যমুনায় দ্বিতীয় রেলসেতুর কাজ শুরু হচ্ছে, উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী

admin
অক্টোবর ২৯, ২০২০ ৫:৩৮ পূর্বাহ্ণ
Link Copied!

 

 

যমুনা নদীর ওপরে নির্মিত বঙ্গবন্ধু সেতুর পাশেই ‘বঙ্গবন্ধু ডুয়েল গেজ রেল সেতুর’ নির্মাণকাজ শিগগিরই শুরু হচ্ছে। আগামী ২৯ নভেম্বর ভার্চুয়াল পদ্ধতিতে সেতুর ভিত্তিপ্রস্তর উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন এ তথ্য জানিয়েছেন।

ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের স্থান নির্বাচনের জন্য রেলমন্ত্রী আজ বুধবার (২৮ অক্টোবর) সিরাজগঞ্জের সয়দাবাদ আসেন। বঙ্গবন্ধু সেতুর পশ্চিম পাড়ের সয়দাবাদ স্টেশন ও সেতু গোল চত্বর পরিদর্শন শেষে স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মীদের প্রশ্নের জবাবে তিনি উদ্বোধনের বিষয়টি জানান।

মন্ত্রী বলেন, ‘জাপানের জাইকার অর্থায়নে ২০২৫ সালের মধ্যে রেল সেতুটির বাস্তবায়ন সম্ভব হবে। রেল সেতুর ওপর দিয়ে কম করে হলেও ১২০ কিলোমিটার গতিতে ট্রেন চলাচল করতে পারবে। সেতুর ওপর দিয়ে দ্রুতগতিতে রেল যোগাযোগ বাস্তবায়িত হলে দেশের পূর্বাঞ্চলের সঙ্গে পশ্চিমাঞ্চলের যোগাযোগ আরও সহজ হবে এবং আর্থ-সামাজিক অবস্থার আরও উন্নয়ন ঘটবে।’

তিনি জানান, বর্তমানে যমুনা নদীর ওপর যে সেতুটি রয়েছে সেটি সিঙ্গেল লাইনের। তাতে ১০ থেকে ১২ কিলোমিটারের বেশি গতিতে ট্রেন চালানো যায় না। ফলে অনেক সময় নষ্ট হয়। ট্রেনের শিডিউল বিপর্যয় হয়। নতুন রেল সেতুতে ডাবল লাইন রাখা হয়েছে। একসঙ্গে দুই দিক থেকে ট্রেন চলাচল করতে পারবে।

এ সময় স্থানীয় এমপি প্রফেসর ডা. হাবিবে মিল্লাত মুন্না, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান সাবেক মন্ত্রী আব্দুল লতিফ বিশ্বাস, জেলা প্রশাসক ড. ফারুক আহাম্মদ, পুলিশ সুপার মো. হাসিবুল আলমসহ প্রশাসনের পদস্থ কর্মকর্তা ও দলীয় নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

প্রকল্প সূত্র জানিয়েছে, যমুনার ওপর নির্মিত বঙ্গবন্ধু বহুমুখী সেতুর কয়েকশ’ গজ উত্তরে নতুন সেতুটি নির্মাণ হবে। ২০২৩ সাল পর্যন্ত প্রকল্পের মেয়াদ ধরা হলেও সংশোধিত প্রকল্পে সময়সীমা দুই বছর বাড়িয়ে ২০২৫ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত করা হয়েছে। একইসঙ্গে প্রকল্প ব্যয় ৯ হাজার ৭৩৪ কোটি টাকা থেকে বাড়িয়ে ১৬ হাজার ৭৮১ কোটি টাকা করা হয়েছে। সেতুর দৈর্ঘ্য ৪ দশমিক ৮ কিলোমিটার। যদিও ডাবল লাইন হওয়ায় সেতুটির দৈর্ঘ্য ৯ দশমিক ৬০ কিলোমিটার বিবেচনা করছে রেলওয়ে।

জানা গেছে, বর্তমানে বঙ্গবন্ধু সেতু দিয়ে দিনে ৪৪টি ট্রেন চলাচল করে। সিঙ্গেল লাইন হওয়ায় সেতু পার হতে ট্রাফিক সিগন্যালে নষ্ট হয় বেশ খানিকটা সময়। ওজন সীমাবদ্ধতার কারণে ভারী পণ্যবাহী ট্রেন চলতে পারে না। এ সেতুতে ট্রেনও পূর্ণ গতিতে চলতে পারে না। ঈদের সময় শিডিউল বিপর্যয়ে পড়ে ট্রেন। নতুন ডাবল লাইন সেতুটি নির্মাণ সম্পন্ন হলে এই সমস্যা থেকে মুক্তি মিলবে বলে আশা সংশ্লিষ্টদের। রাজধানীর সঙ্গে পশ্চিমাঞ্চলের রেল যোগাযোগ ব্যবস্থারও উন্নয়ন হবে অনেক। সেতুটি নির্মাণ হলে বঙ্গবন্ধু সেতুর রেললাইন তুলে নেওয়া হবে।

এ ব্যাপারে প্রকল্প পরিচালক প্রকৌশলী কামরুল আহসান জানান, ‘মূল সেতুটি দুটি প্যাকেজের আওতায় বানানো হবে। নির্মাণ ব্যয়ের ৭২ শতাংশ ঋণ সহায়তা দেবে জাপান (জাইকা)। সেতুটির পূর্ব অংশ নির্মাণ করবে ওবায়শি করপোরেশন, টিওএ করপোরেশন এবং জেএফই। এই অংশের জন্য ব্যয় হবে ছয় হাজার ৮০১ কোটি টাকা। আইএইচআই এবং এসএমসিসির যৌথ উদ্যোগে নির্মিত হবে পশ্চিম অংশ। এই অংশে ব্যয় হবে ৬ হাজার ১৪৮ কোটি টাকা। ইতোমধ্যে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে সাইট বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে। সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের প্রকৌশলীরা আসতেও শুরু করেছেন।’