‘মুজিববর্ষের আহ্বান, যুব কর্মসংস্থান’ প্রতিপাদ্য নিয়ে উদযাপিত হতে যাচ্ছে বঙ্গবন্ধু জাতীয় যুব দিবস

admin
অক্টোবর ২৯, ২০২০ ৬:৪২ অপরাহ্ণ
Link Copied!

যু্ব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী মো. জাহিদ আহসান রাসেল সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখছেন।


যু্ব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী মো. জাহিদ আহসান রাসেল বলেছেন, স্বাধীনতার মহান স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশত বার্ষিকীতে এবার ১ নভেম্বর জাতীয় যুব দিবসের নামকরণ করা হয়েছে ‘বঙ্গবন্ধু জাতীয় যুব দিবস, ২০২০’। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ার লক্ষ্যে যুবসমাজের সৃজনশীলতা, আত্মপ্রত্যয় ও তাদের কর্মস্পৃহার প্রতি আস্থা রেখে মুজিববর্ষে বঙ্গবন্ধু জাতীয় যুব দিবসের প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হয়েছে—মুজিববর্ষের আহ্বান, যুব কর্মসংস্থান।

তিনি বলেছেন, দেশের জনসংখ্যার এক তৃতীয়াংশ হচ্ছে যুবসমাজ। যুবসমাজের কল্যাণে বাস্তবমুখী কর্মসূচি গ্রহণ ও বাস্তবায়নে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে থাকা সরকারের অঙ্গীকার রয়েছে।

বৃহস্পতিবার যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সম্মেলনকক্ষে বঙ্গবন্ধু জাতীয় যুব দিবস উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

যু্ব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী বলেন, এবারের নির্বাচনী ইশতেহারে অন্যতম প্রতিপাদ্য ছিল তারুণ্যের শক্তি, বাংলাদেশের সমৃদ্ধি। তাই যুবসমাজের সার্বিক কল্যাণ নিশ্চিতকল্পে বেকার যুবদের উদ্বুদ্ধকরণ, প্রশিক্ষণ প্রদান ও প্রশিক্ষণোত্তর আত্মকর্মসংস্থান প্রকল্প গ্রহণের মাধ্যমে স্বাবলম্বী করে তোলা, যুব ঋণ প্রদান, দারিদ্র্য বিমোচন ইত্যাদি কর্মসূচি নেয়া হয়েছে।

আগামী ১ নভেম্বর দেশব্যাপি বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্য দিয়ে ‘বঙ্গবন্ধু জাতীয় যুব দিবস-২০২০’ উদযাপিত হবে। করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) পরিস্থিতিতে এবারের যুব দিবসের সব কর্মসূচি স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে সীমিত পরিসরে আয়োজনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

দিবসটি উপলক্ষ্যে গৃহীত বিভিন্ন কর্মসূচির বর্ণনা দিয়ে প্রতিমন্ত্রী মো. জাহিদ আহসান রাসেল বলেন, আগামী ১ নভেম্বর সকাল ১০ টায় গণভবন এবং ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তন, ঢাকায় ‘বঙ্গবন্ধু জাতীয় যুব দিবস-২০২০’ -এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।

অনুষ্ঠানে প্রশিক্ষিত যুবক ও যুব মহিলাদের মধ্য থেকে আত্মকর্মসংস্থান প্রকল্প স্থাপনে দৃষ্টান্তমূলক অবদান রাখার স্বীকৃতি হিসেবে ২১ জন সফল আত্মকর্মী যুব ও পাঁচজন সফল যুব সংগঠককে এ বছর জাতীয় যুব পুরস্কার দেয়া হবে। বঙ্গবন্ধু জাতীয় যুব দিবস উপলক্ষ্যে স্মারক ডাকটিকেট ও খাম উন্মোচন করা হবে। দেশের প্রতিটি জেলা ও উপজেলাতে অনুরূপ কর্মসূচি বাস্তবায়িত হবে।

