দীর্ঘ প্রায় ১৯ বছর পর আরিচা-কাজীরহাট নৌ-রুটে ফেরি চলাচল শুরু হয়েছে। কয়েক দিনের মধ্যেই উদ্বোধন করা হবে আরিচা-কাজীর হাট ফেরিঘাট। এই রুটে ঘাট প্রস্তুত শেষে পরীক্ষামূলকভাবে বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমান নামের একটি ফেরি চলাচল শুরু করেছে। দীর্ঘ প্রায় ১৯ বছর পর বুধবার সকাল থেকে এই রুটে ফেরি চলাচল শুরু হওয়ায় দেশের পশ্চিমাঞ্চলের পাবনা জেলাসহ ১৭টি জেলার মানুষের মাঝে আনন্দ বিরাজ করছে। এক সময় আরিচা ঘাটকে দেশের নাভি বলা হতো। কিন্তু আরিচা-কাজীর হাট নৌ-রুটে ফেরি চলাচল বন্ধ থাকায় ঐতিহ্যবাহী আরিচা ঘাট শ্রীহীন হয়ে পড়ে। আরিচা দিয়ে এক সময় রাজধানী ঢাকাসহ দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমা ও উত্তরাঞ্চলের ৩৬ জেলার মানুষের যাতায়াতের একমাত্র রুট ছিল। এ রুটে ফেরি চলাচল বন্ধ থাকলে ঢাকা রাজধানীসহ দেশের দক্ষিণ-পশ্চিম ও উত্তরাঞ্চলের ৩৬ জেলার মানুষের সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যেত। কিন্তু ১৯৯৭ সালের ২৩ মার্চ ভুয়াপুর যমুনা সেতু হওয়ার পর শিবালয়ের আরিচা ঘাটের গুরুত্ব বা যানবাহনের চাপ অনেক কমে যায়। যমুনা সেতু দিয়ে উত্তরাঞ্চলের যাত্রীরা চলাচল করায় আরিচা ঘাট দিন দিন শ্রীহীন হয়ে পড়ে। ২০০২ সালে ১২ মার্চ দক্ষিণাঞ্চলের যাত্রীদের নৌ-রুটের দূরত্ব ৭ কিলোমিটার কমানো ও যাত্রীরা দ্রম্নত গন্তব্যে পৌঁছানোর লক্ষ্যে পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌ-রুট চালু করা হয়। পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌ-রুটে ফেরি চলাচল শুরু হওয়ায় আরিচা ঘাটের গুরুত্ব একেবারে কমে যায়। শূন্য হয়ে পড়ে আরিচা ঘাট। সরকারের কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে আরিচা ট্রাক টার্মিনাল ও টার্মিনালের অফিস ঘরগুলো দীর্ঘ প্রায় ১৯ বছর ধরে অকেজো অবস্থায় পড়ে ছিল। আরিচা বিআইডবিস্নউটিএ’র সহকারী পরিদর্শক ফরিদুল ইসলাম জানান, আরিচা-কাজীরহাট নৌ-রুট সচল করতে প্রায় ১৪ কোটি ব্যয় হয়েছে। উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কুদ্দুস জানান, আরিচা-কাজীরহাট নৌ-রুটে ফেরি চলাচল শুরু হলে পাবনাসহ দেশের পশ্চিমাঞ্চলের ১৭টি জেলার মানুষের যোগাযোগ সহজ হবে। বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-করপোরেশন বিআইডবিস্নউটির আরিচা অফিসের ডিজিএম জিলস্নুর রহমান জানান। এ নৌ-রুটে ৪টি ফেরি দিয়ে যানবাহন পারাপার করা হবে। বুধবার বিআইডবিস্নউটিএ’র চেয়ারম্যান কমডোর সাদেকসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা আরিচা ও কাজীরহাট ঘাট এলাকা পরিদর্শন করেছেন।