কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সভায় বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
গণভবন অনুপ্রবেশকারী ও বিভিন্ন সময় দলের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়া বিদ্রোহীদের দলীয় পদ না দেওয়ার বিষয়ে ব্যবস্থা নিচ্ছে আওয়ামী লীগ। দলের বিভিন্ন পর্যায়ের কমিটিতে তারা যাতে পদ না পায়, সে বিষয়ে ভালোভাবে যাচাই-বাছাই করা হবে। সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকদের ব্যক্তিগত অনুসারীদের কমিটিতে প্রাধান্য দেওয়া যাবে না। এসব তদারকি করতে ও সাংগঠনিক কার্যক্রম জোরদার করার লক্ষ্যে কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সদস্যদের সমন্বয়ে ৮টি বিভাগীয় টিম গঠন করা হয়েছে।
শনিবার গণভবনে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সভায় এমন সিদ্ধান্ত হয়। প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে সীমিত পরিসরে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। তাই কেন্দ্রীয় কমিটির সবাইকে ডাকা হয়নি সভায়। সভায় প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের পর করোনায় নিহতদের শোকপ্রস্তাব অনুমোদিত হয়। ডিসেম্বর পর্যন্ত সব জাতীয় দিবসে দলীয় কর্মসূচি, সাংগঠনিক কমিটি ও করোনা পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়। করোনার দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবিলায় সবাই সতর্ক থেকে ভূমিকা রাখার নির্দেশনা দেওয়া হয়।
সরকারি দলের তিন কেন্দ্রীয় নেতা জানান, আলোচনার অধিকাংশই ছিল কমিটি নিয়ে। কমিটির বিষয়ে কঠোর অবস্থানের কথা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। স্থানীয় সাংসদ বা দায়িত্বশীল নেতাদের প্রভাবে কমিটি করা যাবে না। প্রধানমন্ত্রী নিজেই বিভিন্ন জেলা কমিটি সম্পর্কে পাওয়া তথ্যের ফাইল নিয়ে আসেন বৈঠকে। জেলা কমিটি নিয়ে অনিয়মের ধরন জানান বৈঠকে উপস্থিত নেতাদের। সম্মেলন ছাড়া তৃণমূলে কোনো কমিটি না করতেও নির্দেশনা দিয়েছেন দলীয় প্রধান।
বৈঠকের সিদ্ধান্ত নিয়ে বিকেলে তাঁর সরকারি বাসভবন থেকে অনলাইন ব্রিফিং করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, দলের বিভিন্ন কমিটি গঠন নিয়ে প্রধানমন্ত্রী বেশ কিছু নির্দেশনা দিয়েছেন। কোনো অবস্থাতেই দলের অভ্যন্তরে বিতর্কিতদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দেওয়া চলবে না। দুর্দিনের ত্যাগী পরীক্ষিত ও নিবেদিত নেতা-কর্মীরা যাতে বাদ না পড়েন। তিনি আরও বলেন, সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক হলেই নিজেদের লোক দিয়ে ‘মাই ম্যান কমিটি’ গঠন করা যাবে না। যাঁরা সম্মেলনে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন, যোগ্যতার ভিত্তিতে তাদের মধ্য থেকে পরীক্ষিত নেতাদের কমিটিতে রাখতে হবে।
কমিটিতে যাঁরা আছেন
রংপুর বিভাগের সমন্বয়ক হয়েছেন যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ ও সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন। এ টিমে আরও আছেন সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য রমেশ চন্দ্র সেন ও শাজাহান খান, কোষাধ্যক্ষ এইচ এন আশিকুর রহমান, নির্বাহী সদস্য হোসনে আরা লুৎফা ডালিয়া ও সফুরা বেগম রুমি।
রাজশাহী বিভাগের সমন্বয়ক হাছান মাহমুদ ও সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন। আরও আছেন সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আব্দুর রহমান, স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক সম্পাদক রোকেয়া সুলতানা, নির্বাহী সদস্য নুরুল ইসলাম, মেরিনা জাহান, বেগম আখতার জাহান।
খুলনা বিভাগের সমন্বয় যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম ও সাংগঠনিক সম্পাদক বি এম মোজাম্মেল হক। আরও আছেন সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কাজী জাফর উল্লাহ ও পীযুষ কান্তি ভট্টাচার্য্য, শ্রম ও জনশক্তি বিষয়ক সম্পাদক হাবিবুর রহমান সিরাজ, নির্বাহী সদস্য মো. আমিরুল আলম মিলন, পারভীন জামান কল্পনা ও গ্লোরিয়া সরকার ঝর্ণা।
বরিশাল বিভাগে সমন্বয়ক যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম ও সাংগঠনিক সম্পাদক আফজাল হোসেন। বাকিরা হলেন আন্তর্জাতিক সম্পাদক শাম্মী আহমেদ, নির্বাহী সদস্য আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহ, আ খ ম জাহাঙ্গীর হোসাইন, মো. গোলাম কবীর রাব্বানী ও আনিসুর রহমান।
ঢাকা বিভাগের সমন্বয়ক যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক দিপু মণি ও সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম। আরও আছেন সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মো. আব্দুর রাজ্জাক, মুহাম্মদ ফারুক খান ও আব্দুল মান্নান খান, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপ, বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক মো. দেলোয়ার হোসেন, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক মৃণাল কান্তি দাস, শিক্ষা ও মানবসম্পদ বিষয়ক সম্পাদক শামসুন নাহার চাঁপা, মহিলা বিষয়ক সম্পাদক মেহের আফরোজ চুমকি, শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক মো. সিদ্দিকুর রহমান, নির্বাহী সদস্য মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, কামরুল ইসলাম, এ বি এম রিয়াজুল কবীর কাওছার, আনোয়ার হোসেন, ইকবাল হোসেন অপু, সানজিদা খানম, সাহাবুদ্দিন ফরাজী ও মোহাম্মদ সাইদ খোকন।
ময়মনসিংহ বিভাগের সমন্বয়ক দিপু মণি ও সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল। আরও আছেন সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মতিয়া চৌধুরী, সংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল, নির্বাহী সদস্য মারুফা আক্তার পপি ও রেমন্ড আরেং।
সিলেট বিভাগের সমন্বয়ক যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল-আলম হানিফ ও সাংগঠনিক সম্পাদক সাখাওয়াত হোসেন শফিক। আরও আছেন সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক, নুরুল ইসলাম নাহিদ, নির্বাহী সদস্য মুশফিক হোসেন চৌধুরী, উপ-দপ্তর সম্পাদক সায়েম খান।
চট্টগ্রাম বিভাগের সমন্বয়ক মাহবুব-উল-আলম হানিফ ও সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন। বাকিরা হলেন সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম, মোশারফ হোসেন এমপি ও আব্দুল মতিন খসরু, অর্থ ও পরিকল্পনা বিষয়ক সম্পাদক ওয়াসিকা আয়েশা খান, কৃষি ও সমবায় বিষয়ক সম্পাদক ফরিদুন্নাহার লাইলী, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক সেলিম মাহমুদ, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক মো. আবদুস সবুর, যুব ও ক্রীড়া সম্পাদক হারুনুর রশীদ, উপ-প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন, নির্বাহী সদস্য মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী ও দীপংকর তালুকদার।