আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) বলেছে, মাথাপিছু জিডিপিতে ভারতকেও পেছনে ফেলতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশের অর্থনীতির এ উত্থান যেন ‘ছাই থেকে জন্ম নেয়া ফিনিক্স’।ভারতের হিন্দুস্তান টাইমসে এভাবেই বাংলাদেশের প্রশংসা করে কলাম লিখেছেন প্রখ্যাত সাংবাদিক মার্ক টালি। তিনি লেখেন, ওই ছাই রেখে গিয়েছিল পাকিস্তানের সেনাবাহিনী। ১৯৭১ সালে পাক সেনাদের আগ্রাসনের পর তিনি বাংলাদেশ ভ্রমণ করেছিলেন। এ সময় ঢাকা থেকে রাজশাহী যান তিনি।পথে তিনি দেখেন বহু গ্রাম পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে। এর আড়াই বছরেরও কম সময় পর বাংলাদেশ দুর্ভিক্ষের মুখোমুখি হয়।
এরপর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যাকাণ্ড এবং রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা এসেছিল যখন সেনাবাহিনীর কর্মকর্তারা ক্ষমতার জন্য একে অপরের সঙ্গে লড়াই শুরু করে।এর সঙ্গে যোগ হয় বন্যা ও ঘূর্ণিঝড়ের মতো নানারকম চ্যালেঞ্জ। ফলে বাংলাদেশকে নিয়ে আন্তর্জাতিকভাবে বিদ্রূপ করা হয় তখন। যুক্তরাষ্ট্রের তৎকালীন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হেনরি কিসিঞ্জার বাংলাদেশকে ‘তলাবিহীন ঝুড়ি’ বলে আখ্যায়িত করেন। মার্ক টালি লেখেন, গেল ২০ বছরেরও বেশি সময় ধরে বাংলাদেশের অর্থনীতির ধারাবাহিক বিকাশ ঘটেছে। কিছু উন্নয়ন সংস্থা এখন দেশটিকে উন্নয়নের মডেল হিসেবে অভিহিত করেছেন।তবে এখনও বাংলাদেশের জনসংখ্যার প্রায় ২০ ভাগ অতিদরিদ্র। অর্থনীতি এখনও নির্ভরশীল বিদেশে কর্মরত শ্রমিকদের পাঠানো রেমিটেন্স এবং পোশাক শিল্পের ওপর।বিশ্বব্যাংকের ধারণা, করোনভাইরাসের কারণে এ বছর রেমিটেন্স প্রায় ২৫ ভাগ কমে যেতে পারে। অন্যদিকে পোশাক খাত অত্যন্ত প্রতিযোগিতামূলক এবং অস্থির।
দুটি কারণে বাংলাদেশ মাথাপিছু জিডিপিতে ভারতকে পেছনে ফেলার অবস্থায় পৌঁছেছে বলে মনে করেন মার্ক টালি। তিনি বলেন, এ দুটি বিষয়ই ভারতের থেকে আলাদা।প্রথমটি হল আন্তর্জাতিক সহায়তা গ্রহণের আগ্রহ এবং দাতাদের পরামর্শ। বাংলাদেশ এতে উপকৃত হয়েছে কারণ এর ভয়াবহ অর্থনৈতিক সংকট সরকারকে দাতাদের পরামর্শ মেনে চলতে বাধ্য করেছিল।দ্বিতীয়তটি হল বেসরকারি সংস্থাগুলোকে (এনজিও) বাংলাদেশের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে উৎসাহিত করা হয়েছে। এর অনন্য উদাহরণ হল বহুমুখী উন্নয়ন সংস্থা ব্র্যাক। দ্য ইকোনমিস্টের মতে, ব্র্যাক এখন বিশ্বের বৃহত্তম দাতব্য সংস্থা।