ক্যাডেট কলেজের মতো ৮ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান করবে পুলিশ

admin
জানুয়ারি ৩১, ২০২১ ১১:৩৭ পূর্বাহ্ণ
Link Copied!

দেশের ৮টি বিভাগীয় শহরে ক্যাডেট কলেজের আদলে ৮টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান স্থাপনের উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ পুলিশ। সেখানে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে পুলিশ বাহিনীর সদস্যদের সন্তানরা লেখাপড়ার সুযোগ পাবে। এই লক্ষ্য বাস্তবায়নে ইতিমধ্যে একটি প্রকল্প প্রস্তাব তৈরির কাজ হাতে নিয়েছে পুলিশ সদর দপ্তর। পুলিশ সদর দপ্তরের একাধিক কর্মকর্তা দেশ রূপান্তরকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তারা বলেছেন, পুলিশ সদস্যদের বদলিজনিত কারণে যাতে তাদের সন্তানদের লেখাপড়ায় বিঘ্ন না ঘটে সে লক্ষ্যে এই প্রকল্প নেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘আমরা যারা পুলিশে চাকরি করি তাদের জন্য জটিল সমস্যা হচ্ছে সন্তানদের লেখাপড়া। যেকোনো সময় আমাদের বদলি হতে পারে। তাই তাদের লেখাপড়া যাতে কোনো ক্ষতিগ্রস্ত না হয় তার জন্য আইজিপি ড. বেনজীর আহমেদ ক্যাডেট কলেজের আদলে বিভাগীয় শহরগুলোতে ৮টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান তৈরি করার উদ্যোগ নিয়েছেন। ইতিমধ্যে এ বিষয়ে নানামুখী কাজ চলছে।’
পুলিশ সদস্যদের সন্তানের বাইরে সাধারণ মানুষের সন্তানরা এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তির সুযোগ পাবে কি-না জানতে চাইলে ডিএমপি কমিশনার বলেন, ‘আমাদের সন্তানদের শিক্ষার বিষয়টি অগ্রাধিকার দিয়ে প্রতিষ্ঠানগুলোতে ভর্তি নীতিমালা করা হবে। এরপর সিট ফাঁকা থাকলে মেধার ভিত্তিতে বাইরের শিক্ষার্থীরা ভর্তির সুযোগ পাবে।’
ক্যাডেট কলেজের আদলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান করার বিষয়ে জানতে চাইলে পুলিশ সদর দপ্তরের সহকারী মহাপরিদর্শক (এআইজি-এডুকেশন) আবদুল্লাহ আল মামুন দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘আমরা চাই প্রত্যেকটি বিভাগীয় সদরে আবাসিক ও অনাবাসিক সুবিধাসহ উন্নতমানের ৮টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান স্থাপন করতে। যেগুলো হবে ক্যাডেট কলেজের আদলে। এ জন্য উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবনা (ডিপিপি) তৈরির কাজ চলছে। ডিপিপি তৈরির পরই বলা যাবে এজন্য কী পরিমাণ অর্থের বরাদ্দ প্রয়োজন।’
পুলিশ সদর দপ্তরের এই কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘আমরা যে আঙ্গিকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো করতে চাই তার জন্য অনেক জমির প্রয়োজন। সব জমি হয়তো অধিগ্রহণ করে পাওয়া যাবে না। অনেক জমি কেনারও প্রয়োজন হতে পারে। এসব বিষয় মাথায় রেখে আমরা ডিপিপি তৈরি করছি। আশা করছি শিগগিরই ডিপিপি তৈরির কাজ সম্পন্ন হবে।’
পুলিশ সদর দপ্তরের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘একজন কর্মকর্তাকে আজ বরিশাল, ৬ মাস পরে হয়তো নোয়াখালী বা খাগড়াছড়ি জেলায় বদলি করা হয়। অনেকের আবার বছরের মাঝামাঝি বা শেষ সময়েও বদলি হয়। মা-বাবার বদলির কারণে তাদের সন্তানদের লেখাপড়ায় মারাত্মক বিঘ্ন ঘটে। কেউ কেউ মানসম্মত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অভাবে সন্তানদের ভর্তি করাতে পারেন না। আবার অনেকে এই অজুহাতে বদলির আদেশ বাতিল চান।
বিভাগীয় সদরে আবাসিক সুবিধাসহ একটি ভালোমানের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থাকলে কারও বদলিজনিত কারণে সন্তানদের লেখাপড়া নিয়ে টেনশনে পড়তে হবে না। এ ছাড়া এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে যেকোনো সময় শিক্ষার্থীদের আন্তঃপ্রতিষ্ঠানে পাঠানোর সুযোগ রাখার বিষয় চিন্তাভাবনা চলছে। যাতে মা-বাবা বদলি হলেও যার যার সুবিধামতো বিভাগীয় শহরের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সন্তানরা ভর্তি হতে পারে। এতে পুলিশ সদস্যদের কাজের মান বাড়বে এবং সন্তানদের লেখাপড়ার টেনশন দূর হবে।’