দৃষ্টি প্রতিবন্ধীদের জন্য জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের লেখা ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনীর’ ব্রেইল সংস্করণের মোড়ক উন্মোচন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গতকাল বুধবার মন্ত্রিসভার সাপ্তাহিক বৈঠকের আগে তিনি এক ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানে এ মোড়ক উন্মোচন করেন। এ সময় প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতাকে হত্যার পর বাংলাদেশে স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাস এবং ভাষা আন্দোলনের ইতিহাস বিকৃত করা হয়েছিল। বঙ্গবন্ধুর নাম সব জায়গা থেকে মুছে ফেলা হয়েছিল। ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ প্রকাশ হওয়ার পর সেই ইতিহাস বিকৃতির হাত থেকে কিছুটা হলেও আমরা রক্ষা পেয়েছি।
প্রধানমন্ত্রী গণভবন থেকে এবং মন্ত্রিপরিষদ সদস্যরা সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ কক্ষ থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে অনুষ্ঠানে যোগ দেন। সমাজকল্যাণমন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদ অনুষ্ঠানে সংক্ষিপ্ত বক্তৃতা করেন এবং মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সারাবিশে^ বইটি ইতোমধ্যে ১৪টি ভাষায় অনূদিত
হয়েছে এবং আরও কয়েকটি ভাষায় অনুবাদ করার জন্য আমাদের কাছে
অনুমতি চেয়েছে। জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী উদযাপনের এ সময়ে তার ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ গ্রন্থের ৬ খ- ব্রেইল সংস্করণ প্রকাশ করায় প্রধানমন্ত্রী সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় এবং সংশ্লিষ্টদের ধন্যবাদ জানান।
প্রধানমন্ত্রী তার প্রয়াত বান্ধবী সাংবাদিক বেবী মওদুদকে নিয়ে জাতির পিতার ডায়েরিগুলো সংগ্রহ এবং একে পরিপূর্ণ বই আকারে প্রকাশের উদ্যোগ নেন উল্লেখ করে বলেন, পাকিস্তানের ইন্টেলিজেন্স ব্রাঞ্চের রিপোর্টগুলো নিয়ে ইতোমধ্যে বই প্রকাশ করেছি (সিক্রেট ডকুমেন্ট অব ইন্টেলিজেন্স ব্রাঞ্চ অন ফাদার অব দি নেশন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান)। যার ৬ খ- ইতোমধ্যে প্রকাশিত হয়েছে এবং ৭ম ও ৮ম খ- (মোট ১৪ খ-ের মধ্যে) প্রকাশের অপেক্ষায় রয়েছে। এর মাধ্যমেও আমাদের দেশের সংগ্রামের ইতিহাস, বিশেষ করে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর সংগ্রামের ইতিহাসটা বের হয়ে এসেছে এবং আমরা কীভাবে স্বাধীনতা অর্জন করেছি সেটি ধীরে ধীরে প্রকাশ পেয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতার এসব ব্যক্তিগত ডায়েরি যা পরবর্তী সময় প্রকাশিত হয়েছে, সেগুলোর প্রতিটি খাতার ওপর জেলখানার সেন্সরশিপের সিল ও সই রয়েছে। সময়গুলোও সেখান থেকে খোঁজ করে বের করা হয়েছে।
অসমাপ্ত আত্মজীবনীর পা-ুলিপি উদ্ধারের ইতিহাস প্রসঙ্গে বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, ১৯৭১ সালে এই খাতাগুলো আমরা প্রায় হারাতে বসেছিলাম। আমাদের ধানমন্ডির বাসা পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী লুটপাট করে। তবে এগুলো লাইন টানা রুল করা কিছু খাতা ছিল বলে তাদের নজরে পড়েনি বা তাদের কাছে এগুলোর কোনো মূল্য ছিল না। এক সময় সেগুলো উদ্ধার করে নিয়ে আসি।