এবার রোহিঙ্গা ক্যাম্পে শুদ্ধি অভিযান

admin
অক্টোবর ১১, ২০২০ ৮:০৮ পূর্বাহ্ণ
Link Copied!

 

কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্পে শান্তি ফেরাতে বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছে প্রশাসন। উদ্যোগের অংশ হিসেবে ক্যাম্পের অভ্যন্তরে অবস্থানকারী সন্ত্রাসী, ইয়াবা ও মানব পাচারকারী চক্রের হোতাদের চিহ্নিত করার পাশাপাশি পুলিশ ক্যাম্প স্থাপন ও অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। প্রশাসনের এসব পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হলে অপরাধীদের অভয়ারণ্যে পরিণত হওয়া রোহিঙ্গা শরণার্থী ক্যাম্পে শান্তি ফিরে আসবে- এমন দাবি প্রশাসনের।

 

চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘কয়েক দিন আগে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে পরিদর্শনে গিয়ে প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরের কর্মকর্তা, ক্যাম্প ইনচার্জসহ বিভিন্ন জনের সঙ্গে কথা বলেছি। রোহিঙ্গা ক্যাম্পের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে কিছু উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। অপরাধীদের চিহ্নিত করার পাশাপাশি নতুন করে পুলিশ ক্যাম্প স্থাপন ও লোকবল বৃদ্ধিসহ নানা পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে, যা প্রস্তাবনা আকারে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হচ্ছে।’ চট্টগ্রাম মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ইদানীং চট্টগ্রামে যত ইয়াবার চালান আটক হচ্ছে তার মধ্যে সিংহভাগ চালানের বডি ফিটিং হচ্ছে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে। ইয়াবা বহনকারীদেরও বেশিরভাগ রোহিঙ্গা। কিন্তু ক্যাম্পে অবস্থানকারী ইয়াবা ব্যবসায়ীদের বিষয়ে তথ্য থাকলেও ক্যাম্পে অভিযান চালানো যায় না। ক্যাম্পে অভিযান চালাতে গেলে নানা সমস্যা তৈরি হয়। এ সমস্যা নিরসনের জন্য কিছু প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একাধিক কর্মকর্তা জানান, বেশির ভাগ রোহিঙ্গা দুর্গম এলাকায় হওয়ায় সহজে ওই এলাকায় যেতে পারে না আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। রাস্তা না থাকার ফলে এসব জায়গায় নিয়মিত টহল দেওয়া সম্ভব হয়ে ওঠে না পুলিশের। বেশিরভাগ শরণার্থী ক্যাম্পেই নেই পুলিশের নিরাপত্তা ক্যাম্প। নেই পুলিশের পর্যাপ্ত জনবল। নানা সীমাবদ্ধতায় পুলিশ চাইলেই শরণার্থী ক্যাম্পে অভিযান চালাতে পারে না। অভিযান চালাতে গেলে উল্টো প্রশাসনকেই বেকায়দায় পড়তে হয়। সব মিলিয়ে রোহিঙ্গা ক্যাম্প অপরাধীদের অভয়ারণ্যে পরিণত হয়েছে। জানা যায়, কক্সবাজারের টেকনাফ ও উখিয়া উপজেলায় মিয়ানমার সেনাবাহিনীর নির্যাতনের মুখে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের শরণার্থী ক্যাম্প রয়েছে ৩৪টি। যাতে প্রায় ১১ লাখ রোহিঙ্গা বসবাস করে। এসব ক্যাম্প গত দুই বছর ধরে অপরাধীদের অভয়ারণ্যে পরিণত হয়েছে। মাদক ব্যবসা, মানবপাচারসহ নানা অপরাধীদের ট্রানজিট পয়েন্টে পরিণত হয়েছে। এ ছাড়া নিজেদের মধ্যে অন্তর্কোন্দলের জেরে খুন-গুম, অপহরণ, মুক্তিপণ আদায়, ধর্ষণ, ডাকাতি, চাঁদাবাজিসহ নানা অপরাধ কর্মকা- এখানকার নিত্য ঘটনা। সর্বশেষ গত এক সপ্তাহে আধিপত্য বিস্তারের জের ধরে ৮ খুনের ঘটনা ঘটে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে। টানা ঘটনার পর নড়েচড়ে বসেছে প্রশাসন। এরপর উদ্যোগ নেওয়া হয় ক্যাম্পের জন্য বিশেষ পরিকল্পনার।