রাজধানীতে এখন থেকে থাকবে না কোন অপরিকল্পিত এবং অননুমোদিত স্থাপনা। ছোট বড় যে কোন স্থাপনা বা অবকাঠামো নির্মাণ করতে হবে মাস্টারপ্ল্যান অনুযায়ী। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, খেলার মাঠ, পার্ক মসজিদ মন্দির কিংবা যে কোন ধর্মীয় স্থাপনাও হবে শতভাগ পরিকল্পিত স্থানে। জলাশয় ভরাট করে কোন স্থাপনা তৈরি করা যাবে না। রাজধানী ও তার আশপাশের রাজউকের সীমানার মধ্যে সব স্থানের নির্মাণ কার্যক্রম হবে পরিকল্পনা অনুযায়ী।
মহাপরিকল্পনায় রাজধানীর মোট জমি ১৩ ধরনের ভূমি ব্যবহার জোনে ভাগ করা হয়েছে। এর মধ্যে নগর এলাকা ৬১ দশমিক ৬১ ভাগ, কৃষি এলাকা ২৮ দশমিক ৪৮ ভাগ এবং জলাশয় ৭ দশমিক ৮৭ ভাগ। মূলত নাগরিকদের বসবাস ও জীবন জীবিকার পাশাপাশি পর্যায়ক্রমে ঢাকাকে একটি বাসযোগ্য মানবিক ঢাকা গড়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করা হয়েছে নতুন মহাপরিকল্পনায়।
ড্যাপে নক্সার ব্যত্যয় ঘটিয়ে ভবন বা স্থাপনা এমনকি কৃত্রিম কিছু তৈরি করলেই করা হবে জেল জরিমানা এমনকি ভবন বা অবকাঠামো ভেঙ্গে ফেলা হবে। এমন সব নির্দেশনা ও সুপারিশ অনুযায়ী খসড়া ডিটেইল এরিয়া প্ল্যান (ড্যাপ) বা বিশদ অঞ্চল পরিকল্পনা সরকারের কাছে জমা দিয়েছে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক)। ড্যাপের প্রকল্প পরিচালক গত ১৫ জুলাই এর খসড়া রাজউকের মাধ্যমে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ে জমা দিয়েছেন। রাজউকের খসড়া বিশদ পরিকল্পনা নিয়ে নানা পর্যালোচনা শেষে গত ৫ সেপ্টেম্বর মন্ত্রণালয় থেকে এ সম্পর্কিত যে কোন প্রকার আপত্তি থাকলে তা রাজউকের ওয়েবসাইটের মাধ্যমে নাগরিকগণকে মতামত জানাতে নির্দেশনা দিয়ে একটি গেজেট আকারে প্রজ্ঞাপন প্রকাশ করা হয়েছে।
প্রস্তাবিত খসড়া ড্যাপে আবাসন ব্যবস্থার উন্নতিকল্পে শহরের আবাসিক চাহিদা পূরণের লক্ষ্যে ব্লকভিত্তিক উন্নয়ন পদ্ধতি বেছে নিতে সুপারিশ করা হয়। কারণ হিসেবে বলা হয়েছে এতে উচ্চতা সম্প্রসারণে উৎসাহীত করা যাতে যত্রতত্র নগরাঞ্চল কমিয়ে আনা এবং শহরের নিচু ও কৃষি জমি সুরক্ষা করা সম্ভব নয়।
ড্যাপ খসড়ায় সমগ্র মেট্রোপলিটন এলাকাকে বিভিন্ন নিয়ামকের উপর ভিত্তি করে মোট ১৩ ধরনের ভূমি ব্যবহার জোনে ভাগ করা হয়েছে। এর মধ্যে মোট জমির ৬১ দশমিক ৬১ ভাগ জমিকেই নগর এলাকা হিসেবে প্রস্তাব করা হয়েছে। কৃষি এলাকা চিহ্নিত করা হয়েছে ২৯ দশমিক ৪৮ ভাগ জমিকে। ৭ দশমিক ৮৭ ভাগ জমিকে জলাশয় হিসেবে রাখার প্রস্তাব দেয়া হয়েছে। যে ১৩টি ভূমি ব্যবহার জোনে ভাগ করা হয়েছে এর মধ্যে রয়েছে আবাসিক এলাকা হিসেবে ৫ দশমিক ১৬ ভাগ জমি, মিশ্র ব্যবহার এলাকা (আবাসিক প্রধান) ৩২ দশমিক ৮৫ ভাগ, মিশ্র ব্যবহার এলাকার (আবাসিক-বাণিজ্যিক) শূন্য দশমিক ৪৭ ভাগ, বাণিজ্যিক এলাকা শূন্য দশমিক ৪ ভাগ, মিশ্র ব্যবহার এলাকা (বাণিজ্যিক প্রধান) ১ দশমিক ৩১ ভাগ, মিশ্র ব্যবহার এলাকা (শিল্প প্রধান) ৭ দশমিক ৮৮ ভাগ, প্রাতিষ্ঠানিক এলাকা ৩ দশমিক ৫৯ ভাগ, ভারি শিল্প এলাকা হিসেবে ১ দশমিক ৭১ ভাগ, পরিবহন ও যোগাযোগ (বিদ্যমান) এলাকা ৫ দশমিক ১৫ ভাগ, পরিবহন ও যোগাযোগ (প্রস্তাবিত) ২ দশমিক ৩ ভাগ, কৃষি এলাকা ২৯ দশমিক ৪৮ ভাগ, জলাশয় ৭ দশমিক ৮৭ ভাগ, বনাঞ্চল হিসেবে ১ দশমিক ৪২ ভাগ এবং উন্মুক্ত স্থান হিসেবে ১ দশমিক শূন্য ৪ ভাগ জমি রাখার প্রস্তাব করা হয়েছে। অপরদিকে বন্যা প্রবাহ এলাকা, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা এলাকা, কেপিআই, উচ্চতা নিয়ন্ত্রণ অঞ্চল, ঐতিহাসিক স্থাপনা ইত্যাদি অঞ্চলকে বিশেষ ব্যবস্থাপনা জোনের মধ্যে বিবেচনা করা হয়েছে।
রাজউক সূত্র জানায়, পাঁচ বছর মেয়াদে ড্যাপ মাস্টার প্ল্যান ১ হাজার ৪৩২ বর্গকিলোমিটার এলাকায় ২০১০ সালে প্রথম প্রণয়ন হয়। ২০১৫ সালে প্রথম ড্যাপের মেয়াদকাল শেষ হয়। বর্তমানে ওই ড্যাপের সময় বৃদ্ধি করে নগরীর উন্নয়ন কার্যক্রম পরিচালনা করছে রাজউক। ঢাকাকে আধুনিক, বাসযোগ্য এবং আরও উন্নত শহর হিসেবে গড়ে তুলতে ২০১৬ থেকে ২০৩৫ সালের জন্য ১ হাজার ৫২৮ বর্গকিলোমিটার এলাকার জন্য নতুন ড্যাপ তৈরি করা হচ্ছে। রাজউকের উদ্যোগে প্রণীত নতুন ড্যাপে ভূমি পুনর্বিন্যাস, উন্নয়নস্বত্ব প্রতিস্থাপন পন্থা, ভূমি পুনঃউন্নয়ন, ট্রানজিটভিত্তিক উন্নয়ন, উন্নতিসাধন ফি, স্কুল জোনিং ও ডেনসিটি জোনিং থাকবে। সংশোধিত ড্যাপে নতুন কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়ন হলে রাজউকের আওতাধীন এলাকার বিদ্যমান চেহারা বদলে যাবে। পুরান ঢাকাসহ রাজধানীর অনেক ঘিঞ্জি ও অপরিকল্পিত এলাকা নতুন করে সাজানো হবে এর মধ্যমে। নতুন খসড়া ড্যাপের পরিকল্পনায় বেশ কিছু নতুন বিষয়ে আলোকপাত করা হয়েছে। এর মধ্যে অঞ্চলভিত্তিক পার্ক স্থাপনা, স্কুলভিত্তিক উন্নয়ন, গণমুখী যোগাযোগ ব্যবস্থাপনা, সমন্বিত ভূগর্ভস্থ ইউটিলিটি ডাক্ট স্থাপন করার কথা বলা হয়েছে। অপরদিকে কৃষি জমি বা বন্যা অববাহিকা অঞ্চল ব্যবস্থাপনা, পরিবেশ সংক্রান্ত নির্দেশনা, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, নগরায়ন ও নগর সম্প্রসারণ করা, আবাসন, পরিবহন ও যোগাযোগ অবকাঠামোর কথাও বলা হয়েছে। এছাড়াও দুর্যোগ ও নিরাপত্তা সংক্রান্ত নির্দেশনা, এলাকাভিত্তিক কর্মপরিকল্পনা গড়ে তোলার উপর বিশেষ গুরুত্ব প্রদান করা হয়েছে।
