ব্যাংক খাতে রেমিট্যান্স রিজার্ভের রেকর্ড

admin
ডিসেম্বর ৩০, ২০২০ ৪:৪৭ পূর্বাহ্ণ
Link Copied!

করোনা সংক্রমণে বিপর্যস্ত সারা বিশে^^র অর্থনৈতিক কাঠামো। বাংলাদেশে সংক্রমণের তীব্রতা না থাকলেও অর্থনীতিতে ভয়াবহ চাপ পড়েছে। অর্থনীতির সঙ্কটের প্রভাব পড়েছে ব্যাংক খাতে। করোনা সংক্রমণের শুরুতে সাধারণ ছুটিতে সবকিছু বন্ধ থাকলেও ব্যাংকগুলো সীমিত পরিসরে খোলা ছিল। কিন্তু খোলা থাকলেও স্বাভাবিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করেনি ব্যাংকগুলো। বিশেষ করে ঋণ বিতরণে ব্যাংকগুলো নিজেদের গুটিয়ে রেখেছে। আর সরকার ঘোষিত প্রণোদনা প্যাকেজ বাস্তবায়নে ছিল গড়িমসি ও নিয়ন্ত্রণহীনতা। যেসব গ্রাহক আগেই হাজার হাজার কোটি টাকা ঋণ নিয়ে ফেরত দেয়নি তাদের বিপুল পরিমাণে প্রণোদনা দেওয়া হয়েছে। অথচ বঞ্চিত হয়েছে এসএমই খাতের উদ্যোক্তা ও কৃষকরা। ছাড়ের কারণে ব্যাংকগুলোর অবস্থা খাতা-কলমে ভালো দেখা গেলেও প্রকৃত অবস্থা খারাপ হয়েছে। সঙ্কটকালে রেমিট্যান্সের উচ্চবৃদ্ধি ব্যাংকগুলোর তারল্য বাড়িয়েছে। বছরজুড়ে করোনার কারণে নীতিগত সুবিধা উপভোগ করছে ব্যাংক খাত। স্বাভাবিক নিয়মে ফিরে এলে ব্যাংকগুলো হঠাৎ বিপাকে পড়ার আশঙ্কা করছেন বিশ্লেষকরা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর খোন্দকার ইব্রাাহিম খালেদ সময়ের আলোকে বলেন, আগামী দুই-এক বছরে ব্যাংকের অবস্থা অত্যন্ত নাজুক হবে। ছাড় দেওয়ার কারণে যাদের খেলাপি হিসেবে ঘোষণা করা হয়নি তাদের বিষয়টি তো আর বছরের পর বছর আটকিয়ে রাখা যাবে না। একসময় এসব ঋণ খেলাপি ঋণে চলে আসবে। তখন খেলাপি ঋণগুলো ব্যাংকের জন্য বোঝা হয়ে দাঁড়াবে। তিনি বলেন, বড় ব্যবসায়ীদের কথায় দেশের অর্থনীতি চলছে। তাদের হাতে বন্দি হয়ে পড়েছে সরকার। এসব বৃত্ত থেকে আমাদের বের হয়ে আসা উচিত। বড় ব্যবসায়ীদের দিকে না তাকিয়ে ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের পাশে দাঁড়ানো উচিত। তবে ঘোষিত প্রণোদনা প্যাকেজে শুধু বড় ব্যাবসায়ীরা উপকৃত হয়েছে তা নয়।
বছরজুড়ে রেমিট্যান্সে রেকর্ড : করোনা সঙ্কটের মধ্যেও প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স দেশের ইতিহাসে বারবার রেকর্ড ভেঙেছে। সঙ্কটের মুহূর্তে প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্সই ছিল দেশের অর্থনীতির প্রধান চালিকাশক্তি। মহামারির মধ্যে বিগত মাসগুলোতে পাঠানো রেমিট্যান্স অতীতের সব রেকর্ড ভেঙেছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদনে প্রকাশিত হিসাব অনুযায়ী, ৩০ জুন শেষ হওয়া অর্থবছরে মোট ১ হাজার ৮২০ কোটি ৩০ লাখ বা ১৮ দশমিক ২০ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। এটি ২০১৮-১৯ অর্থবছরের চেয়ে ১০ দশমিক ৮৫ শতাংশ বেশি। