সরকারের সফলতার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, যেকোনো সমস্যা সমাধানে সম্মিলিতভাবে কাজ করলে সহজে সফলতা পাওয়া যায়।
সভায় ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র, দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্যানেল মেয়র, খুলনা সিটি করপোরেশনের মেয়র, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের প্রশাসক, স্থানীয় সরকার বিভাগের সিনিয়র সচিব, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখ্য সমন্বয়কসহ (এসডিজি বিষয়ক) সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা অংশ নেন।