প্রস্তাবিত খসড়া ড্যাপ প্রণয়নের জন্য লক্ষ্য নির্ণয়ে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক উচ্চপর্যায়ের নীতিমালা এবং পরিকল্পনাকে মাথায় রেখেই তৈরি করা হয়েছে। এর মধ্যে জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য (এসডিজি) প্রেক্ষিত পরিকল্পনা ২০২১, সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা, রাজউকের কৌশলগত পরিকল্পনা (ঢাকা স্ট্রাকচারাল প্ল্যান-২০১৬-৩৫) কে মাথায় নিয়েই ৪টি মূল লক্ষ্য স্থির করেছে। এগুলো হচ্ছে বিনিয়োগের সার্বজনীন স্বাধীনতা, উন্নত জীবনমান, সহনশীল শহর, বাস্তুসংস্থান সংরক্ষণ ও পুনরুজ্জীন। ড্যাপে ঢাকা মেট্রোপলিটন অঞ্চল বা ডিএমআরকে স্বতন্ত্র ৬ অঞ্চলে ভাগ করা হয়েছে। তা হচ্ছে কেন্দ্রীয় অঞ্চল-ঢাকা শহর (অধুনা বর্ধিত অংশসহ ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন), উত্তর অঞ্চল গাজীপুর (গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন), পূর্ব অঞ্চল হচ্ছে কালীগঞ্জ ও রূপগঞ্জ উপজেলা (তারাব, কাঞ্চন পৌরসভা (আংশিক), কালীগঞ্জ পৌরসভা (আংশিক)। দক্ষিণাঞ্চল নারায়ণগঞ্জ (সিটি কর্পোরেশন, সদর, বন্দর ও সোনারগাঁ উপজেলা (আংশিক)। দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চল হচ্ছে কেরানীগঞ্জ উপজেলা ও পশ্চিমাঞ্চল হচ্ছে সাভার উপজেলা (সাভার পৌরসভাসহ)। প্রতি ৫ বছর পরপর ড্যাপকে হালনাগাদ ও পরিমার্জনের জন্য সুপারিশ করা হয়েছে।
মহাপরিকল্পনায় নদী ও খাল শুধুমাত্র ড্রেনেজ চ্যানেল হিসেবে না রেখে নগর জীবন রেখা আঙ্গিকে ৫শ’ ৬৬ কিলোমিটার জলপথকে নতুনভাবে ঢেলে সাজানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। সড়ক রেল ও জলপথকে বহুবিধ কার্যক্রমের স্থান হিসেবে পরিগণিত হবে। এরং সুফল হিসেবে মাইক্রো জলবায়ুর উপর ইতিবাচক প্রভাব পড়বে স্বাস্থ্য ও পুষ্টিবান্ধব অবকাঠামো গড়ে তোলা হবে, বিনোদনমূলক স্থান হিসেবে গড়ে তোলা, জীববৈচিত্র পুনঃস্থাপন করা, পরিবেশবান্ধব হাঁটার পথ তৈরি করে জীবন ও জীবকার ভারসাম্য তৈরি হবে। পরিকল্পনায় সব আর্থ-সামাজিক গোষ্ঠীর শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে পূর্ণাঙ্গ খেলার মাঠসহ বিদ্যালয় ও প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র স্থাপন করার সুপারিশ করেছে। এছাড়া বিদ্যালয় কেন্দ্রিক কর্মপরিকল্পনা সম্পর্কে বিশদ আলোচনা করেছে। এজন্য ড্যাপ সীমানায় প্রায় ২৭ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে ৬শ’ ২৭টি বিদ্যালয় ও ১১২টি প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র