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে মোট ১৬ দশমিক ৪২ বিলিয়ন রেমিট্যান্স এসেছিল। ২০২০-২১ অর্থবছরের প্রথম চার মাসে (জুলাই-অক্টোবর) রেমিট্যান্স এসেছে ৮৮২ কোটি ৫০ লাখ ডলার। গত অর্থবছরের একই সময় রেমিট্যান্স এসেছিল ৬১৬ কোটি ১০ লাখ ডলার। সেই হিসাবে চলতি অর্থবছরের প্রথম চার মাসে প্রবাসী আয়ে প্রবৃদ্ধি দাঁড়িয়েছে ৪৩ দশমিক ২৪ শতাংশ। মাস হিসাবে তুলনা করলে দেখা যায়, নতুন অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে প্রায় ২৬০ কোটি ডলারের রেমিট্যান্স এসেছে। বাংলাদেশি টাকায় যার পরিমাণ ২২ হাজার ৯৫ কোটি টাকা। কোনো একক মাসে এত বেশি প্রবাসী আয় আগে আসেনি। এর আগে একক মাসে সর্বোচ্চ প্রবাসী আয় এসেছিল ঠিক আগের মাসেই, জুনে রেমিট্যান্স এসেছিল ১৮৩ কোটি ডলার (প্রায় ১৫ হাজার ৫৫৫ কোটি টাকা)। সেই হিসাবে এক মাসেই প্রবাসী আয় বেশি এসেছে প্রায় সাড়ে ছয় হাজার কোটি টাকা। সেপ্টেম্বরে রেমিট্যান্স এসেছে ২১৫ কোটি ডলার। বাংলাদেশি মুদ্রায় যার পরিমাণ ১৮ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়েছে যা আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে ৬৪ কোটি ৪০ লাখ ডলার বা ৪৫ দশমিক ৬৩ শতাংশ বেশি। সেপ্টেম্বরে ১৪৭ কোটি ৬৯ লাখ ডলারের রেমিট্যান্স পাঠিয়েছিলেন প্রবাসীরা। অক্টোবরে রেমিট্যান্স এসেছিল ২১১ কোটি ডলার। নভেম্বরে রেমিট্যান্স ২০৭ কোটি ডলার যা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ৩৩ শতাংশ বেশি। সব মিলিয়ে গেল বছরের জুলাই-নভেম্বর (পাঁচ মাসে) এসেছে ১ হাজার ৯০ কোটি ৪৪ লাখ (১০ দশমিক ৯০ বিলিয়ন) ডলার। এই অঙ্ক গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ২ দশমিক ৮ বিলিয়ন ডলার বা ৪১ দশমিক ৩২ শতাংশ বেশি। বাংলাদেশের ইতিহাসে পাঁচ মাসে এত রেমিট্যান্স আগে কখনও আসেনি।
নতুন উচ্চতায় রিজার্ভ : প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্সের ওপর ভর করেই রিজার্ভে একের পর এক রেকর্ড করে চলছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ফের রেকর্ড ভেঙে ৪২ বিলিয়ন ডলার অতিক্রম করেছে। দেশের ইতিহাসে এটি সর্বোচ্চ রিজার্ভ। বর্তমানের রিজার্ভ দিয়ে প্রতি মাসে চার বিলিয়ন ডলার হিসেবে প্রায় সাড়ে দশ মাসের বেশি সময়ের আমদানি ব্যয় মেটানো সম্ভব। বর্তমান বাংলাদেশের রিজার্ভের পরিমাণ পাকিস্তানের তিনগুণ। এর আগে অক্টোবরে রিজার্ভ রেকর্ড করে হয়েছিল ৪১ বিলিয়ন ডলার। একই মাসেই বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৪০ বিলিয়ন ডলারের মাইলফলক অতিক্রম করেছিল । গত ১ সেপ্টেম্বর দেশের রিজার্ভ ৩৯ বিলিয়ন ডলার অতিক্রম করে । সেপ্টেম্বরের শুরুতে তা আরও বেড়ে ৩৯ দশমিক ৫০ বিলিয়ন ডলারে ওঠে। ৭ সেপ্টেম্বর এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নের (আকু) জুলাই-আগস্ট মাসের ১ বিলিয়ন ডলারের মতো আমদানি বিল পরিশোধের পর রিজার্ভ ৩৯ বিলিয়ন ডলারের নিচে নেমে আসে। রেমিট্যান্সের উল্লম্ফনে ২০ সেপ্টেম্বর সেই রিজার্ভ আবার ৩৯ বিলিয়ন ডলারের ওপরে ওঠে। অপরদিকে গত কয়েক বছর ধরেই রিজার্ভ ধারাবাহিকভাবে বাড়ছে। দশ বছর আগে ২০০৯-১০ অর্থবছরের জুন শেষে রিজার্ভের পরিমাণ ছিল ১০ দশমিক ৭৫ বিলিয়ন ডলার। ২০১৩-১৪ অর্থবছর শেষে সেই রিজার্ভ ২০ বিলিয়ন ডলার ছাড়ায়। ৩০ বিলিয়ন ডলার অতিক্রম করে ২০১৯ সালের অক্টোবরে। ২০২০ সালের ৩০ জুন সেই রিজার্ভ বেড়ে ৩৬ বিলিয়ন ডলারে ওঠে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা জানান, প্রবাসীরা দেশে প্রচুর পরিমাণে রেমিট্যান্স পাঠাচ্ছেন। একই সঙ্গে বিদেশি ঋণ ও অনুদান আসছে। আমদানি ব্যয় হ্রাস পাওয়ায় দেশের রিজার্ভের পরিমাণ বেড়েছে। তবে রফতানি আয় বাড়ানো সম্ভব না হলে রিজার্ভের প্রবৃদ্ধি ধরে রাখা কঠিন হবে।
সিঙ্গেল ডিজিটে সুদহার বাস্তবায়ন : অনেক আলোচনার মধ্যে ব্যাংকঋণে সুদহার সিঙ্গেল ডিজিটে বাস্তবায়ন হওয়ার খবরও বিদায়ি বছরের আলোচিত খবর। করোনা সঙ্কট মোকাবিলায় সরকার যেসব পরিকল্পনা নিয়েছে তার মধ্যে এক অঙ্কে সুদহার ছিল অন্যতম সহায়ক সংযোজন। সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী ১ এপ্রিল থেকে ক্রেডিট কার্ড ছাড়া ব্যাংকঋণের সুদহার ৯ শতাংশ নির্ধারণ করে দেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। তবে মুক্তবাজার অর্থনীতিতে যেখানে সবকিছু বাজারের ওপর নির্ভর করে সেখানে সুদের হারও বাজারের ওপর নির্ভর করার বিষয়ে তাগিদ দিয়েছিলেন বিশ্লেষকরা। আবার কেউ কেউ বলেছেন, কোভিড মুহূর্তে ব্যবসায়ীরা এ হারে বিনিয়োগ বাড়ানোর মাধ্যমে করোনার প্রথম ঢেউ সহজেই মোকাবিলা করতে সক্ষম হয়েছে।
ব্যাংক ব্যবসায় ভাটা : করোনা সঙ্কটে ব্যাংক খাত ছিল মুনাফাবিমুখ। প্রতিবছর লাভের আশা করলেও সঙ্কটকালে লাভকে প্রাধান্য না দিয়ে অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে গ্রাহকদের পাশে দাঁড়িয়ে টিকে থাকার লড়াই করেছে ব্যাংকগুলো। বিদায়ি বছরে অর্থনীতির ক্ষতি মোকাবিলায় ঋণ আদায়ে নিষেধাজ্ঞা, এক অঙ্কে সুদহার নির্দেশনাসহ কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নানা নির্দেশনা জারিতে বিদায়ি বছরটা ছিল ব্যাংক ব্যবসার ভাটার বছর। