স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, করোনাভাইরাসের টিকার জন্য যে ভ্যাকসিনটি কম দামে দ্রুত পাওয়া যাবে, সেটি বাংলাদেশে আনা হবে। তবে ভ্যাকসিনটির সক্ষমতা বাংলাদেশের সঙ্গে কতটা মিল রয়েছে সেটি দেখা হবে।রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে গ্র্যান্ড বল রুমে আজ রোববার বিকেল পৌনে তিনটার দিকে এক সেমিনার শেষে স্বাস্থ্যমন্ত্রী এ কথা বলেন। সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী। এই সেমিনারে চিকিৎসকেরা বলেন, করোনাভাইরাস মহামারির শুরু থেকেই চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীরা সচেষ্ট ছিলেন। করোনা মোকাবিলায় তাঁরা ঝুঁকি নিয়ে দায়িত্ব পালন করেছেন। বাংলাদেশে করোনার পরিবেশ প্রতিকূলে থাকায় এবং চিকিৎসকদের ঐকান্তিক চেষ্টায় করোনা পরিস্থিতি আপাতত সামাল দেওয়া সম্ভব হয়েছে। তবে চিকিৎসকসহ সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউ (সেকেন্ড ওয়েভ) সম্পর্কে। এ নিয়ে সরকারের প্রস্তুতিও আছে।সোসাইটি অব সার্জনস অব বাংলাদেশ (এসওএসবি) ‘কোভিড-১৯ দুর্যোগে সার্জনদের ভূমিকা’ শীর্ষক এই সেমিনারের আয়োজন করে। সেমিনারের সায়েন্টিফিক পার্টনার ছিল ওষুধ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান এসকেএফ ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড। স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর দিক-নির্দেশনা নিয়ে আমরা কাজ করছি। অল্প দিনের মধ্যেই জানা যাবে আমরা করোনার কোন ভ্যাকসিনটি নিতে যাচ্ছি, নিতে পারব। এটাও মনে রাখতে হবে, যে ভ্যাকসিনটি সুলভমূল্যে পাওয়া যাবে, তাড়াতাড়ি পাওয়া যাবে এবং এই দেশে ভ্যাকসিনটির সক্ষমতা মিল রেখে ভ্যাকসিনটি আনা হবে।’দেশীয় প্রতিষ্ঠান গ্লোব বায়োটেকের তৈরি করা ভ্যাকসিন প্রসঙ্গে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, গ্লোব বায়োটেকের টিকাটি ইতিমধ্যে ট্রায়াল-২ শেষ করেছে বলে জানা গেছে। এটি যদি কার্যকর হয়, তবে তা বিবেচনায় নেওয়া হবে। কোন ভ্যাকসিনটি নেওয়া হবে তা এখনো নির্ধারণ করা হয়নি। কোনো কোনো উৎপাদক বলছে জানুয়ারি, ফেব্রুয়ারির দিকে হতে পারে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, মে-জুনের দিকে ভ্যাকসিন আসতে পারে।ভ্যাকসিন ট্রায়ালের বিষয়ে কোনো প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যোগাযোগ চলছে কিনা এমন প্রশ্নে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘যাদের কাছ থেকে ভ্যাকসিন নেওয়া হবে, সেখানে ট্রায়ালের বিষয় যদি তাকে, অনুমতি চায়, তাহলে আমরা সেভাবে ব্যবস্থা নিব। আমরা সিনোভ্যাক টিকাকে ট্রায়াল করতে সুযোগ দিয়েছিলাম, অনুমোদন দিয়েছিলাম। তারা করেনি। এখনো ট্রায়াল করার সুযোগ আছে। অন্য যেকোনো কোম্পানি যদি এগিয়ে আসে আমরা যদি দেখি কার্যকরী তাহলে আমরা অনুমোদন দেব।’ এর আগে সেমিনারে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ বি এম খুরশীদ আলম বলেন, ‘কোভিড মোকাবিলায় সেকেন্ড ওয়েভ (দ্বিতীয় ঢেউ) নিয়ে প্রধানমন্ত্রী যে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন, সেটির পরিপ্রেক্ষিতে আমাদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। সেই নির্দেশনার আলোকে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর নির্দেশে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। আমাদের প্রস্তুতিও আছে। যদি সত্যি সেকেন্ড ওয়েভ আসে আমরা সুষ্ঠুভাবে মোকাবিলা করতে পারব।’সভাপতির বক্তব্যে সোসাইটি অব সার্জনস অব বাংলাদেশের (এসওএসবি) সভাপতি এ এইচ এম তৌহিদুল আলম বলেন, করোনার সময়ে মহামারি এলেও চিকিৎসকেরা দায়িত্ব পালন করেছে। তাঁরা ভবিষ্যতেও এভাবে দায়িত্ব পালন করবেন। তিনি বলেন, ২০০৮ সালের পরে অনেক মেডিকেলে কলেজে সার্জনের নতুন পদ তৈরি হয়নি। অনেক মেডিকেলে কোর্স বন্ধ হয়ে গেছে শিক্ষক নেই বলে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বাড়লেও শিক্ষক নেই। তিনি স্বাস্থ্যমন্ত্রীর কাছে এসব বিষয়ে উদ্যোগ নেওয়ার দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।