স্থাপন করার সুপারিশ করা হয়। ঢাকার মোট এলাকার মধ্যে উন্মুক্ত স্থানের পরিমাণ মাত্র শূন্য দশমিক ৯ ভাগ। তাই ড্যাপে অঞ্চলভিত্তিক পার্ক পরিকল্পনার কথা বলা হয়। প্রস্তাবে গাজীপুর সাভার, নারায়ণগঞ্জ, রূপগঞ্জ, কেরানীগঞ্জ অঞ্চলে কমপক্ষে ১০ একর থেকে ৬৮০ একর পর্যন্ত প্রতিটি অঞ্চলে একটি করে আঞ্চলিক মাপের ইকোপার্ক স্থাপনের কথা বলা হয়েছে। এছাড়া ৬ অঞ্চলে ৫টি আঞ্চলিক পার্ক ও ১২টি জলকেন্দ্রিক পার্ক স্থাপনের প্রস্তাব দেয়া হয়েছে।
প্রস্তাবিত ড্যাপে গণমুখী যোগাযোগ ব্যবস্থাপনা চালু প্রসঙ্গে বলা হয়, রাজধানীতে মাসিক ২০ হাজার টাকা আয়ের পরিবারের দৈনিক শুধুমাত্র ৬০ ভাগ যাত্রা হেঁটেই সম্পন্ন হয়ে থাকে। এর বাইরে বর্তমানে সব যাত্রার ৪০ ভাগের বেশি শুধুমাত্র বাসের দ্বারাই চলাচল করে থাকে। সব প্রধান সড়কে হাঁটার পরিবেশ নিশ্চিত করতে ২ হাজার ১৯৮ কিলোমিটার সড়কপথে নগরজীবন রেখা বাস্তবায়নের সুপারিশ করেছে। এছাড়া প্রধান সড়কে অযান্ত্রিক যান চলাচলে পৃথক ব্যবস্থা হিসেবে পৃথক লেন গড়ে তোলা ও বাস পরিষেবার সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা ও আধুনিকায়নের সুপারিশ করা হয়েছে। রাস্তায় খোঁড়াখুঁড়ি বন্ধ করতে সেবা সংস্থার লাইন মাটির নিচে নিতে সমন্বিত ভূগর্ভস্থ ইউটিলিটি ডাক্ট এর প্রস্তাব দেয়া হয়েছে। এর মাধ্যমে সব ইউটিলিটি সার্ভিস যথা বৈদ্যুতিক লাইন, পানি ও গ্যাস সরবরাহ পাইপ এবং বৃষ্টির পানি প্রবাহিত হওয়ার লাইন ফুটপাথের নিচে বা সড়কের একপাশে ইউটিলিটি ডাক্ট নির্মাণ করে স্থানান্তর করার প্রস্তাব দেয়া হয়েছে। কৃষি জমি ও বন্যা অববাহিকা অঞ্চল ব্যবস্থাপনা করতে কৃষিভিত্তিক উন্নয়ন, বাস্তবায়ন ও জীববৈচিত্র ঠিক রেখে প্রাকৃতিক সম্পদের সুষ্ঠু ব্যবহার করে কৃষি জমির অর্থনৈতিক গুরুত্ব প্রাধান্য দিতে ভায়াডাক্টের ওপর দিয়ে রাস্তা নির্মাণ করা, রাস্তার পর্যায়ক্রমিক উন্নয়ন ও উন্নয়ন স্বত্ব বিক্রয় ব্যবস্থাপনার প্রস্তাব করা হয়েছে।
প্রস্তাবিত খসড়া ড্যাপের যেসব প্রভাব পড়বে বলে পরিকল্পনায় তুলে ধরা হয়েছে তা হলো, পরিবেশবান্ধব হাঁটার পথ তৈরি হবে, তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ (হিট আইল্যান্ড) জীববৈচিত্র পুনঃস্থাপন, নিম্নবিত্তের খাদ্য ও পুষ্টির উৎস তৈরি হবে, জনস্বাস্থ্য সুরক্ষা ও বায়ুমান উন্নয়ন এবং মাইক্রো জলবায়ু নিয়ন্ত্রণ করা যাবে। এছাড়া জমির মূল্যবৃদ্ধি হবে দূষণ নিয়ন্ত্রণ করা যাবে ও গণপরিসর বৃদ্ধি করা, জীবন জীবিকার ভারসাম্য তৈরি হবে। অপরদিকে কৃষি ও মৎস্য সম্পদের বিকাশ, যোাগাযোগের মাধ্যম তৈরি, পানি প্রবাহের