এ যেন এক স্বপ্ন যা সত্যি করে দেখিয়েছেন চাঁপাইনবাবগঞ্জের সারোয়ার জাহান।
ছোট থেকেই কষ্ট করে চা বিক্রি করে চলতো তাদের সংসার স্বপ্ন ছিল বড় কিছু হওয়ার, নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করার, বাবার মুখ উঁচু করার তা বাস্তবে পরিণত করেছেন সারোয়ার জাহান। অনেক কষ্ট, ব্যর্থতার পর প্রভাষক হয়েছেন সারোয়ার জাহান। তার বাবার আজ গর্ভে বুক উঁচু করে বলতে পারছে চা বিক্রি করে নিজের সন্তানকে প্রতিষ্ঠা করেছি।
সারওয়ার জাহান বলেন, জীবনে ছিল অভাব, চারদিকে ছিল অন্ধকার। ছোট থাকতে ভালোভাবে খেতে পাইনি, চা বিক্রি করে চলেছে জীবন। নোংরা জামা কাপড় পড়ে ঘুরে বেরিয়েছি কিন্তু কখনো নিজের পড়াশোনা বাদ দেইনি, চালিয়ে গেছি অনেক কষ্ট করে। ধীরগতিতে এগোলেও পৌঁছে গেছি গন্তব্যে, সহ্য করেছি অনেক কিছু।
তিনি আরো বলেন, ‘নিয়োগের ফল প্রকাশের দিনেও সকাল-সন্ধ্যা দোকানে চা বানিয়ে পরিবেশন করেছি। পরে রাতে এনটিআরসিএর রেজাল্ট বের হলে প্রভাষক হিসেবে নিয়োগ পাওয়ার খবর পাই। প্রভাষক হিসেবে নিয়োগ পাওয়ার খবরটি ছিল আমার কাছে অসামান্য ও জীবনের সেরা। চাকরির টাকায় আমি আরও ভালোভাবে পরিবারের সদস্যদের পাশে দাঁড়াতে পারব।
গত বৃহস্পতিবার রাতে এনটিআরসিএ দেশে বেসরকারি বিভিন্ন পর্যায়ের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ৫৪ হাজার শিক্ষক (এমপিওভুক্ত) নিয়োগের ফল প্রকাশ করে । কলেজ প্রভাষক হিসেবে সুপারিশ প্রাপ্ত হয় বগুড়া সাঈদ আহমেদ কলেজ ও সহকারি শিক্ষক, ভৌত বিজ্ঞান (সুপারিশপ্রাপ্ত হয়) সালিম ডল পাড়া, মহারাজপুর।
সারোয়ার জাহান বলেন আরও বলেন, ২০১০ সাল থেকে টিউশনি শুরু করি ভোর ছয়টার সময় টিউশনি শুরু করতাম এবং দশটার দিকে বাসায় গিয়ে খেয়ে না খেয়ে দোকান চলে যেতাম, এবং বাবার সাথে চা বিক্রি করতাম, বিকালের দিকে আরেক ব্যাচকে প্রাইভেট পড়াতে যেতাম।
……………………..
অনেকসময় অনেকজনের বাসায় প্রাইভেট পড়াতে যেতাম । এমনও দিন গেছে দিনে এক ঘন্টা ঘুমিয়েছে এমনও দিন গেছে ২/১ দিন ঘুমাইনি কারণ প্রাইভেট পড়ানোর পাশাপাশি নিজের ক্যারিয়ার বজায় রাখছিলাম ।
তিনি আরো বলেন আমাকে অনেক প্রতিষ্ঠান থেকে চাকরির জন্য ডাক দিয়েছিল কিন্তু আমি যায়নি অনেক ধৈর্য্য ধারণ করেছি নিজেকে সামলে রেখেছি। অনেকবার ভেঙে পড়লেও আবার চেষ্টা করেছি আর এই চেষ্টায় আমাকে সফলের পথে এগিয়ে দিয়েছে। আমি ধন্যবাদ জানতে চাই আমার চা ওয়ালা বাবাকে, যে আমার সব সময় সঠিক পথ দেখিয়েছে আমার মনোবল বানিয়েছে আমাকে ধৈর্য্য ক্ষমতা দিয়েছে ।