সদ্য সাবেক ডাকসু ভিপি নুরুল হক নুর, বাংলাদশ সাধারণ ছাত্র পরিষদের বহিষ্কৃত আহ্বায়ক হাসান আল মামুনসহ ধর্ষণ ও ধর্ষণে সহযোগীতায় মামলার আসামিদের গ্রেপ্তারের দাবিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়র রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে তৃতীয় দিনের মতো অনশন করছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামি স্টাডিজ বিভাগের সেই ছাত্রী।
টানা অনশনের কারণে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন তিনি। টানা ২৭ ঘণ্টা অনশনের পর শুক্রবার রাত ১১টার দিকে তিনি শারীরিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়েন। এসময় ঢাকা মেডিকেল কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ডা. শেখ মো. আল আমিনের নেতৃত্বে চিকিৎসকদের একটি দল এসে তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের রোকেয়া হলের সাবেক এজিএস ফাল্গুনী দাস তন্বী।
তিনি বলেন, তারা ওই ছাত্রীকে খাবার গ্রহণের জন্য অনেক অনুরোধ করেন। তবে তিনি আসমিদের না ধরা পর্যন্ত আমরণ অনশন করতে সংকল্পবদ্ধ। টানা ২৭ ঘণ্টা না খেয়ে থাকার ফলে রাতে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়লে চিকিৎসক দল এসে তাকে স্যালাইন দিয়েছেন। তাকে হাসপাতালে যাওয়ার জন্যে বারবার অনুরোধ করলেও তিনি তাদের কথা শোনেননি।
শনিবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা, হাতে স্যালাইন লাগিয়ে শুয়ে আছেন ওই ছাত্রী। এসময় তার পাশে সংহতি জানিয়ে অবস্থানরত সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ইনটার্ন চিকিৎসক জেসমিন আক্তার রিপা বলেন, একটানা না খাওয়ার কারণে তিনি দুর্বল হয়ে পড়েছেন। তার অবস্থার খারাপের দিকে যাচ্ছে। এ পর্যন্ত তিনি এগারো বার বমি করেছেন। আমরা আপাতত স্যালাইন চালিয়ে নিচ্ছি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক একেএম গোলাম রব্বানী বলেন, আমাদের প্রক্টরিয়াল টিম ওই ছাত্রীর সার্বিক নিরাপত্তার দ্বায়িত্বে কাজ করছে। রাতে আামদের সহকারী প্রক্টর তাকে দেখে এসেছেন। ওই শিক্ষার্থীর পাশে আমরা আছি। তার জন্য বিশ্ববিদ্যালযের পক্ষ থেকে যা যা করা দরকার, তা করা হচ্ছে।
গত ২০ সেপ্টেম্বর রাতে ধর্ষণ ও ধর্ষণে সহযোগিতার অভিযোগ এনে লালবাগ থানায় মামলা করেন ওই ছাত্রী। এতে বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদের আহ্বায়ক হাসান আল মামুনকে প্রধান আসামি এবং ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুরসহ ছয়জনকে আসামি করা হয়। পরদিন একই বাদী কোতোয়ালি থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করেন। তবে ১৭ দিন পার হলেও এসব মামলায় কেউ গ্রেপ্তার না হওয়ায় গত বৃহস্পতিবার রাতে অনশনে বসেন তিনি। তার সঙ্গে সংহতি জানিয়ে ছাত্রলীগের বিভিন্ন ইউনিটের ২২ নেত্রীও সেখানে অবস্থান নেন। ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে রাতেই ওই ছাত্রীর জন্যে রাজু ভাস্কর্যে প্যান্ডেল তৈরি করে দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে ছাত্রলীগের বিভিন্ন শাখার নেত্রীরা পালাক্রমে তার সঙ্গে অবস্থান করছেন।