অক্ষুণ্ণতা বজায় থাকবে, জলাবদ্ধতা দূরীকরণ করা ও বন্যা নিয়ন্ত্রণ করা হবে। এছাড়া গণপরিবহনের কার্যকারিতা বৃদ্ধি পাবে বিধায় সড়কে নিরাপত্তা বৃদ্ধি পাবে। সড়ক অবকাঠামো নির্মাণ ব্যয় হ্রাস, পার্কিংয়ের চাহিদা হ্রাস, স্বল্প পথের যাত্রা বৃদ্ধি ব্যক্তিগত গাড়ির চাহিদা হ্রাস পাবে। একইসঙ্গে নাগরিক সুবিধাদির সহজলভ্যতা, সামাজিক বিভাজন দূরীকরণের মাধ্যমে কর্মসংস্থানের সুযোগ হবে। শিক্ষা ও চিকিৎসা খরচ হ্রাস, পরিবেশ দূষণ হ্রাস, মৌলিক চাহিদার সুষম যোগান, বর্জ্য ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে জৈব সার উৎপাদন ও ল্যান্ডফিল সাইটের ব্যবহার হ্রাস পাবে।
ড্যাপে নাগরিকদের আপত্তি সম্পর্কে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের শাখা ৩ কর্তৃক পাঠানো গেজেট প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের ঢাকার নতুন খসড়া বিশদ অঞ্চল পরিকল্পনা বা ডিটেইল এরিয়া প্ল্যান (ড্যাপ) ২০১৬-৩৬) প্রণয়ন করা প্রয়োজন ও সমীচীন। রাজউক টাউনশিপ ইমপ্রুভমেন্ট এ্যাক্ট ১৯৫৩ এর সেকশান ৭৩ এর উপধারা অনুযায়ী খসড়া মাস্টারপ্ল্যান প্রস্তুত করেছে। সরকার নতুন প্রস্তাবিত খসড়া মাস্টারপ্ল্যান বা ড্যাপ প্রকাশ করেছে। খসড়া ড্যাপের বিষয়ে জনগণের অংশগ্রহণ নিশ্চিতে ৬ সেপ্টেম্বর থেকে ৪ নবেম্বর পর্যন্ত ৬০ দিনব্যাপী গণশুনানির কার্যক্রম চলমান থাকবে। এ সংক্রান্ত জিআইএস বেইসড ম্যাপ রাজউকের ওয়েবপোর্টালে (িি.িৎধলঁশ.মড়া.নফ) সংরক্ষিত রয়েছে। এছাড়া গণশুনানি চলাকালীন রাজউকের মূল ভবনের অডিটোরিযয়ামে এবং জোনাল অফিসগুলোতে ম্যাপ প্রদর্শনের জন্য সংরক্ষিত থাকবে বলেও প্রজ্ঞাপনে জানানো হয়। এছাড়া প্রস্তাবিত খসড়া মাস্টারপ্ল্যান বা ড্যাপ বা এর কোন অংশ বিশেষের ওপর কোন ক্ষতিগ্রস্ত বা অন্য কোন ব্যক্তির আপত্তি থাকলে তাকে নির্ধারিত গণশুনানির ৬০ দিনের মধ্যে রাজউক এ্যানেক্স ভবনে (ষষ্ঠ তলা) প্রিপারেশন অব ডিটেইল এরিয়া প্ল্যান (২০১৬-৩৫) ফর ডিএমডিপি এরিয়া প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক বরাবরে বা ই-মেইলে (ঢ়ফফধঢ়@ৎধলঁশ.মড়া.নফ) আপত্তি বা সুপারিশ দাখিল করার জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছে।
