গ্র্যান্ডমাস্টার টুর্নামেন্ট হিসেবে প্রতিবছরই আয়োজন করা হবে দাবা টুর্নামেন্টটি : ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী

admin
সেপ্টেম্বর ২৭, ২০২০ ৫:৫৮ অপরাহ্ণ
Link Copied!

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭৪তম জন্মদিন উপলক্ষে দেশে প্রথমবারের মতো আন্তর্জাতিক অনলাইন দাবা টুর্নামেন্ট অনুষ্ঠিত হয়। জয়তু শেখ হাসিনা আন্তর্জাতিক অনলাইন দাবা টুর্নামেন্ট-২০২০ গত ২৪ সেপ্টেম্বর শুরু হয়ে শেষ হয় ২৬ সেপ্টেম্বর। আজ রাজধানীর একটি হোটেলে অনুষ্ঠিত হয় সমাপনী ও পুরষ্কার বিতরণী অনুষ্ঠান।

সাউথ এশিয়ান দাবা কাউন্সিল ও কানাডিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের উদ্যোগে তিন দিনব্যাপী এই দাবা চ্যাম্পিয়নশিপের আয়োজনে ১৭ জন গ্র্যান্ডমাস্টারসহ ৭৪ জন দাবাড়ু এই প্রতিযোগিতায় অংশ নেন।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী মো. জাহিদ আহসান রাসেল এমপি। ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আজকে ঘোষণা করতে চাই, এই টুর্নামেন্টটি আমরা প্রধানমন্ত্রীর জন্মদিন উপলক্ষে প্রতিবছর আয়োজন করব। একটি গ্র্যান্ডমাস্টার টুর্নামেন্ট হিসেবে এই টুর্নামেন্টটি প্রতি বছর হবে।’

সমাপনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সাউথ এশিয়ান চেস কাউন্সিল, বাংলাদেশ দাবা ফেডারেশনের সভাপতি ও পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. বেনজীর আহমেদ। এসময় কানাডিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের চেয়ারম্যান চৌধুরী নাফিজ সারাফাত, বাংলাদেশ দাবা ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাক সৈয়দ শাহাব উদ্দিন শামীম উপস্থিত ছিলেন। বিশেষ অতিথি হিসেবে ভার্চ্যুয়াল মাধ্যমে উপস্থিত ছিলেন এশিয়ান দাবা ফেডারেশনের সভাপতি হিজ হাইনেস শেখ সুলতান বিন খলিফা আল নাহিয়েন।

আয়োজকদের ধন্যবাদ জানিয়ে বেনজীর আহমেদ বলেন, ‘এই ইভেন্টটি আমাদের খেলোধুলার জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ। করোনাকালীন আমরাই প্রথম এত বড় একটি ইভেন্ট করতে পেরেছি। এ জন্য আমাদের আয়োজকদের অনেক ধন্যবাদ। সব খেলোয়াড়দের ধন্যবাদ জানাতে চাই।‘

টুর্নামেন্টের চ্যাম্পিয়ন, রানার-আপ ও অংশগ্রহনকারীর হাতে আর্থিক পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়।

দাবা খেলার প্রসার ও উন্নয়নের জন্য স্থায়ী জায়গার ওপর গুরুত্ব দিয়েছেন যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী মো. জাহিদ আহসান রাসেল এমপি। তিনি অচিরেই দাবার জন্য স্থায়ী জায়গার ব্যবস্থা করে দেবেন বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘একটি জায়গা ঠিক করার চেষ্টা করছি। কারণ, যেখানে দাবা চলে তা দিয়ে বিশ্বমানের চিন্তা করাটাও দুরের বিষয়। আমরা সমাধানে আসতে যাচ্ছি। দ্রুত যেন দাবার জন্য স্থায়ী জায়গা হতে পারে আমার পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা থাকবে। আমরা মুজিববর্ষে বড় পরিসরে আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্ট আয়োজন করবো।’

