যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী মোঃ জাহিদ আহসান রাসেল এমপি বলেছেন, বাংলাদেশের অকৃত্রিম বন্ধু ছিলেন ভারতের সদ্য প্রয়াত সাবেক রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জি। বাংলাদেশ ও এদেশের মানুষকে হৃদয় দিয়ে ভালোবাসতেন তিনি। সত্যিকার অর্থে তিনি তার স্বাক্ষরও রেখে গেছেন। বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন প্রণব মুখার্জি। তখন তিনি ছিলেন রাজ্যসভার একজন তরুণ সদস্য। এই বাঙালি তরুণ রাজনীতিবিদ মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে প্রবাসী বাংলাদেশ সরকারের প্রতি ভারতের স্বীকৃতি আদায়ে তৎপর হয়ে উঠেন। বাংলাদেশের পক্ষে জনমত গঠনে তিনি শুধু ভারতেই নয়, বিদেশেও অনন্য ভূমিকা রাখেন।
মুক্তির মহানায়ক ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে দীর্ঘ স্বাধীনতা সংগ্রাম এবং মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে দেশের স্বাধীনতা অর্জনের ক্ষেত্রে প্রণব মুখার্জির অনুপ্রেরণা, সহমর্মিতা এবং সার্বিক সহযোগিতা বাঙালি জাতি কৃতজ্ঞচিত্তে স্মরণ করবে। আজ বুধবার ( ২ সেপ্টেম্বর) ভারতের সদ্য প্রয়াত সাবেক রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জির স্মরণে যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর কর্তৃক ভার্চুয়াল প্লাটফর্মে আয়োজিত শোকসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশ ও ভারতের ভ্রাতৃপ্রতিম সম্পর্ক, সম্প্রীতি ও বন্ধুত্বের সুদৃঢ় বন্ধনে প্রণব মুখার্জির অবদান অবিস্মরণীয়। এ দুই দেশের মধ্যে বিরাজমান সমস্যা সমাধানে এবং সম্পর্কের অটুট বন্ধনকে অধিকতর শক্তিময় করার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অভিভাবক হিসেবে তার ভূমিকা ছিল অপরিহার্য।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, প্রণব মুখার্জি বাংলাদেশের শরণার্থীদের জন্য ছাত্র-শিক্ষক নিয়ে কলকাতা থেকে টাকা সংগ্রহ করতেন। সেখানকার ব্যবসায়ীদের কাছে থেকে সাহায্য নিয়ে শরণার্থীদের জন্য বিভিন্ন ক্যাম্পে পাঠাতেন। তিনি বাংলাদেশকে প্রবাসী সরকারকে ভারতের সমর্থন দানের জন্য ১৯৭১ সালের ১৫ জুন ভারতের রাজ্যসভায় প্রস্তাব উত্থাপন করেছিলেন । মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সাথে পারিবারিক হৃদ্যতার প্রসঙ্গ টেনে প্রতিমন্ত্রী রাসেল বলেন, বঙ্গবন্ধু পরিবারের সঙ্গেও ব্যক্তিগতভাবে প্রণব মুখার্জির ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল। ১৯৭৫ এর ১৫ আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার পর ভারতে নির্বাসন কাটান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার ছোট বোন শেখ রেহানা। এই সময় প্রণব মুখার্জি তাদের সার্বক্ষণিক খোঁজ-খবর রাখতেন ও সহযোগিতা করেছেন। বাংলাদেশের জনগণের প্রতি তার অপরিসীম ভালোবাসা ছিল উল্লেখ করে তিনি বলেন, ২০১২ সালে ভারতের প্রথম বাঙালি রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হওয়ার পর শপথ নিয়ে তার প্রথম বিদেশ সফর ছিলো বাংলাদেশ। আবার রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব ছেড়ে দেওয়ার পরও তিনি প্রথম বিদেশ সফর করেন বাংলাদেশে।
যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর মহাপরিচালক আখতারুজ জামান খান কবিরের সভাপতিত্বে শোকসভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে প্রদান করেন যুব ও ক্রীড়া সচিব মোঃ আখতার হোসেন। এ সময়ে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।