এদিকে ড্যাপ প্রণয়নে নাগরিকদের অংশগ্রহণের স্বার্থে শুনানি কার্যক্রম শুরু করেছে ড্যাপ প্রকল্প। করোনার কারণে অধিক পরিমাণ নাগরিকদের জড়ো না করতে ও করোনার প্রভাব বিস্তার রোধে অনলাইনের মাধ্যমে মতামত নিতে ৬ সেপ্টেম্বর থেকে এ শুনানি শুরু করা হয়েছে বলে প্রকল্প সূত্রে জানা গেছে। এই প্রথমবারের মতো সম্পূর্ণ অনলাইনভিত্তিক জিআইএস বেইজড ম্যাপ দেখে যে কোন ব্যক্তি রাজউকের ওয়েবসাইটে প্রবেশ করে এই পরিকল্পনায় কোন প্রকার অসঙ্গতি থাকলে তা সমাধানের জন্য আপত্তি জানাতে পারবেন। শুধুমাত্র করোনা মহামারীর কারণে ৬ সেপ্টেম্বর থেকেই নির্দিষ্ট অনলাইন ফরমের মাধ্যমে অভিযোগ করতে পারবেন। তবে এতে অনেক নাগরিক আপত্তি জানিয়েছেন। নাগরিকদের অভিযোগ যেখানে ড্যাপ প্রণয়ন অত্যন্ত সংবেদনশীল একটি কাজ যার সঙ্গে সরাসরি নাগরিকরা তাদের স্বার্থ তথা জীবন জীবিকার প্রভাব জড়িত রয়েছে। তাই সরাসরি গণশুনানির আয়োজন করা প্রয়োজন। একইসঙ্গে নগর পরিকল্পনাবিদ, নগর বিশেষজ্ঞ ও রাজনীতিবিদ তথা সমাজের সব শ্রেণীর মতামত অনেকটাই উপেক্ষিত থাকবে। ফলে নতুন মাস্টারপ্ল্যানের মাধ্যমে এ ঢাকা মহানগরীকে সাজানোর জন্য করা ড্যাপ মহাপরিকল্পনা প্রণয়নের মূল লক্ষ্য প্রশ্নবিদ্ধ হবে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ডিটেইল এরিয়া প্ল্যান (ড্যাপ) এর প্রকল্প পরিচালক মোঃ আশরাফুল ইসলাম জনকণ্ঠকে বলেন, ঢাকা মহানগরীকে বাসযোগ্য, আধুনিক পরিকল্পনাযুক্ত উন্নত জীবনযাপনের উপযোগী মানবিক ঢাকা গড়তে নতুন প্রস্তাবিত খসড়া মাস্টারপ্ল্যান বা ড্যাপ আমরা মন্ত্রণালয়ে জমা দিয়েছি। এতে সার্বিক বিষয় অত্যন্ত সুন্দরভাবে কোথায় কোন প্রকারের স্থাপনা নির্মাণ করা যাবে বা কোথায় যাবে না তা বিস্তারিত আকারে তুলে ধরা হয়েছে। যা সরকার গেজেট আকারে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে। এ খসড়া ড্যাপের বিষয়ে জনগণের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে ৬ সেপ্টেম্বর থেকে ৪ নবেম্বর পর্যন্ত ৬০ দিনব্যাপী গণশুনানির কার্যক্রম চলমান থাকবে। এ সংক্রান্ত জিআইএস বেইসড ম্যাপ রাজউকের ওয়েবপোর্টালে (িি.িৎধলঁশ. মড়া.নফ) সংরক্ষিত রয়েছে। এছাড়া গণশুনানি চলাকালীন রাজউকের মূল ভবনের অডিটোরিয়ামে এবং জোনাল অফিসগুলোতে ম্যাপ প্রদর্শনের জন্য সংরক্ষিত থাকবে। প্রস্তাবিত খসড়া মাস্টারপ্ল্যান বা ড্যাপ বা এর কোন অংশ বিশেষের ওপর কোন ক্ষতিগ্রস্ত বা অন্য কোন ব্যক্তির আপত্তি থাকলে তাকে নির্ধারিত গণশুনানির ৬০ দিনের মধ্যে রাজউকের রাজউক এ্যানেক্স ভবনে (ষষ্ঠ তলা) প্রিপারেশন অব ডিটেইল এরিয়া প্ল্যান (২০১৬-৩৫) ফর ডিএমডিপি এরিয়া প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক বরাবরে বা ই-মেইলে (pddap@rajuk.gov.bd) আপত্তি বা সুপারিশ দাখিল করার জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছে। এরপর এসব আপত্তি যাচাই বাছাইয়ে মাধ্যমে চূড়ান্ত ড্যাপ প্রকাশ করা সম্ভব হবে। এজন্য তিনি সব নাগরিকের সহায়তা কামনা করেন।