দ্বিতীয় স্থানে সৌদি এরপর যুক্তরাষ্ট্র
করোনাসহ নানা সংকটের মধ্যে দেশের অর্থনীতির কিছু সূচকে খারাপ অবস্থা থাকলেও বাড়ছে রেমিট্যান্স। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি হারে বাড়ছে মালয়েশিয়া থেকে। এর পর রয়েছে সৌদি আরব ও যুক্তরাষ্ট্র। চলতি অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) সব মিলিয়ে গত অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে ২১৯ কোটি ডলার বা ৪৮ দশমিক ৫৪ শতাংশ রেমিট্যান্স বেড়েছে। এর মধ্যে শুধু এই তিন দেশ থেকেই বেড়েছে ১২৭ কোটি ডলার।
জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বের ১৬৮টি দেশে বাংলাদেশিরা কর্মরত। এসব দেশ থেকে তিন মাসে ৬৭১ কোটি ডলার সমপরিমাণ অর্থ ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। এ সময়ে মালয়েশিয়া থেকে রেমিট্যান্স এসেছে ৬০ কোটি ৭২ লাখ ডলার। গত অর্থবছরের একই সময়ে যার পরিমাণ ছিল ৩২ কোটি ১০ লাখ ডলার। মালয়েশিয়া থেকে রেমিট্যান্স বেড়েছে ৮৯ দশমিক ১২ শতাংশ। এই বৃদ্ধির ফলে মালয়েশিয়া এখন বাংলাদেশের রেমিট্যান্স আহরণের ষষ্ঠ থেকে চতুর্থ উৎস দেশে পরিণত হয়েছে। রেমিট্যান্স প্রবৃদ্ধিতে দ্বিতীয় অবস্থানে আছে আহরণের শীর্ষে থাকা সৌদি আরব। গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ৯৫ কোটি ডলার থেকে বেড়ে গত তিন মাসে ১৬২ কোটি ডলার রেমিট্যান্স এসেছে। প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৬৯ দশমিক ৭৩ শতাংশ। রেমিট্যান্স বৃদ্ধিতে তৃতীয় অবস্থানে থাকা যুক্তরাষ্ট্র থেকে ৬৪ দশমিক ৭৬ শতাংশ বেড়েছে। যুক্তরাষ্ট্র থেকে এসেছে ৮১ কোটি ৫২ লাখ ডলার। পরিমাণ বিবেচনায় রেমিট্যান্স আহরণের দ্বিতীয় দেশ এখন যুক্তরাষ্ট্র।
রেমিট্যান্স আহরণে আগে দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা সংযুক্ত আরব আমিরাত এখন তৃতীয়। দেশটি থেকে তিন মাসে ১৯ দশমিক ১৫ শতাংশ বেড়ে ৭৫ কোটি ডলার এসেছে। এ ছাড়া যুক্তরাজ্য থেকে একই সময়ে ৫১ দশমিক ৪৯ শতাংশ বেড়ে ৫১ কোটি ৬১ লাখ ডলারের রেমিট্যান্স এসেছে। যুক্তরাজ্য আগের মতোই পঞ্চম অবস্থানে। তবে আগে চতুর্থ অবস্থানে থাকা কুয়েত এখন ৭ম অবস্থানে। যদিও কুয়েত থেকে ২২ দশমিক ৭১ শতাংশ বেড়ে ৪৬ কোটি ৬৩ লাখ ডলার রেমিট্যান্স এসেছে। সপ্তম থেকে ষষ্ঠ অবস্থানে আসা মধ্যপ্রাচ্যের দেশ ওমান থেকে ৫১ দশমিক ২১ শতাংশ রেমিট্যান্স বেড়ে ৪৮ কোটি ৬০ লাখ ডলার এসেছে। কাতার থেকে ২০ দশমিক ৫০ শতাংশ বেড়ে ৩৪ কোটি ৬৫ লাখ ডলার এসেছে। ইতালি থেকে ১৫ দশমিক ৯২ শতাংশ বেড়ে এসেছে ২২ কোটি ৬৮ লাখ ডলার এবং বাহরাইন থেকে ৩৫ দশমিক ৯০ শতাংশ বেড়ে ১৬ কোটি ডলার এসেছে।
সংশ্নিষ্টরা জানান, করোনাভাইরাসের কারণে ব্যবসা-বাণিজ্য ক্ষতির মুখে পড়ে দেশের মতো প্রবাসীদেরও অনেকে বেকার হয়েছেন। আয় কমেছে অনেকের। এর মধ্যেও রেমিট্যান্স বৃদ্ধির অন্যতম কারণ হুন্ডির চাহিদা একেবারে কমে যাওয়া। একই সঙ্গে সরকারের ২ শতাংশ হারে প্রণোদনা অব্যাহত থাকায় অনেকেই ব্যাংকিং চ্যানেলে অর্থ পাঠাচ্ছেন। আবার বহির্বিশ্বের সঙ্গে যোগাযোগ সীমিত হয়ে পড়ায় এখন হাতে করে নগদ ডলার আসছে খুব কম। এর বাইরে এক শ্রেণির প্রবাসী জমানো টাকা দেশে পাঠিয়ে দিচ্ছেন। সব মিলিয়ে ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিট্যান্স বাড়ছে। করোনাভাইরাসের এ সময়ে সিআরআর কমানো, প্রণোদনা প্যাকেজ বাস্তবায়নে পুনঃঅর্থায়ন তহবিল গঠনসহ নানা নীতি সহায়তার পাশাপাশি রেমিট্যান্স বৃদ্ধির কারণে দেশের ব্যাংকগুলোতে এখন প্রচুর উদ্বৃত্ত অর্থ জমা হয়েছে।