“করোনা মহামারী মোকাবেলায় বিশ্বের উন্নত দেশগুলো যখন হিমশিম খাচ্ছে, প্রতিনিয়ত প্রাণহানি বাড়ছে, শেখ হাসিনার বাংলাদেশ তখন করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বিশ্বে উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। গত এক দশকে বঙ্গবন্ধু কণ্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার সফল নেতৃত্বে দেশের স্বাস্থ্য খাতে বৈপ্লবিক পরিবর্তন সূচিত হয়েছে। করোনা পরিস্থিতির শুরু থেকেই সরকার দেশের সকল শ্রেণী পেশার মানুষের মৌলিক চাহিদা নিশ্চিত করেছে। সাধারণ জনগণের খাদ্য নিরাপত্তা ও স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করেছে। আর এ সব কিছুই সম্ভব হয়েছে বঙ্গবন্ধু কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাহসী ও ক্যারিশম্যাটিক নেতৃত্বে।”
গাজীপুরের শহীদ তাজউদ্দিন আহমেদ মেডিকেল কলেজের ২১০ কোটি ১৭ লাখ টাকার উন্নয়ন কার্যক্রমের উদ্বোধনকালে এসব কথা বলেন, যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী মোঃ জাহিদ আহসান রাসেল।
প্রতিমন্ত্রী আজ বুধবার বিকালে অনাড়ম্বরপূর্ন এক অনুষ্ঠানের মধ্যে দিয়ে হাসপাতালটির একাডেমিক ভবন, ছাত্রাবাস, ছাত্রীনিবাস ও ইন্টার্নী চিকিৎসকদের ডরমেটরীসহ হাসপাতালের কেন্দ্রীয় অক্সিজেন সরবরাহ সিস্টেমের শুভ উদ্বোধন করেন।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রতিমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে স্বাধীনতা-উত্তর স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে সাফল্যের শুরু বঙ্গবন্ধুর হাত ধরে; তিনি স্বাস্থ্যকে সংবিধানের মৌলিক অধিকারের তালিকায় সংযোজন, প্রথম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় স্বাস্থ্যকে গুরুত্বপূর্ণ স্থানদান, গুটিকয় জেলা ও মহকুমা হাসপাতাল থেকে থানায় থানায় শত শত গ্রামীণ স্বাস্থ্য কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা, চিকিৎসকদের প্রথম শ্রেণির মর্যাদা দিয়ে স্বাস্থ্যকে গুরুত্ববহ করে তোলা ইত্যাদির মাধ্যমে বাংলাদেশের স্বাস্থ্যব্যবস্থার অগ্রযাত্রার শুভ সূচনা করেছিলেন । তিনি ১৯৭৪ সালেই ‘জনস্বাস্থ্য পুষ্টি প্রতিষ্ঠান’ প্রতিষ্ঠা করেন। পরবর্তীতে স্বাস্থ্য সেবাকে জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে ১৯৯৬ সালে শেখ হাসিনার সরকার প্রথমবারের মতো দেশে জাতীয় স্বাস্থ্য নীতি প্রণয়ন করে। প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে প্রতি ৬ হাজার জনগোষ্ঠীর জন্য একটি করে কমিউনিটি ক্লিনিক স্থাপনের পরিকল্পনা গ্রহণ করে এবং ১৮ হাজার কমিউনিটি ক্লিনিক নির্মাণের কাজ হাতে নেয়। এর মধ্যে প্রথম পর্যায়ে ১০ হাজারের নির্মাণকাজ সম্পন্ন হয়। দেশের হাসপাতালের শয্যাসংখ্যা আগের চেয়ে ৭ হাজার বৃদ্ধি করা হয়।
এ সময় তিনি জানান, টিআইবি এর প্রতিবেদন অনুযায়ী বাংলাদেশ ২০০১ থেকে ২০০৫ সাল টানা পাঁচ বছর দুর্নীতিতে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ছিল। এ সময়ে স্বাস্থ্য খাতের ব্যাপক অবনতি ঘটে।
২০০৯ সালে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ পুনরায় দায়িত্বগ্রহন করার পর বিগত এক দশকে দেশে তিনটি নতুন মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় স্হাপনসহ ১০৭টি সরকারি-বেসরকারি মেডিকেল কলেজ এবং একটি পোস্ট-গ্র্যাজুয়েট নার্সিং ইনস্টিটিউট স্থাপনের মাধ্যমে স্বাস্থ্য সেবায় নবদিগন্তের সূচনা করেছে।
তিনি বলেন, প্রথমবারের মতো একটি মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের পাশাপাশি প্রতিষ্ঠা করা হয় কিডনি, ক্যান্সার, নিউরোলজিসহ বেশ কয়েকটি বিশেষায়িত হাসপাতাল ও ইনস্টিটিউট। এ ছাড়া চিকিৎসা যন্ত্রপাতির ওপর থেকে শুল্ক প্রত্যাহার করে বেসরকারি খাতে হাসপাতাল ও ক্লিনিকের মানোন্নয়নের সুযোগ সৃষ্টি করা হয়। উন্নত সেবার জন্য এখন আর কারো সিঙ্গাপুর থাইল্যান্ড যাবার প্রয়োজন পড়ে না, দেশের হাসপাতাল গুলোই এখন আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের মধ্যে দিয়ে জনগনের উন্নত সেবা নিশ্চিত করছে।
অনুষ্ঠানে শহীদ তাজউদ্দীন মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর ডাঃ মোঃ আসাদ হোসেন, পরিচালক ডা: মোঃ খলিলুর রহমান, গাজীপুরের জেলা প্রশাসক এস এম তরিকুল ইসলাম, জিএমপি উপ কমিশনার শরিফুল ইসলাম, গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি কাজী আলিম উদ্দিন বুদ্দিন, এড. ওয়াজ উদ্দিন মিয়া, আব্দুর রউফ নয়ন, কাজী ইলিয়াস আহমেদ, বাসির উদ্দিন বাসির, জাবেদ আলী জবে কাউন্সিলর, কামরুল আহসান সরকার রাসেল, সনজিৎ মল্লিক বাবু, আইয়ুব রানা, কাজী আনিসুর রহমান আরিফ, এড. আয়েশা আক্তার কাউন্সিলর, সালমা আক্তার সহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।