প্রতিদ্বন্দ্বীদের বাদ দিয়েই কমিটি! তৃণমূলে ক্ষোভ

admin
সেপ্টেম্বর ২৬, ২০২০ ৮:২৭ পূর্বাহ্ণ
Link Copied!

ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের জেলা ও মহানগরের পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন নিয়ে তৃণমূলের নেতাকর্মীদের বিরোধ চরমে উঠেছে। বেশির ভাগ জেলা ও মহানগরের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকরা তাঁদের পছন্দমতো নেতাদের দিয়ে কমিটি গঠন করে অনুমোদনের জন্য কেন্দ্রীয় কমিটির কাছে জমা দিয়েছেন। এসব কমিটিতে সম্মেলনের সময় যাঁরা সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন তাঁদের বেশির ভাগকেই বাদ দেওয়া হয়েছে। আবার দুর্দিনে আওয়ামী লীগকে নেতৃত্ব দিয়েছেন এমন অনেক নেতাও বাদ পড়েছেন কমিটি থেকে

এমন পরিস্থিতিতে দলের সভাপতি শেখ হাসিনা কেন্দ্রে জমা পড়া ২০টির মতো কমিটির বেশ কয়েকটি সংশ্লিষ্ট নেতাদের ফেরত দিয়ে সবাইকে নিয়ে সমন্বয় করে কমিটি গঠনের নির্দেশনা দিয়েছেন। তিনি সপ্তাহখানেক আগে হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন, পছন্দমতো লোকদের দিয়ে কমিটি গঠন করা হলে প্রয়োজনে সেসব কমিটি ভেঙে দেওয়া হবে।

এমন পরিস্থিতিতে দলের সভাপতি শেখ হাসিনা কেন্দ্রে জমা পড়া ২০টির মতো কমিটির বেশ কয়েকটি সংশ্লিষ্ট নেতাদের ফেরত দিয়ে সবাইকে নিয়ে সমন্বয় করে কমিটি গঠনের নির্দেশনা দিয়েছেন। তিনি সপ্তাহখানেক আগে হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন, পছন্দমতো লোকদের দিয়ে কমিটি গঠন করা হলে প্রয়োজনে সেসব কমিটি ভেঙে দেওয়া হবে।

আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক ও প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী বিপ্লব বড়ুয়া জানিয়েছেন, সম্মেলন হওয়া ৩১ সাংগঠনিক জেলার মধ্যে দুই-তৃতীয়াংশের কমিটি কেন্দ্রে জমা পড়েছে। বাকি কমিটিগুলো আগামী ৩ অক্টোবর আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সভার আগেই জমা পড়বে বলে আশা করা হচ্ছে।

জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কাজী জাফর উল্যাহ বলেন, ‘জেলা ও মহানগর কমিটিগুলো নিয়ে এখনো কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ বসেনি। তবে বেশ কিছু কমিটি নিয়ে অভিযোগ ওঠায় সভাপতি শেখ হাসিনা সেসব যাচাই-বাছাইয়ের জন্য ফেরত দিয়েছেন। যাঁরা দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা আছেন তাঁদের বলে দিয়েছেন সবাইকে নিয়ে সমন্বয় করে কমিটি গঠন করে আবার জমা দিতে।’

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘স্বজনপ্রীতি ও নিজেদের লোক দিয়ে কমিটি দেওয়া হয়েছে কি না তা খতিয়ে দেখা হবে। দীর্ঘদিনের পরীক্ষিত নেতাকর্মীরা বাদ পড়া কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। সবাইকে বলব সামনে যে কমিটিগুলো গঠন করা হবে, সেগুলোতে অবিতর্কিত এবং ত্যাগীদের অগ্রাধিকার দিতে হবে।’ তিনি গত শনিবার ঢাকায় এক অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন।

গত সপ্তাহে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সভায় শেখ হাসিনাও পছন্দমতো লোকদের দিয়ে কমিটি গঠন করা হলে প্রয়োজনে জেলা ও মহানগর কমিটি ভেঙে দেওয়ার কঠোর হুঁশিয়ারি দেন।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, খুলনা, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, কক্সবাজার, সিলেট জেলা ও মহানগর, রাজশাহী জেলা ও মহানগর, গাজীপুর মহানগর, হবিগঞ্জসহ অন্তত ১৮-২০টি সাংগঠনিক জেলার পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে গুরুত্বপূর্ণ ও দুর্দিনের নেতাদের বাদ দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এমরান ফারুক মাসুমকে এবারের কমিটিতে তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক পদে রাখা হয়েছে। তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর খন্দকার মোশতাক যখন চাঁপাইনবাবগঞ্জ এসেছিলেন আমি ঝুঁকি নিয়ে কালো পতাকা দেখিয়েছিলাম। আর এখন কমিটিতে নব্য আওয়ামী লীগারদের জয়জয়কার। আমাকে পদাবনতি দিয়ে অপমান করা হয়েছে।’

জানা গেছে, খুলনা জেলা আওয়ামী লীগের কমিটিতে প্রয়াত জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা রশিদী সুজার অনুসারীদের বাদ দেওয়া হয়েছে। তাঁদের মধ্যে আছেন মোখলেসুর রহমান, আশরাফুজ্জামান বাবুল, বি এম জাফর, মালিক সরোয়ারসহ বেশ কয়েকজন।

জানা যায়, কক্সবাজার জেলা কমিটিতে বাদ পড়েছেন কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি পদপ্রত্যাশী ও সংসদ সদস্য জাফর আলমসহ তাঁর অনুসারীরা।

প্রায় ১৪ বছর পর গত বছরের ডিসেম্বরে সিলেট জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। গত ১৪ সেপ্টেম্বর জেলা ও মহানগরের পূর্ণাঙ্গ কমিটি আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় দপ্তরে জমা দেওয়া হয়েছে। কমিটিতে পুরনো ও দুর্দিনের বেশ কয়েকজন নেতাকে বাদ দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে আওয়ামী লীগের সূত্রগুলো।

গত বছরের ৮ ডিসেম্বর রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এরপর গত ১২ মার্চ রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের ৭৪ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ কমিটি অনুমোদনের জন্য কেন্দ্রের কাছে জমা দেওয়া হয়। তবে এই কমিটিতে ঠাঁই হয়নি বিগত কমিটির গুরুত্বপূর্ণ পদে থাকা বেশ কয়েকজনের, জানিয়েছে রাজশাহী আওয়ামী লীগের সূত্রগুলো।