যুবকরাই পারে দেশকে গড়তে: যুবদিবসে প্রধানমন্ত্রী

admin
নভেম্বর ১, ২০২০ ১১:৫৯ পূর্বাহ্ণ
Link Copied!

গণভবন থেকে বক্তব্য রাখছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।


প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘দেশ গড়ে তোলার পেছনে যুবকদের অবদান রয়েছে। একটি দেশকে গড়ে তুলতে হলে যে বয়সটি দরকার, সেটা যুবকদেরই বয়স। এই বয়সটাই কাজের বয়স, মেধা বিকাশের বয়স। বয়সেই সবকিছু চিন্তা ভাবনা করে মেধা শ্রম দিয়ে একটি দেশ গড়ে তোলা যায়।’ তিনি বলেন, জাতির পিতার আদর্শে আমরা যুবকদের গড়ে তুলব। আমাদের দেশটা পরিচালনা করবে কারা? আজকে যারা তরুণ যুবক তারাই। আওয়ামী লীগ যখনই সরকারে এসেছে, তরুণদের কর্মসংস্থানের দিকেবিশেষভাবে দৃষ্টি দিয়েবিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে।    

আজকে যারা যুবক, আগামী দিনে তারা দেশের কর্ণধার হবে; আজকে যে শিশুটি জন্ম নিল, তার ভবিষ্যত যেন উন্নত হয়, সে কথা চিন্তা করেই সরকার সব পদক্ষেপ নিচ্ছে

‘মুজিববর্ষের আহ্বান, যুব কর্মসংস্থান’ প্রতিপাদ্য নিয়ে  যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রনালয়ের উদ্যোগে আয়োজিত বঙ্গবন্ধু জাতীয় যুব দিবস ২০২০ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি। আজ রবিবার (১ নভেম্বর) সকালে গণভবন থেকে ভার্চুয়াল কনফারেন্সের মাধ্যমে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে যুক্ত হয়ে বক্তব্য রাখেন প্রধানমন্ত্রী।

গণভবন থেকেভার্চুয়াল কনফারেন্সের মাধ্যমে বক্তব্য রাখেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের যুবসমাজ নিজেরা শুধু চাকরির পেছনে ছুটে বেড়াবে না। চাকরি দেবে। সেই ধরনের ব্যবস্থা যেন তারা করতে পারে সেটাই আমরা চাই। সেই ধরনের মন মানসিকতা থাকতে হবে। উদ্যোক্তা হতে হবে নিজেদেরই।

এ সময় প্রধানমন্ত্রী ফ্রিল্যান্সারদের উদ্দেশ্যে বলেন, তারা যে একটা কাজ করছে এবং কাজ করে তারা যে অর্থ উপার্জন করছে, এইটাও একটা কাজ।’ যারা এ ধরনের ফ্রিল্যান্সিংয়ের কাজ করবে, তারা যেন একটা সার্টিফিকেট পান স্বীকৃতি পান, সে বিষয়ে আমরা সজীব ওয়াজেদ জয়ের সঙ্গে কথা বলেছি। আমাদের আইসিটি মন্ত্রণালয় সে বিষয়ে কাজ করছে। আমাদের যুব মন্ত্রণালয়ও।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘আমরা বহুমুখী শিক্ষা ব্যবস্থা চালুর লক্ষ্যে স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা, বিশ্ববিদ্যালয় ও কারিগরি শিক্ষা ব্যবস্থা চালু করেছি। আমাদের ছেলে-মেয়েরা যাতে দক্ষ জনশক্তি হিসেবে গড়ে উঠতে পারে, যেন পর মুখাপেক্ষী না হয়ে নিজেরা কাজ করতে পারে সেই লক্ষ্যেই কাজ করছে সরকার।

সরকার প্রধান বলেন, ‘মাত্র ৫৪ বছর বয়সেই ঘাতকদের গুলিতে বঙ্গবন্ধুকে চলে যেতে হয়েছে। তিনি দেশ স্বাধীন করে দিয়েছিলেন যাতে এ দেশের মানুষ উন্নত জীবন পায়। একটি ধ্বংসস্তুপের ওপর দাঁড়িয়ে তিনি যাত্রা শুরু করেছিলেন। মাত্র ৯ মাসেই তিনি একটি সংবিধান রচনা করেছিলেন। যেখানে এদেশের যুবকদের অধিকার ও কর্মসংস্থানের কথা বলা হয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘জাতির পিতার আহ্বানে সাড়া দিয়ে ছাত্র ও যুব সমাজই অস্ত্র তুলে নিয়েছিল, যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করেছে। আমাদের প্রতিটি অর্জনের পেছনে যুবকদের অনেক অবদান রয়েছে।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘৭৫- পরবর্তী সংবিধান লঙ্ঘন করে যারা ক্ষমতায় এসেছিল, তারা আমাদের ছাত্র ও যুবকদের বিভ্রান্তের পথে নিয়েছিল। তাদের হাতে অস্ত্র ও অর্থ তুলে দিয়ে অবৈধ ক্ষমতা দখলের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে। অপরদিকে, সেই সময়ে ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও মুক্তিযোদ্ধাদের নির্মমভাবে হত্যা করা হয়।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘৭৫-৯৬ পর্যন্ত বাংলাদেশ এক কদমও এগোতে পারেনি। অথচ আমাদের ভাল সম্ভাবনা ছিল। বাংলাদেশ এমন একটি দেশ, যেখানে সবচেয়ে বেশি তরুণ প্রজন্ম রয়েছে, যারা সুযোগ পেলে দেশকে ভাল কিছু দিতে পারে, কাজ করতে পারে। জাতির পিতা সেদিকে লক্ষ্যই রেখে যুবকদের প্রশিক্ষিত করতে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছিলেন। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার  প্রথম প্রতিবাদ করেছিলেন এই  যুবকরাই।’

বাংলাদেশ যাতে বিশ্বের বুকে একটি স্বাধীন দেশ হিসেবে মর্যাদা নিয়ে চলতে পারে। সেই সাথে আমাদের দেশ যেন আত্মনির্ভরশীল ও আত্মপর্যাদাশীল হতে পারে সে জন্য জাতির পিতার আদর্শ সামনে নিয়ে আমাদের যুব সমাজ গড়ে তুলতে হবে বলেও জানান প্রধানমন্ত্রী।

এ সময় দেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউ রোধে বিদেশ ফেরতদের আবারও কোয়ারেন্টিনে রাখার নির্দেশ দেন শেখ হাসিনা। মাদক, সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে সরকার কঠোর অবস্থানের কথা জানিয়ে যুব সমাজকে এসব থেকে বিরত থাকার আহ্বানও জানান প্রধানমন্ত্রী।

যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেলের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি আবদুল্লাহ আল ইসলাম জ্যাকব, যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সচিব আকতার হোসেন, যুব উন্নয়ন অধিদফতরের মহাপরিচালক আকতারুজ্জামান খান কবির। এছাড়া সফল যুব উদ্যোক্তা হিসেবে দুজন মতবিনিময় করেন।

অনুষ্ঠানে প্রশিক্ষিত সফল যুবক ও যুব মহিলাদের মধ্য থেকে আত্মকর্মসংস্থান প্রকল্প স্থাপনে দৃষ্টান্তমূলক অবদান রাখার স্বীকৃতি হিসেবে সফল আত্মকর্মী যুব ও যুব সংগঠককে  জাতীয় যুব পুরস্কার দেওয়া হয়।