দীর্ঘ ৭ বছর আগের অচল ডেমুকে (ডিজেল ইলেকট্রিক মাল্টিপল ইউনিট) ফের সচল করার তোড়জোড় শুরু করেছে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চল। বেশ কয়েকটি ডেমু ট্রেন চালুর প্রস্তুতিও নেওয়া হয়েছে। তবে শঙ্কা কাটেনি যাত্রীদের। কারণ এই ট্রেন চালু হয় ঠিকই, কিন্তু ‘সচল’ থাকে না বেশি দিন। তাড়াতাড়িই এগুলো ‘অচল’ হয়ে পড়ে থাকে। রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে, চট্টগ্রাম-পটিয়া-দোহাজারী রুটে নতুন দুটি ডেমু ট্রেন ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের রুটে আরও একটি ডেমু ট্রেন চলাচল শুরুর প্রস্তুতি প্রায় সম্পন্ন হয়েছে। এসব রুটে ট্রেন চলাচলের জন্য গতকাল পূর্বাঞ্চল রেলওয়ের মহাব্যবস্থাপক (জিএম) মো. জাহাঙ্গীর হোসেনসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা দোহাজারী-পটিয়া রেললাইন পরির্দশন করেছেন। আগামী ৬ ফেব্রুয়ারি রেলপথমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন উক্ত ডেমু ট্রেন দোহাজারী-পটিয়া ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় রুটে চলাচলের জন্য উদ্বোধন করবেন। তবে ৭ ফেব্রুয়ারি থেকে তা আনুষ্ঠানিকভাবে চলাচল শুরু করবে। প্রথম ট্রিপে চট্টগ্রাম থেকে ভোর সাড়ে ৫টায় এ ট্রেন পটিয়ার উদ্দেশে ছেড়ে যাবে। ৭ ফেব্রুয়ারি থেকে পটিয়ায় পৌঁছবে সকাল ৬টা ৪০ মিনিটে। এরপর সকাল সাড়ে ৭টায় পটিয়া থেকে ছেড়ে সকাল ৯টা ৫ মিনিটে চট্টগ্রাম স্টেশনে পৌঁছবে। দ্বিতীয় ট্রিপে বিকাল ৫টায় চট্টগ্রাম থেকে দোহাজারীর উদ্দেশে যাত্রা করবে ট্রেনটি। দোহাজারী পৌঁছবে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় এবং দোহাজারী থেকে ছেড়ে আসবে ৭টা ৪০ মিনিটে। চট্টগ্রাম পৌঁছবে রাত ১০টা ৪০ মিনিটে। এছাড়া চট্টগ্রাম থেকে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত নতুন একটি ডেমু ট্রেন চালুর কথা রয়েছে। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ক্লাস শুরু হলে ডেমু ট্রেন চলাচল করবে। বর্তমানে চট্টগ্রাম-দোহাজারী রেললাইনে দুই জোড়া যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল করছে। এছাড়া এই লাইনে দোহাজারীগামী পিকিং পাওয়ার প্লান্টের জন্য ফার্নেস অয়েলবাহী একটি ওয়াগন ট্রেন চলাচল করে। এদিকে অচল ডেমু ট্রেন চালু নিয়ে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের মধ্যে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা চলছে। ‘আবারও যে কোনো সময় ডেমু ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যাবে’ সেই আশঙ্কা এখন সবার। এ বিষয়ে রেলের দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা বলেন, পূর্বাঞ্চলে যখন ১০ সেট ডেমু চলাচল করত তখন দুই দিন পরপর একাধিক ট্রেনে ত্রুটি দেখা দিত। তাই পুরোদমে এসব ট্রেন চলাচল করানো যেত না। এমনকি এসব ডেমু ট্রেন ২০-৩০ কিলোমিটার দূরত্বে চলাচলের নির্দেশনা থাকলেও বেশির ভাগ চলত ৬০-১২০ কিলোমিটার দূরত্বে। অতিরিক্ত দূরত্বের কারণে এসব ট্রেনে সহসাই ত্রুটি দেখা দিত। বড় ধরনের ত্রুটি হওয়ায় বেশ কয়েকটি এখন চলাচলের অনুপযোগী। তিনি আরও বলেন, ডেমু ট্রেন রক্ষণাবেক্ষণ ও মেরামতে যেসব যন্ত্রপাতি ও সরঞ্জাম প্রয়োজন তা দেশে নেই। তাই যন্ত্রপাতির অভাবে মেরামত করতে না পারায় অনেক ডেমু ট্রেন ওয়ার্কশপে অচল হয়ে পড়ে আছে।