দেশে আমদানি উৎপাদনে আইনি বাধা কাটল

admin
এপ্রিল ২৫, ২০২১ ৮:০৯ পূর্বাহ্ণ
Link Copied!

অবশেষে রাশিয়া ও চীনের টিকা বাংলাদেশে আমদানি, উৎপাদন ও ব্যবহারের ক্ষেত্রে আইনি বাধা কাটল। দেশের প্রচলিত ঔষধ আইন ও নীতিমালা অনুযায়ী কোনো ওষুধ বা টিকার যদি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, এফডিএ কিংবা ইউরোপের চারটি এবং অন্য তিনটি দেশের অনুমোদন না থাকে, তবে তা বাংলাদেশে আমদানি, উৎপাদন বা ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা ছিল। এ ক্ষেত্রে এখন পর্যন্ত যে ১২টি টিকা জরুরি ব্যবহারের জন্য বিভিন্ন দেশে অনুমোদিত ছিল, এর মধ্যে রাশিয়া ও চীনের টিকা ওই ক্যাটাগরিভুক্ত ছিল না বা কোথাও অনুমোদন পায়নি। ফলে জানুয়ারি মাস থেকেই রাশিয়া ও চীনের টিকা বাংলাদেশে উৎপাদন বা রপ্তানির জন্য উভয় দেশের পক্ষ থেকে দফায় দফায় আগ্রহ দেখানো হলেও বাংলাদেশ সরকার তাতে সায় দেয়নি। কিন্তু বর্তমানে দেশে টিকার সংকট প্রকট হওয়ায় এবং জরুরি ব্যবহারের প্রয়োজন বিবেচনায় নিয়ে টিকাসংক্রান্ত বিশেষজ্ঞরা ওই নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের সুপারিশ করেন। সুপারিশের ভিত্তিতে গতকাল শনিবার সরকারের ঔষধ প্রশাসনের সংশ্লিষ্ট কমিটি জরুরি বৈঠকে বসে। বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, আগে আইনি অবস্থা কিছুটা শিথিল করে যদি কোনো টিকা কোনো দেশের সরকার অনুমোদন দিয়ে থাকে এবং সেই টিকা যদি বাংলাদেশের সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞ কমিটির কাছে গ্রহণযোগ্য বলে বিবেচিত হয়, তবে সরকার চাইলে তা দেশে আমদানি, উৎপাদন ও ব্যবহারের অনুমতি দিতে পারবে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র জানায়, এই সিদ্ধান্তের মধ্য দিয়ে এখন আর রাশিয়া বা চীনের টিকা বাংলাদেশে আমদানি, উৎপাদন বা ব্যবহারের কোনো বাধা রইল না। ঔষধ প্রশাসন এখন শুধু সংশ্লিষ্ট টিকার কার্যকারিতা বা গুণাগুণ যাচাই-বাছাইয়ের মাধ্যমে যেকোনো আবেদন অনুমোদনের জন্য বিবেচনা করতে পারবে। এতে রাশিয়া ও চীনের সঙ্গে বাংলাদেশ সরকার এবং দু-তিনটি কম্পানির যে চুক্তির প্রক্রিয়া চলছে, তা আরো গতি পাবে বলে ওই সূত্র জানায়। এ ক্ষেত্রে আজ-কালের মধ্যেই কোনো কোনো টিকার চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হতে পারে।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার নাইট্যাগের সভা থেকে চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য সুপারিশ করা ছয়টি টিকার মধ্যে রয়েছে মডার্না, ফাইজার, জনসন অ্যান্ড জনসন, রাশিয়ার স্পুিনক ভি ও চীনের দুটি কম্পানির টিকা। এর মধ্যে স্পুিনক ভি ও চীনের একটি কম্পানির টিকা দেশে আমদানির পাশাপাশি স্থানীয়ভাবে উৎপাদনের বিষয়ে চুক্তিপ্রক্রিয়া প্রায় চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে বলে জানা গেছে। এ ক্ষেত্রে দেশের বড় চারটি ওষুধ প্রস্তুতকারী কম্পানি ওই দুটি টিকা দেশে উৎপাদনের ব্যাপারে তৎপরতা চালাচ্ছে। ওই প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে প্রতিযোগিতামূলক দিক বিবেচনায় ঠিক কোন দুটি কম্পানি রাশিয়া ও চীনের টিকা উৎপাদনের সুযোগ পাবে, তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। এ ক্ষেত্রে তিনটি কম্পানি যৌথভাবে কোনো একটি টিকা উৎপাদনের পথে যেতে পারে বলেও গতকাল পর্যন্ত আলোচনা চলছিল।
সূত্র জানায়, প্রয়াত সংসদ সদস্য আসলামুল হকের কম্পানি মাইশা গ্রুপ রাশিয়ার টিকা বাংলাদেশে আমদানির জন্য সরকারের কাছে আবেদন করে রেখেছিল এবং সেই প্রক্রিয়া অনেকটা এগিয়ে রয়েছে। কিন্তু সম্প্রতি সংসদ সদস্য আসলামুল হকের মৃত্যুর কারণে ওই প্রক্রিয়া কিছুটা এলোমেলো হয়ে পড়ে। ফলে আরো একাধিক ওষুধ উৎপাদনকারী কম্পানি নতুন করে তোড়জোড় শুরু করে রাশিয়ার টিকা আমদানি ও উৎপাদনের জন্য।