দেশব্যাপী ধর্ষণ ও নারী নিপীড়নের বিরুদ্ধে চলমান প্রতিবাদের পরিপ্রেক্ষিতে ধর্ষণের সর্বোচ্চ সাজা মৃত্যুদণ্ডের বিধান রেখে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের (সংশোধিত) খসড়া অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা।
সোমবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে মন্ত্রিসভার ভার্চুয়াল বৈঠকে এই খসড়ার চূড়ান্ত অনুমোদন দেয়া হয়। সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে বৈঠকে অংশ নেন সরকারপ্রধান। আর সচিবালয় থেকে মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রীরা যুক্ত ছিলেন।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম জানান, দেশব্যাপী ধর্ষণ ও নারী নিপীড়নের বিরুদ্ধে চলমান প্রতিবাদের পরিপ্রেক্ষিতে ধর্ষণের সর্বোচ্চ সাজা মৃত্যুদণ্ড বা যাবজ্জীবনের বিধান রেখে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের (সংশোধিত) খসড়া অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
‘আইন বিভাগ থেকে আইনি যাচাই (ভেটিং) শেষেই মন্ত্রিপরিষদ এই অনুমোদন দিয়েছে’, বলেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব।
বৈঠক শেষে আইনমন্ত্রী বলেন, ‘সংশোধিত আইন মন্ত্রিসভা বৈঠকে অনুমোদন দেয়া হয়েছে। সংশোধিত আইন অনুযায়ী সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড, যাবজ্জীবনও থাকছে। আগামীকালই সংশোধিত আইনের অধ্যাদেশ জারি করা হবে।’
নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন অনুযায়ী এখন ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি যাবজ্জীবন কারাদণ্ড। কিন্তু দেশে হঠাৎ করে ধর্ষণের ঘটনা অস্বাভাবিক হারে বেড়ে যাওয়ায় নানা মহলের দাবির প্রেক্ষিতে সরকার এই অপরাধের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ডের বিধান করার পদক্ষেপ নিল।
নোয়াখালীতে গৃহবধূকে বিবস্ত্র করে নির্যাতন, সিলেটের এমসি কলেজে তুলে নিয়ে ধর্ষণসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সাম্প্রতিক সময়ে ঘটে যাওয়া যৌন নিপীড়নের প্রতিবাদে দেশজুড়ে বিক্ষোভ চলছে গত কয়েক সপ্তাহ ধরে।
আন্দোলনকারী বিভিন্ন ছাত্র ও অধিকার সংগঠনের দাবির প্রেক্ষিতে সরকার ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি বাড়িয়ে মৃত্যুদণ্ড করার উদ্যোগ নেয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনার পর আইন সংশোধন করে ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড করার উদ্যোগ নেয়ার কথা জানিয়েছিলেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, যা আজকের মন্ত্রিসভার বৈঠকে অনুমোদন দেয়া হয়। এছাড়া সংশ্লিষ্ট আরও কিছু পরিবর্তনের প্রস্তাব রয়েছে সংশোধিত খসড়ায়।
জানা যায়, সোমবার মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে ‘নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন, ২০০০’ এর সংশোধিত খসড়া প্রস্তাব উত্থাপন করে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়। এরপর মন্ত্রিসভায় সেটিতে সায় দেয়।