শীতকালে বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের সম্ভাব্য দ্বিতীয় ধাক্কা এলে অর্থনীতির চাকাকে সচল রাখে কর্মপরিকল্পনা করতে যাচ্ছে সরকার।
করোনা সংক্রমণ আরেক দফায় বৃদ্ধির আশঙ্কায় এখন থেকেই প্রস্তুতি নিতে মঙ্গলবার সচিবালয়ের মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে আন্তমন্ত্রণালয় সভা হয়। সভায় বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সচিব, সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার ও পুলিশের মহাপরিদর্শক উপস্থিত ছিলেন।
প্রায় দুই ঘণ্টা ধরে চলা এ বৈঠক শেষে সভার সভাপতি ও মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম এবং সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. মাহফুজুর রহমান এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে সভার সিদ্ধান্ত জানান।
এক প্রশ্নের জবাবে আনোয়ারুল জানান, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপর দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। এছাড়া প্রতিটি মন্ত্রণালয়ের অধীন অফিসগুলো কীভাবে চালাবে সেই দায়িত্বও সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলোকে দেওয়া হয়েছে।
পিআইডি, তথ্য মন্ত্রণালয়, স্থানীয় সরকার বিভাগ ছাড়াও ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে মসজিদগুলোকে ব্যবহার করে কোভিড-১৯ নিয়ে মানুষকে আরও সচেতন করার ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব।
তিনি বলেন, স্বাস্থ্য বিভাগের ইউনিয়ন পর্যন্ত কর্মচারী আছে, তারাও এ বিষয়ে কাজ করবেন। গণমাধ্যমেরও একটা বড় ভূমিকা আছে।
কোভিড-১৯ এর দ্বিতীয় ধাক্কা এলে ফের লকডাউন দেওয়া হবে কি না, সেই প্রশ্নে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, আমরা এখনও এটা চিন্তা করিনি।
সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার (পিএসও) লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. মাহফুজুর রহমান বলেন, আমরা এখন কোলাবরেশন উইথ সিভিল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন এবং ফরেন মিনিস্ট্রির সাথে, এয়ারপোর্টে এবং বিভিন্ন এন্ট্রিতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের লোকজন থাকে।
তিনি বলেন, অনেকে সার্টিফিকেট নিয়ে আসে তারা কোভিড ফ্রি। যারা নিয়ে আসেননি তারা কতদিন সেখানে হোম কোয়ারেন্টিইনে ছিলেন সেই সার্টিফিকেট নিয়ে আসেন। যাদের এ রকম কোনো সার্টিফিকেট নেই, কোনো কিছু নেই এবং যাদের সন্দেহ হয়, তাদের আমরা ইনস্টিটিউশনাল কোয়ারেন্টিনে নিয়ে যাই।
ঢাকার দিয়াবাড়ি ও হজ ক্যাম্পে কোয়ারেন্টিনের ব্যবস্থা আছে জানিয়ে পিএসও বলেন, করোনা যখন পিকে ছিল তখন সাড়ে তিন হাজারের মতো ইনস্টিটিউশনাল কোয়ারেন্টিনের ক্যাপাসিটি ছিল। সেখানে পনেরশর উপরে উঠে নাই। এজন্য আমরা এটাকে (ধারণ ক্ষমতা) কমিয়ে দুই হাজারের মতো রেখেছি। এতে আমাদের সাশ্রয় হচ্ছে। যদি আবার রিভাইভ করে, সিচুয়েশন খারাপ হয়ে যায় তাহলে আমরা কোয়ারেন্টিন সুবিধা আবার সাড়ে তিন হাজারে নিয়ে যাব।
যারা কোভিড ফ্রি এবং ১৪ দিন কোয়ারেন্টিন করে এসেছেন তাদের ‘কোয়ারেন্টিনে নেওয়া লাগে না’ বলেও জানান পিএসও মাহফুজুর রহমান।
সভায় সবাইকে মাস্ক পরাসহ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে অভিযান পরিচালনা ও গণসচেতনতা বাড়ানো, চিকিৎসাব্যবস্থা ঠিক করা এবং প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিন সুবিধা বাড়ানোসহ বিভিন্ন ধরনের পদক্ষেপ নেওয়ার কথা আলোচনা হয়। আর এসব কাজের বিষয়ে ৭ থেকে ১০ দিনের মধ্যে সুনির্দিষ্ট কর্মপরিকল্পনা ঠিক করে দেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলোকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।