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদনে, এপ্রিল থেকে জুন প্রান্তিকে ব্যাংকগুলো খেলাপি ঋণের বিপরীতে আদায় করেছে ৯৯৬ কোটি টাকা যা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় প্রায় ৫ হাজার কোটি টাকা কম। সে সময় আদায়ের পরিমাণ ছিল ৫ হাজার ৯১২ কোটি টাকা। একই সময়ে নিয়মিত ঋণের বিপরীতে আদায় হয়েছে ১ লাখ ৮ হাজার ২৮৮ কোটি টাকা। আগের বছরের একই সময়ে আদায় থেকে কম হয়েছে ৫৩ হাজার ৫৮৮ কোটি টাকা। অপরদিকে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত ৩০ ব্যাংকের আর্থিক প্রতিবেদনে দেখা যায়, গত জানুয়ারি থেকে জুন সময়ে আমানতকারীদের ঋণের বিপরীতে সুদ বাবদ আয় করেছে ৩১ হাজার ৪২৪ কোটি টাকা, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৩৫১ কোটি টাকা বা ১ দশমিক ১১ শতাংশ কম। এবিবির সাবেক চেয়ারম্যান ও মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ মাহবুবুর রহমান সময়ের আলোকে বলেন, মহামারির কারণে দেশের ব্যবসা পরিস্থিতি ভালো নেই। ফলে অনেকেই ঠিকমতো ঋণ পরিশোধ করতে পারবে না। তার ওপর এক অঙ্কের সুদের হার বাস্তবায়ন করতে গিয়ে ব্যাংকগুলোর নিট মুনাফায় ধাক্কা লেগেছে। ইতোমধ্যেই অনেক ব্যাংকেরই ঋণ দেওয়া ও টাকা ফেরত আসার পরিমাণ কমে গেছে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই ব্যাংকের মুনাফায় ধস নেমেছে।
বিশেষ ছাড়ে আলোচনায় খেলাপি ঋণ : দেশের ব্যাংক খাতের খেলাপি ঋণ এখন বিষফোঁড়া। করোনা সঙ্কটে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের নানা সুবিধা দেওয়ায় ব্যাংকিং খাতে খেলাপি ঋণের উল্টোচিত্র দেখাল ব্যাংক। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সর্বশেষ প্রতিবেদন অনুযায়ী, বর্তমানে দেশের ব্যাংকিং খাতে খেলাপি ঋণের পরিমাণ (জুলাই-সেপ্টেম্বর পর্যন্ত) ৯৪ হাজার ৪৪০ কোটি টাকা যা মোট বিতরণের ৮ দশমিক ৮৮ শতাংশ। জুন প্রান্তিকে ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ৯৬ হাজার কোটি টাকা, যা মোট বিতরণের ৯ শতাংশ। অপরদিকে মার্চ শেষে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ৯২ হাজার ৫১০ কোটি টাকা। প্রকৃতভাবে দেশের খেলাপি ঋণের পরিমাণ অনেক বেশি। করোনায় অর্থনীতির ক্ষতি বিবেচনায় তিন দফায় জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত কাউকে খেলাপি না করার নির্দেশ দেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। নির্দেশনা প্রত্যাহার করলে খেলাপি ঋণের পরিমাণ আবার বাড়বে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
