বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের বহরে একের পর এক যুক্ত হচ্ছে নতুন নতুন মডেলের এয়ারক্র্যাফট। এরই মধ্যে আমেরিকা থেকে কেনা অত্যাধুনিক মডেলের বোয়িং-৭৭৭-৮০০ ইআর, ৭৮৭ দুই মডেলের ড্রিমলাইনার ও ৭৩৭-৩০০-ইআর মডেলের একাধিক উড়োজাহাজ যুক্ত হয়েছে। এ ছাড়াও বহরে রয়েছে আরো চারটি লিজের উড়োজাহাজও।
আগামী ২৪ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ বিমানের বহরে যুক্ত হতে যাচ্ছে কানাডা থেকে কেনা ড্যাশ-৮ মডেলের একটি উড়োজাহাজ। এই উড়োজাহাজ বহরে যোগ হওয়ার ঠিক ১০ দিনের মধ্যে আরো একটি ড্যাশ-৮ মডেলের এয়ারক্র্যাফট যুক্ত হওয়ার কথা রয়েছে।
এ দিকে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স কর্তৃপক্ষের কাছে মাঝেমধ্যে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের এয়ারলাইন্স কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে উড়োজাহাজ লিজ নেয়ার প্রস্তাবনা আসছে। ভবিষ্যতে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স কর্তৃপক্ষ তাদের নিজস্ব শিডিউল ফ্লাইটগুলো ঠিক রেখে ভালো প্রস্তাবনায় উড়োজাহাজ লিজ ব্যবস্থপনায় দেয়া যায় কি না সেটিও সংশ্লিষ্টদের পরিকল্পনার মধ্যে রয়েছে।
গতকাল রাতে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো: মোকাব্বির হোসেনের সাথে এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি নয়া দিগন্তকে বলেন, না, না, লিজ দেবো কেন? আমরা আমাদের নিজেদের রুট চালাব। বিদেশের বিভিন্ন স্টেশন থেকে ট্রাফিক, সেলস, ফাইন্যান্স ও অপারেশন বিভাগের কর্মকর্তাদের মধ্যে যারা দুই বছরের মধ্যে দায়িত্ব পালন শেষে দেশে ফিরেছেন এমন কর্মকর্তাদের নিয়ে গত ১৭ ফেব্রুয়ারি বলাকা ভবনে একটি ট্রেনিং পর্ব অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে উপস্থিত কর্মকর্তাদের কাছে বিদেশের স্টেশনে কর্মরত থাকা অবস্থায় তারা কি কি ধরনের কাজ করে দক্ষতা অর্জন করেছেন, সেটি জানার পাশাপাশি বিমানের উন্নয়নে আরো কি করণীয় থাকতে পারে সেই সব বিষয় নিয়েও সেখানে আলোচনা হয়েছে বলে সূত্র জানিয়েছে।
জানা গেছে, বিশ্বের বিভিন্ন দেশের এয়ারলাইন্স প্রতিষ্ঠানগুলো করোনায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। সেই তুলনায় বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স দ্রুত সঙ্কট পরিস্থিতি মোকাবেলা করে সঙ্কট কাটিয়ে ধীরে ধীরে স্বাভাবিক করতে পেরেছে। সামনের দিনগুলো আরো ভালো হবে। বিমান সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ‘বিমান ম্যানেজমেন্ট সংশ্লিষ্টরা এখন ভাবছেন, বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সাথে শিডিউল এবং চার্টার্ড ফ্লাইট ঠিক রেখে স্বল্প মেয়াদে দু-একটি উড়োজাহাজ লিজ দেয়া যায় কি না। যদিও এ ব্যাপারে বিমান ম্যানেজমেন্ট থেকে কোনো আলোচনাই শুরু হয়নি বলে হয়নি।
গতকাল রোববার সন্ধ্যার পর বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের পরিচালক (পরিকল্পনা এবং ট্রেনিং) মাহাবুব জাহান খানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি নয়া দিগন্তকে বলেন, আমি স্পোকস পারসন না। তার পরও শুধু বলব, বিমান আগের থেকে এখন অনেক ভালো অবস্থানে আছে। অনিয়ম কমে আসছে। তিনি বলেন, আমাদের বহরে কানাডা থেকে নতুন ড্যাশ-৮ উড়োজাহাজ দু’টির মধ্যে একটি ২৪ ফেব্রুয়ারি আসছে। সেটি আনার জন্য বিমানের প্রকৌশল বিভাগ ও সিভিল এভিয়েশনের কর্মকর্তারা কানাডায় রয়েছেন।
এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, এই এয়ারক্র্যাফট কানাডা থেকে আসার ৮-১০ দিনের মধ্যে আরো একটি আমাদের ক্রয় করা ড্যাশ-৮ এয়ারক্র্যাফট বহরে যোগ হওয়ার কথা রয়েছে।
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের দায়িত্বশীল অপর একজন কর্মকর্তা নাম না প্রকাশের শর্তে গতকাল নয়া দিগন্তকে বলেন, উড়োজাহাজ লিজ দেয়া সংক্রান্ত কোনো ডিসিশন আমাদের বিমান ম্যানেজমেন্টের পক্ষ থেকে নেয়া হয়নি। তবে লিজের অফার বিভিন্ন দেশ থেকে মাঝেমধ্যে আমাদের কাছে আসে।
বর্তমানে বিমানের অভ্যন্তরীণ রুটে চলাচলের জন্য তিনটি ড্যাশ-৮ উড়োজাহাজ রয়েছে। এর সাথে আরো দু’টি যোগ হলে পাঁচটি এয়ারক্র্যাফট দিয়ে অভ্যন্তরীণ সবগুলো রুটে বিমান চলাচল শুরু হবে। তখন বিমানের অভ্যন্তরীণ রুট নিয়ে আর কথা থাকবে না বলে বিমান সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন।
এ ছাড়া বহরে রয়েছে বোয়িং ৭৭৭-৩০০-ইআর চারটি, ড্রিমলাইনার ৭৮৭-৮ মডেলের চারটি এবং ৭৮৭-৯ মডেলের দু’টি। রয়েছে ৭৩৭-৮০০ মডেলের নিজস্ব দু’টি এবং লিজের চারটি উড়োজাহাজ।