প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা এই করোনাকালীন সময়ের জন্য প্রস্তুত ছিলাম না। তারপরও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমরা যেভাবে এ পরিস্থিতির মোকাবিলা করতে এখনও পর্যন্ত সক্ষম হয়েছি যা বিশ্বের ইতিহাসে নজিরবিহীন। যেখানে বিশ্বের অনেক বড় বড় দেশ এ পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে হিমসিম খাচ্ছে। তাদের হাসপাতালগুলোতে জায়গা নেই। সুযোগ সুবিধা কমে গেছে। হঠাৎ করে আসার কারণে আমাদের প্রথমদিকেও কিছু কষ্ট হয়েছে। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে, যেভাবে তিনি ধাপে ধাপে দেশের প্রতিটি হাসপাতালকে এমনভাবে স্বয়ং সম্পূর্ণ করেছেন যে, এখন হাসপাতালের বেড খালি রয়েছে। কারণ, করোনা চিকিৎসার ব্যবস্থা বৃদ্ধি করতে পেরেছি। চিকিৎসা সেবাই নয়, প্রথম দিন থেকে করোনায় ক্ষতিগ্রস্থ হতে পারে সে সব মানুষকে প্রধানমন্ত্রী সেবা দিয়ে এসেছেন। এক লাখ কোটি টাকার ওপরে তিনি প্রণোদনা দিয়েছেন। যা পর্যায়ক্রমে বাস্তবায়ন হচ্ছে। বাংলাদেশ তলাবিহনীন ঝুড়ি থেকে এখন বিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেল হয়েছে। সবই হয়েছে প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে।’

ক্রীড়াঙ্গনে প্রধানমন্ত্রীর অবদানের কথা উল্লেখ করে ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘ক্রীড়ার প্রতি প্রধানমন্ত্রীর যে ভালোবাসা তা অতুলনীয়। ক্রীড়া নিয়ে যখন কথা হয় অনেকে অবাক হন যে, তিনি এত সময় ফোনে আলোচনা করেন। তার নেতৃত্বে জেলা ও বিভাগীয় স্টেডিয়ামের পর উপজেলা পর্যায়ে ১২৫টি মিনি স্টেডিয়াম নির্মাণ করতে পেরেছি। এই অর্থ বছরে আরো ১৮৬টি উপজেলায় মিনি স্টেডিয়াম নির্মাণ করতে যাচ্ছি। প্রতিটি জেলা পর্যায়ে জিমন্যাশিয়াম কাম ইনডোর স্টেডিয়াম করে দিচ্ছি। খেলোয়াড়দের ফিটনেস ধরে রাখার জন্য সুইমিংপুল নির্মাণ করে দিচ্ছি।’

দাবা খেলা বাংলাশে দ্রুত আরো এগিয়ে যাবে উল্লেখ করে জাহিদ আহসান রাসেল এমপি বলেছেন, ‘দাবায় উপমহাদেশে প্রথম গ্র্যান্ডমাস্টার আমাদের সন্তান। অনেক দেশ যখন কল্পনাও করতে পারেনি, তখন আমরাই এই অঞ্চলে প্রথম অর্জন করতে পেরেছি। এটিকে ধরে রাখতে হবে। পাশ্ববর্তী অনেক দেশ যারা পিছিয়ে ছিল, তারা অনেক এগিয়ে গেছে। আমরা কিন্তু সেভাবে এগুতে পারিনি। আমি ধন্যবাদ জানাচ্ছি দাবা ফেডারেশনের সভাপতি ড. বেনজীর আহমেদকে। দাবা ছোট্ট একটা ঘরের মধ্যে হতো। বেনজীর আহমেদ দায়িত্ব নেয়ার পর ছোট্টঘর থেকে বের করে দাবার বড় বড় আয়োজন করছেন এবং খেলাটাকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। আমি বিশ্বাস করি, সেদিন বেশি দুরে নয় যখন বাংলাদেশ কেবল উপমহাদেশেই নয়, বিশ্ব দরবারেও দাবায় মাথা উঁচু করে দাড়াবে ইনশাল্লাহ।’