কর্মী ছাঁটাই আতঙ্ক : করোনায় আর্থিক দুর্যোগে ব্যাংক খাতে কর্মী ছাঁটাই আতঙ্কও ছিল বিদায়ি বছরের সবচেয়ে অমানবিক খবর। করোনা দুর্যোগে পুরনো ধ্যান-ধারণা নিয়ে বহু কর্মী ছাঁটাই করেছে বেসরকারি ৪ ব্যাংক। যদিও পরে বাংলাদেশ ব্যাংকের শরণাপন্ন হয়ে কেউ কেউ চাকরি ফিরে পেয়েছেন। ছাঁটাইয়ের পাশাপাশি বেতন-ভাতাদিসহ নানা সুযোগ-সুবিধা কমানোর ঘোষণাও দেয় অনেক ব্যাংক। এসব কর্মকাণ্ডে বিদায়ি বছরটি ব্যাংক কর্মকর্তাদেরও হতাশার বছর ছিল।
করোনায় ব্যাংক কর্মকর্তাদের মৃত্যু : করোনা মহামারির শুরুর দিকে সরকারি সব অফিস-আদালতে যখন ছুটি ঘোষণা করা হয়, তখন ডাক্তার, স্বাস্থ্যসেবাকর্র্মী, পুলিশ বাহিনী, সেনাবাহিনী ও অন্যান্য সম্মুখযোদ্ধাদের ন্যায় ব্যাংক কর্র্মীদের কার্যক্রমও ছিল চোখে পড়ার মতো। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ব্যাংকিং সেবা দিয়ে কত ব্যাংকার আক্রান্ত হয়েছেন তার পূর্ণাঙ্গ হিসাব না থাকলেও বিভিন্ন গণমাধ্যম সূত্রে দেখা যায়, কোভিড-১৯-এ এ পর্যন্ত প্রায় ৪০ জন ব্যাংক কর্মকর্তা মারা গেছেন এবং আক্রান্ত হয়েছেন প্রায় ২ হাজার ৫০০ জন।
গভর্নরের মেয়াদ বৃদ্ধি : বাংলাদেশ ব্যাংকর আদেশ অনুযায়ী, ৬৫ বছরের বেশি বয়স হলে কেউ গভর্নর থাকতে পারবেন না । বর্তমান গভর্নরকে নিয়োগ দিতে সংশোধন করা হয়েছে ‘বাংলাদেশ ব্যাংক অর্ডার’, যা দেশের ইতিহাসে প্রথম ঘটনা। অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের পক্ষে পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান ১৯৭২ সালের ‘দ্য বাংলাদেশ ব্যাংক অর্ডার’ সংশোধন করতে ‘বাংলাদেশ ব্যাংক অর্ডার (অ্যামেন্ডমেন্ট)-২০২০’ সংসদে উত্থাপন করেন। পরে বিদায়ি বছরের ৯ জুলাই জাতীয় সংসদে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের চাকরির বয়সসীমা বাড়িয়ে বিলটি পাস হয়। এখন থেকে যারাই গভর্নর হিসেবে থাকবেন সংসদে বিল পাস না হওয়া পর্যন্ত তারা ৬৭ বছর পর্যন্ত চাকরি করতে পারবেন।
আরও একটি ব্যাংকের অনুমোদন : করেনাকালে সিটিজেন ব্যাংক লিমিটেড নামে আরও একটি বেসরকারি ব্যাংকের অনুমোদন দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। গত ৭ ডিসেম্বর বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের সভায় ৫০০ কোটি টাকার পরিশোধিত মূলধনসহ প্রয়োজনীয় সব শর্ত পূরণসাপেক্ষে ব্যাংকটির কার্যক্রম পরিচালনা করার চূড়ান্ত অনুমতি দেওয়া হয়েছে। নতুন এ ব্যাংক নিয়ে দেশে মোট ব্যাংকের সংখ্যা দাঁড়াল ৬১টি।