তিনি আরো বলেন, ২০২১ সালের মধ্যে ডিজিটাল বাংলাদেশ, ২০৩০ সালের মধ্যে জাতিসংঘ ঘোষিত এসডিজি, সর্বোপরি ২০৪১ সালের মধ্যে সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সম্ভাবনাময় যুবসমাজকে কাজে লাগানো ছাড়া আর কোনো বিকল্প নেই। সে লক্ষ্যে অধিদফতরের কার্যক্রম তৃণমূল পর্যায় পর্যন্ত আরো বিস্তৃত করে দেশে ও বিদেশে যুবদের অধিকহারে কর্মসংস্থান ও আত্মকর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করতে বর্তমান যুববান্ধব সরকার বদ্ধপরিকর।

এ লক্ষ্যে বর্তমান সরকারের সময়ে (১ জানুয়ারি ২০০৯ থেকে ৩০ জুন ২০২০ পর্যন্ত) যুব উন্নয়ন অধিদফতর থেকে ৩০ লাখ ২৯ হাজার ৬২৯ জনকে বিভিন্ন ট্রেডে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে। এ পর্যন্ত সাত লাখ ২৮ হাজার ৭০৫ জন আত্মকর্মসংস্থানের মাধ্যমে স্বাবলম্বী হয়েছে। ৩৭টি জেলার ১২৮টি উপজেলায় ন্যাশনাল সার্ভিস কর্মসূচির আওতায় মোট দুই লাখ ৩০ হাজার ৪৬৪ জনকে প্রশিক্ষণ এবং দুই লাখ ২৮ হাজার ১২৯ জনের অস্থায়ী কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা হয়েছে।

২০২০-২১ অর্থবছরে ১০ জেলার ১০ উপজেলায় অষ্টম পর্বের কার্যক্রম শুরু হবে।

মুজিববর্ষ উপলক্ষে দুই লাখ প্রশিক্ষিত যুবকের কর্মসংস্থানের লক্ষ্যে ঋণ বিতরণের পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, যুব উন্নয়ন অধিদফতর ও কর্মসংস্থান ব্যাংকের মধ্যে স্বাক্ষরিত সমঝোতা স্মারকের আওতায় কর্মসংস্থান ব্যাংক নীতিমালা অনুযায়ী যুব উন্নয়ন অধিদফতরের সরবরাহ করা প্রশিক্ষিত যুবকদের তালিকা অনুযায়ী প্রকল্পের গ্রহণযোগ্যতা সাপেক্ষে উদ্যোক্তাদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ঋণ দেয়া হবে। এ ঋণের পরিমাণ হবে ২০ হাজার থেকে পাঁচ লাখ টাকা পর্যন্ত। ঋণ পরিশোধের মেয়াদ সর্বোচ্চ পাঁচ বছর।

যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী বলেন, করোনা সংক্রমণের প্রভাবে কিংবা সরকারের ঘরে ফেরা কর্মসূচির আওতায় যারা গ্রামে ফিরে গিয়ে কর্মহীন হয়ে পড়েছেন বা পড়বেন, তাদের জন্য গ্রামীণ কর্মসংস্থান বা আত্মকর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে যুব উন্নয়ন অধিদফতরের প্রস্তাবিত ‘করোনাত্তোর পরিস্থিতিতে যুবকদের জন্য গ্রামে কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও দারিদ্র্য হ্রাসকরণ প্রকল্প’ অগ্রণী ভূমিকা রাখবে বলে আশা করা যায়। এ প্রকল্পের আওতায় পাঁচ বছরে ১২ লাখ পাঁচ হাজার জনকে প্রশিক্ষণ প্রদান এবং ৫০ শতাংশকে এক লাখ টাকা হারে ঋণ দেয়া হবে। এ ঋণের সার্ভিস চার্জ হবে ৪ শতাংশ।

এসময় সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন যুব ও ক্রীড়া সচিব মো. আখতার হোসেন, যুব উন্নয়ন অধিদফতরের মহাপরিচালক আখতারুজ জামান খান কবির ও যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।